এই ভ্রমণসূচী ইস্তাম্বুল থেকে নয়াদিল্লি পর্যন্ত স্থলপথে যাত্রাপথ বর্ণনা করে। এটি হিপ্পি ট্রেইল নামেও পরিচিত, ১৯৬০ সাল থেকে এটি একটি কিংবদন্তি পথ এবং ১৯৭৯ সালের আগে ইরানে ইসলামী বিপ্লব এবং আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধের সূচনার আগে পর্যন্ত হাজার হাজার ভ্রমণকারীর দ্বারা অনুসৃত হয়েছিল।
এই রাজনৈতিক ঘটনাগুলোর আগে যা ছিল তার চেয়ে আজ এটা সাহস এবং স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে এটা সম্ভব হতে পারে বা নাও হতে পারে। ভিসার ব্যবস্থা করা কঠিন হতে পারে, কিছু সীমানা মাঝে মাঝে বন্ধ হয়ে যেতে পারে, কিছু জায়গা যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য বড় ঝুঁকি সাপেক্ষ হয়ে উঠতে পারে এবং সেটা সাধারণ যাত্রীদের আর প্রবেশযোগ্য নয় এটাও হতে পারে। এই অঞ্চলের রাজনৈতিক জটিলতার সাথে এইসব ব্যবস্থা বিস্তারিতভাবে পরিবর্তিত হয়; বর্তমান সময়কালের তথ্য না থাকিলে এখানে কোনো ভ্রমণের পরিকল্পনা করা উচিত নয়।
যাত্রাপথটি রেশম পথ এর সাথে কিছুটা অংশত একরকম, প্রাচীন কাল থেকেই চীনকে ভূমধ্যসাগরের সাথে সংযুক্ত করার মহান বাণিজ্য পথ, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট যে পথটি নিয়েছিলেন তার সাথে তিনি মেসিডোনিয়া থেকে উত্তর ভারতে যাওয়ার পথে এবং মধ্যযুগের মহান ভ্রমণকারী মার্কো পোলো এবং ইবন বতুতা এইপথের সঙ্গী হয়েছিলেন। এটি সম্পূর্ণরূপে সবকিছু অন্তর্ভুক্ত করে না, তবে তাদের সকলের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। আপনি যখন আপনার ভ্রমণের পরিকল্পনা করবেন তখন লিঙ্কযুক্ত নিবন্ধগুলি অবশ্যই নজরে রাখা প্রয়োজন সেটা মনে রাখবেন।
জানুন
সম্পাদনাএই যাত্রাপথে তিনটি দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে, যথা তুরস্ক, ইরান এবং পাকিস্তান এবং ভারতের কিছু অংশ অতিক্রম করতে হবে। আপনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য আপনার মূল্যায়ন, তার উপর নির্ভর করে এবং সেখানকার পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য আফগানিস্তানের মধ্য দিয়ে যাওয়া সম্ভব হতেও পারে আবার নাও হতে পারে।
শুধুমাত্র এই ভ্রমণপথের জন্য নির্দিষ্ট তথ্য এখানে উপলব্ধ। পথের ধারে পরিদর্শন করার জায়গাগুলির বিশদ বিবরণের জন্য, নির্দিষ্ট পৃষ্ঠাগুলি দেখুন। এছাড়াও যাত্রাপথে সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু কেনাকাটার জন্য কার্পেট দেখুন।
আপনি রোজা রাখার জন্য প্রস্তুত না থাকিলে রমজানের সময় ভ্রমণ ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন।
