1. ভৌগোলিক অবস্থান:

সার্বিয়া দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের বলকান অঞ্চলে অবস্থিত একটি দেশ। এর উত্তর-পশ্চিমে হাঙ্গেরি, পূর্বে রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া, দক্ষিণে উত্তর মেসিডোনিয়া, এবং পশ্চিমে ক্রোয়েশিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ও মন্টেনেগ্রো অবস্থিত। সার্বিয়ার রাজধানী হলো বেলগ্রেড, যা ইউরোপের প্রাচীনতম শহরগুলোর একটি।

        1. ইতিহাস:

সার্বিয়ার ইতিহাস অত্যন্ত পুরনো এবং সমৃদ্ধ। এটি মধ্যযুগে সার্বীয় সাম্রাজ্যের অধীনে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র ছিল। ১৯ শতকে অটোমান সাম্রাজ্যের শাসনের অধীনে থাকলেও, ১৮৭৮ সালে সার্বিয়া স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। সার্বিয়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ উভয়ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ১৯৯০-এর দশকে যুগোস্লাভিয়ার বিচ্ছেদের পরে সার্বিয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামরিক সংকটের সম্মুখীন হয়।

        1. সংস্কৃতি:

সার্বিয়ার সংস্কৃতি বিভিন্ন ঐতিহাসিক, ধর্মীয়, এবং সামাজিক প্রভাবের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। সার্বিয়ানদের প্রধান ধর্ম হলো পূর্ব অর্থডক্স খ্রিস্টধর্ম, যা তাদের জীবনধারায় একটি বড় ভূমিকা পালন করে। সার্বিয়ার সংগীত, সাহিত্য, এবং লোকশিল্প তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবনধারার প্রতিফলন করে। বেলগ্রেড বিশেষভাবে সংস্কৃতি ও শিল্পের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

        1. অর্থনীতি:

সার্বিয়ার অর্থনীতি কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। যদিও সার্বিয়া একটি উন্নয়নশীল দেশ, তবুও এটি ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সার্বিয়া কৃষি খাতে যেমন শস্য, ফলমূল, এবং দুধ উৎপাদনে প্রধান ভূমিকা পালন করে, তেমনি ইলেকট্রনিক্স, গাড়ি উৎপাদন এবং যন্ত্রপাতি তৈরিতে বিশেষ অবদান রাখছে।

        1. রাজনীতি:

সার্বিয়া একটি সংসদীয় প্রজাতন্ত্র, যেখানে রাষ্ট্রপতি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী সরকারপ্রধান হিসেবে কাজ করেন। সার্বিয়া বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ লাভের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, যদিও এটি এখনো ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হয়নি। সার্বিয়ার রাজনীতিতে কসোভোর ইস্যু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে রয়েছে, কারণ ২০০৮ সালে কসোভো একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও সার্বিয়া সেটি স্বীকার করেনি।