কাজাখস্তান এশিয়ার একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এটি বিশ্বের নবম বৃহত্তম স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। এর উত্তরে রাশিয়া, পূর্বে গণচীন, দক্ষিণে কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, ও তুর্কমেনিস্তান এবং পশ্চিমে কাস্পিয়ান সাগর ও রাশিয়া। কাজাখস্তান প্রায় সম্পূর্ণভাবে এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত। তবে দেশটির কিয়দংশ উরাল নদীর পশ্চিমে ইউরোপ মহাদেশে পড়েছে। দেশের উত্তর অংশে অবস্থিত আস্তানা শহর দেশটির রাজধানী।
শহর
সম্পাদনাপর্যটন
সম্পাদনাকাজাখস্তানের পাঁচটি পর্যটন অঞ্চল: আস্তানা শহর, আলমাটি শহর, পূর্ব কাজাখস্তান, দক্ষিণ কাজাখস্তান, এবং পশ্চিম কাজাখস্তান এলাকা।
- নুরঝল বুলেভার্দ - কাজাখস্তানের জাতীয় বুলেভার্দ। ইশিম নদীর তীরে গড়ে ওঠা রাজধানী শহর আস্তানার একটি পায়ে চলা পথ। বুলভার্দটি শহর এবং দেশটির অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। বুলভার্দসহ শহরটির নকশা করেছেন বিখ্যাত স্থাপত্যবিদ কিশো কুরোকাওয়া। বুলভার্দটি প্রেসিডেন্টের বাসভবন এক অরদা থেকে তাবু আকৃতির খান শাতির বিনোদন কেন্দ্র পর্যন্ত বিস্তৃত।
ভিসা নীতি
সম্পাদনাকাজাখস্তান সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত আর্মেনিয়া, বেলারুশ, জর্জিয়া, মলদোভা, কির্গিজস্তান, মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের নাগরিকদের জন্য এবং সর্বোচ্চ ৩০ দিন পর্যন্ত আর্জেন্টিনা, আজারবাইজান, সার্বিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, তাজিকিস্তান, তুরস্ক এবং উজবেকিস্তান নাগরিকদের জন্য স্থায়ী ভিসা-মুক্ত ব্যবস্থার সুযোগ করে দিয়েছে।
কাজাখস্তান ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওইসিডি সদস্য রাষ্ট্র, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, এবং নিউজিল্যান্ডসহ ৪৫টি দেশের নাগরিকদের জন্য স্থায়ী ভিসা-মুক্ত ব্যবস্থার প্রচলন করেছে।
বৈশিষ্ট্য
সম্পাদনাভূগোল
সম্পাদনাকাজাখস্তানের মোট আয়তন ২৭ লক্ষ বর্গকিলোমিটার (১০.৫ লক্ষ বর্গমাইল), যা দেশটিকে পৃথিবীর নবম বৃহত্তম দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছে। কাজাখস্তান পৃথিবীর বৃহত্তম স্থলভূমি-বেষ্টিত দেশ। এর আয়তন পশ্চিম ইউরোপের আয়তনের সমতুল্য।
ইতিহাস
সম্পাদনা১৮৭০-১৮৭৬ সালের মধ্যে রাশিয়া কাজাখ দখল নেয়। ১৯২২ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত কাজাখস্তান সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ১৯৯১ সালে এটি স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশটিতে রাষ্ট্রপতি শাসন ব্যবস্থা বিদ্যমান। ১৯৯৫ সালে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা হয়, যাতে রাষ্ট্রপতিকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেওয়া হয়।
ভাষা
সম্পাদনাকাজাখ ভাষা কাজাখস্তানের সরকারি ভাষা। কাজাখ নামের তুর্কীয় জাতি এখানকার প্রধান জনগোষ্ঠী।
ধর্ম
সম্পাদনামোট জনসংখ্যার ৭০ ভাগ মুসলিম। বাকী ৩০ ভাগ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। মোট জনসংখ্যার ৬০ ভাগ কাজাখ। ৩০ ভাগ রুশ। বাকী ১০ ভাগ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠির।
খাবার
সম্পাদনাকাজাখ রান্নার মূল ভিত্তি হচ্ছে টর্ট টালিক মাল - চার ধরনের গবাদি পশু (বা চার ধরনের মাংস): ঘোড়া, উট, গরু এবং ভেড়া। ঘোড়া মাংস হল প্রধান উৎসব মাংস,গ মেষের মাংস সাধারণ মাংস হিসাবে ব্যবহৃত হয়, উটের মাংসটিও উৎসব অনুষ্ঠানের মান্স, কিন্তু প্রধান নয় কারণ কাজাখস্তানে ঘোড়ার মতো উট সহজে পাওয়া যায় না। গরুর মাংস হল সাধারণ মাংস। ঘোড়া বা ভেড়ার মাংস সিদ্ধ করে তৈরী বেশবেরমেক সর্বাধিক জনপ্রিয় কাজাখ খাবার। এটাকে খাবার ধরণের উপর ভিত্তি করে পঞ্চ অঙ্গুলী বলা হয়। সিদ্ধ মাংসের টুকরো গুলো কেটে অতিথির গুরুত্ব অনুসারে পরিবেশন করা হয়। বেশবারমেওক সিদ্ধ পাস্তা দিয়ে খাওয়া হয় এবন সাথে সরপা নামে এক প্রকার মাংসের ঝোল থাকে যা ঐতিহ্যবাহী কাজাখ বাটি কেসেতে পরিবেশন করা হয়। কাজাখদের আরেকটি জাতীয় খাবার হচ্ছে কুউরদাক। অন্যান্য জনপ্রিয় মাংসের খাবারের মধ্যে আছে কেজি যা ঘোড়া মাংস দিয়ে তৈরী হয়ে এবং শুধুমাত্র বিত্তশালীরা খেয়ে থাকে, শুঝুক, কুইরদাক, ঝাল এবং ঝায়া ইত্যাদি। আরেকটি জনপ্রিয় খাবার হচ্ছে পিলাফ (পোলাও) যা গাজর, পেঁয়াজ এর সাথে চাল ও মাংস মিশিয়ে রান্না করা হয়।