পূর্ব তুরস্ক, ইরান ও পাকিস্তানের পুলিশ ও কর্মকর্তারা বেশ স্পর্শকাতর। তাদের সাথে আচরণ করার সময় নিজেকে নম্র রাখুন। মাঝরাতে কোনো জায়গায় পৌঁছানো এড়িয়ে চলুন।
ভারতে পৌঁছানোর একটি বিকল্প রাস্তা হল রাশিয়া এবং/অথবা মধ্য এশিয়া। ইস্তাম্বুল থেকে সেই পথের সাথে সংযোগ করার সবচেয়ে সহজতর উপায় হতে পারে কৃষ্ণ সাগর বন্দর থেকে নৌকা যাত্রা।
তুরস্ক
সম্পাদনাপশ্চিমী তুরস্ক সারা বিশ্বের পর্যটকেরা পরিদর্শন করেন, তাই এখানে সব স্বাভাবিক সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু আপনি যত পূর্ব দিকে যাবেন, তত কম ভ্রমণকারীর সাথে দেখা হবে, বিশেষ করে যদি আপনি প্রধান পরিবহন সুবিধা থেকে দূরে যান। তাই সেখানকার মানুষ পর্যটকদের সাথে অতটা অভ্যস্ত নন। যাইহোক, এর জন্য আপনার সেই জায়গাগুলিতে যাওয়া বাধা হবে না।
ইরান
সম্পাদনাইরানে খুব বেশী পর্যটকরা পরিদর্শন করতে যান না, এবং এটি সেখানে যাওয়ার একটি প্রধান আকর্ষণ। লোকজনেরা বিদেশীদের সাথে দেখা করতে আগ্রহী এবং আপনি যদি স্থানীয় জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হন তবে আপনি আপনার ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবেন।
আফগানিস্তান
সম্পাদনাকয়েক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধ এবং চলমান অস্থিরতার কারণে, প্রায় কেউই আফগানিস্তান যায় না যদি না তাদের কাছে সত্যিকারের উপযুক্ত কারণ থাকে। ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের মাধ্যমে তালেবানদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ২০২১ সালে পুনরায় তারা ক্ষমতা দখল করে। ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী আপনি হয়ত একটি ভিসা পেতে পারেন, তবে তাদের ইস্যুকারী কনস্যুলেটগুলি কম ভিসা প্রদান করছে এবং ভিসা-নীতি স্থিতিশীল বলে মনে করা হচ্ছে না।
ভিসা পাওয়া কঠিন হতে পারে এবং পুরো দেশটি মারাত্মকভাবে বিপজ্জনক। আফগানিস্তান নিবন্ধে সতর্কতা এবং যুদ্ধ অঞ্চল নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরামর্শ দেখুন।
পাকিস্তান
সম্পাদনাপাকিস্তানে সবসময়ই পর্যটক আছে, কিন্তু যখনই সেখানে কোন খবর তৈরী হয় তখন পর্যটক কমে যায়। আফগান যুদ্ধের সময় এবং ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করার সময় স্থল সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সাধারণত লাহোরকে দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসাবে বর্ণনা করা হয় এবং মুঘল সাম্রাজ্যের আমলে অনেক সুন্দর ভবন এবং একটি চমৎকার যাদুঘর রয়েছে। এটি ভারতের একমাত্র সংযোগকারী রাস্তার কাছাকাছি এবং এটি একটি রেলকেন্দ্রও বটে তাই আপনার এটির মধ্য দিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিরতি।
ভারত
সম্পাদনাভারত ভ্রমণকারীদের কাছে জনপ্রিয়, তাই বেশিরভাগ শহরে আপনি পর্যটক হিসাবে আপনার প্রত্যাশার সমস্ত সুবিধা পাবেন।
প্রস্তুতি
সম্পাদনাভিসা
সম্পাদনাইরান, পাকিস্তান এবং ভারতে বেশিরভাগ ভ্রমণকারীদের জন্য প্রবাসাজ্ঞা বা ভিসার প্রয়োজন, তাই আপনাকে আগে থেকেই এটি পেতে হবে। আঙ্কারায় ইরানের দূতাবাস এবং ইস্তাম্বুলের দূতাবাস এখন প্রবাসাজ্ঞা দিতে অস্বীকার করে যদি আপনি দেশের বাসিন্দা না হন (কখন?)। এশিয়া বা অন্য কোথাও ভারতীয় ভিসা পেতে কোন সমস্যা নেই (জুন ২০১৫)। শুধুমাত্র পার্থক্য হল কিছু কনস্যুলেট শুধুমাত্র সর্বোচ্চ ৩ মাসের ভিসা দিতে পারে। আপনি আপনার বসবাসের দেশে আবেদন না করলে পাকিস্তানে ভিসা পাওয়া খুব কঠিন। (তারা কারাকোরাম হাইওয়েতে চীনের উত্তর পাসে স্থলপথে প্রবাসাজ্ঞা বা ভিসা দিচ্ছে না - জুন ২০১৫)। ইরান থেকে পাওয়া প্রতিবেদনগুলি নির্দেশ করে যে তৃতীয় দেশে ভিসা গ্রহণের জন্য আবেদন করতে কোনও সমস্যা নেই (কোন সংস্থাকে আপনার জন্য কাগজপত্র করতে হবে, আপনি যেখানে ভিসা নেবেন তা বেছে নিন)। তাই আসল ভিসা সমস্যা হবে পাকিস্তান, একমাত্র তারজন্যই আপনাকে আগেই ব্যবস্থা করতে হবে।
পশ্চিমা দেশগুলির আবেদনকারীদের জন্য ইরানের ভিসা পাওয়া একটি হতাশাজনক প্রক্রিয়া মনে হতে পারে। বেশিরভাগ পশ্চিমী দেশের বাসিন্দাদের অবশ্যই তেহরানে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা "প্রবাসাজ্ঞা সম্পর্কিত সংখ্যা" বা "ভিসা রেফারেন্স নম্বর" থাকতে হবে।
'সম্পর্কিত সংখ্যা' বা 'রেফারেন্স নম্বর' ইরানে পরিচিত কারুর সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে পাওয়া যেতে পারে যেখানে তাদেরকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন বা কিছু ভ্রমণ সংস্থা বা ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে করতে হবে। তাদের মধ্যে কিছু, যেমন ইরানভিসা.কম (IranVisa.com), আন্তর্জাল বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রদেয় অর্থ গ্রহণ করে (একটি সাধারণ রেফারেন্স নম্বরের জন্য প্রায় €/US$৩০) এবং নিশ্চিত করতে হবে যে আবেদনের প্রায় ১৪ দিনের মধ্যে উল্লিখিত সংখ্যাগুলি বা রেফারেন্স নম্বরগুলি অবশ্যই আপনার দূতাবাসে পাঠানো হবে। উল্লিখিত নম্বর পাওয়ার খরচ হিসাবে দূতাবাসের ভিসা খরচ ছাড়াও অতিরিক্ত দিতে হবে।
ব্রিটিশ, কানাডিয়ান এবং আমেরিকান নাগরিকরা ইরানে তাদের থাকার সময়কালের জন্য একটি পর্যটন বাণিজ্যিক সমিতি বা ট্যুর কোম্পানির মাধ্যমে লিপিবদ্ধ বা বুকিং করে শুধুমাত্র ভিসা পেতে পারেন যা কিনা (সেই সময়ের পরে একটি বা দুই দিনের থাকার প্রসার বা বাড়ান অনুমোদিত হতে পারে)। (নভেম্বর ২০১৮)
সময়নির্ধারণ
সম্পাদনাআপনি প্রতিটি জায়গায় কত সময় ব্যয় করতে ইচ্ছুক তার উপর নির্ভর করে একটি ভ্রমণের জন্য ১৫ দিন থেকে কয়েক মাস পরিকল্পনা করুন। তাত্ত্বিকভাবে, যদি খুব তাড়াতাড়ি করবার জন্য অর্থাত্ এক বাস থেকে অন্য বাসে প্রায় ঝাঁপ দিয়ে যাত্রা সম্পন্ন করতে চান তবে এটি ১১ বা ১২ দিনের মধ্যে করা যেতে পারে, তবে এর অর্থ যাত্রী কখনই পথে থামবে না বা দ্রষ্টব্যস্থানগুলি দেখবে না। পুরো যাত্রার দৈর্ঘ্য ৭০০০ থেকে ৮০০০ কিমি।
প্রকৃত সময় কিছুটা এইরকম:
- ইস্তাম্বুল থেকে তেহেরান: ৩ দিন
- তেহেরান থেকে জাহেদান: ৩০ ঘন্টা
- জাহেদান থেকে কোয়েটা: ৩০ ঘণ্টা
- কোয়েটা থেকে লাহোর: ২৪ ঘন্টা
- লাহোর থেকে নয়াদিল্লি: ২ দিন
আপনার সময় নিন। যাত্রায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাবার জন্য তাড়াহুড়ো করা এড়িয়ে চলুন।
খরচ
সম্পাদনা১৯৯০ এর দশকে এটি বিমান ভ্রমণের চেয়ে অনেক কম খরচে হত, এমনকি পথের সমস্ত হোটেল এবং খাবার খরচসহ। এটি মূলত তুরস্ক, ইরান এবং পাকিস্তানের মুদ্রার হারের উপর নির্ভর করে। ১৯৯২ সালে প্রায় ৩৫০ মার্কিন ডলারে পুরো ট্রিপটি ৫ সপ্তাহে করা যেতে পারত বা সম্ভব ছিল।
২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত, ইস্তাম্বুল-দিল্লি/মুম্বাইয়ের একটি একমুখী বিমানের ভাড়া €২৮০ এর মতো হতে পারে, তাই স্থলপথে যাওয়া এখন বিমান ভ্রমণের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল। একটি বিমানে কয়েক ঘন্টা লাগে, যাইহোক, এই ৩টি দেশে ভ্রমণ এবং ভ্রমণের সাথে কয়েক সপ্তাহ/মাস তুলনা করার কিছু নেই।
জলবায়ু
সম্পাদনাশীতকাল ব্যতীত প্রায় সব ঋতুতেই এই যাত্রাপথটি ব্যবহার করা যেতে পারে, অর্থাৎ যখন প্রচণ্ড তুষারপাত হয়, বিশেষ করে তুরস্কে এবং ইরানের সংলগ্ন অঞ্চলে, সেইসময়ে এই রাস্তাগুলি কখনও কখনও যাতায়াতযোগ্য থাকে না। তুরস্ক, ইরান এবং পাকিস্তানের যাত্রাপথের একটি বড় অংশ ১০০০ মিটারের বেশি উচ্চতায় রয়েছে, তাই সেখানকার তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালে আরামদায়ক হলেও শীতকালে ঠান্ডা এবং শুষ্ক। যাইহোক, তুরস্কের বেশিরভাগ অঞ্চল বিশেষ করে আঙ্কারার পূর্বদিকে, শীতকালে খুব ঠান্ডা এবং খুব তুষারপাত হয়, এবং পাকিস্তানের সিন্ধু উপত্যকা গ্রীষ্মে (মে থেকে জুলাই) খুব গরম থাকে। নয়াদিল্লিতে গ্রীষ্মকালে সত্যিই খুব গরম পড়ে, এবং ডিসেম্বর এবং জানুয়ারিতে ঠান্ডা শীত আপনাকে অভ্যর্থনা জানাতে পারে।
পড়ুন
সম্পাদনাযাত্রাপথে যাবার আগে যে বইটি পড়তে হবে তা হল "ড্যানজিগারস ট্রাভেলস: বিয়ন্ড ফরবিডেন ফ্রন্টিয়ার্স"। এটি নিক ড্যানজিগার (আইএসবিএন ০৫৮৬০৮৭০৬০) এর ১৯৮৪ সালে লন্ডন থেকে বেইজিং পর্যন্ত ১৮মাসের স্থলপথে ভ্রমণের গল্প। অস্ট্রেলিয়ান লেখক পিটার মুর (আইএসবিএন ০৫৫৩৮১৭০০০) এর লেখা দ্য রং ওয়ে হোম: লন্ডন টু সিডনি দ্য হার্ড ওয়ে আরেকটি দুর্দান্ত পাঠ্য, যেখানে তিনি "হিপ্পি ট্রেইল" বরাবর ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি ১৯৯০এর দশকের শেষের দিকে তার ভ্রমণযাত্রা শুরু করেছিলেন, ৪ মাসে ২৫টি দেশ ভ্রমণ করেছিলেন, এমনকি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়া এবং আফগানিস্তানেও গিয়েছিলেন।
যাত্রাপথ
সম্পাদনাইস্তাম্বুল
সম্পাদনাতুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুল, ঐতিহাসিকভাবে এটি ছিল মূল প্যারিস-ইস্তাম্বুল ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস এর শেষ প্রান্ত। সেখান থেকে শুরু করে ইরানে যাওয়ার জন্য আপনার কাছে কমপক্ষে তিনটি বিকল্প পরিবহনের উপায় রয়েছে।
ইস্তাম্বুল থেকে তেহরানের দূরত্ব প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার।
'বাসে': প্রথমতঃ তেহরানের সরাসরি বাস রয়েছে যা ইরানী কোম্পানি দ্বারা চালিত হয়। সোজা, সস্তা, কোন ঝামেলা নেই, কিন্তু মজা কোথায়? একটি বাসে দুই দিন থেকে যাত্রার জন্য একদমই আরামদায়ক উপায় নয়। তারপরে তুর্কি বাস আছে যেটা এরজুরুম যাচ্ছে সেটা সম্ভবত ইরানের বাসের চেয়ে বেশি আরামদায়ক।
ট্রেনে: যদিও ইস্তাম্বুল থেকে দেশের সুদূর পূর্বে সরাসরি ট্রেনগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তবে ঘন ঘন উচ্চ গতির ট্রেনগুলি আঙ্কারার সাথে সংযোগ করে, যেখান থেকে এরজুরুমের আরেকটি ট্রেন ধরা যেতে পারে। আরেকটি বিকল্প হল ট্রেনগুলিতে করে তাতভান-এ যাওয়া, এবং তারপরে সেখান থেকে একটি ফেরি করে হ্রদ পার হয়ে ভ্যান এ পৌঁছানো, এরপর সেখান থেকে ইরানের ট্রেনগুলি পাওয়া যেতে পারে।
ফেরিতে: এছাড়া কৃষ্ণ সাগর পেরিয়ে ট্রাবজোন পর্যন্ত যাওয়ার জন্য নৌকা রয়েছে। সেখান থেকে, এরজুরুম যাবার জন্য একটি মোটামুটি সংক্ষিপ্ত বাস যাত্রা হয়ে থাকে।
এরজুরুম
সম্পাদনাএরজুরুম এটি পূর্ব তুরস্ক দেখার কেন্দ্র। আপনি যদি তেহেরান যাওয়ার সরাসরি বাস না পেয়ে থাকেন তবে আপনাকে এখানে পরিবহনের অন্য উপায় দেখতে হবে। ডগুবেয়াজিৎ (৪ ঘন্টা) যাওয়ার বাস আছে।
ডগুবেয়াজিৎ
সম্পাদনাডগুবেয়াজিৎ সীমান্তের আগে শেষ শহর। এটি প্রধানত একটি গ্যারিসন শহর, তবে এটি আরারাত পর্বতে আরোহণ এবং ইশাক পাচা প্রাসাদ (ইশাক পাসা সারায়ে) পরিদর্শনের জন্য আদ্যস্থান। সীমান্তে ট্যাক্সিও যায়।
তুরস্ক-ইরান সীমান্ত
সম্পাদনাসেখানে ভ্রমণের বিপদ সম্পর্কে সতর্কতার জন্য ইরান নিবন্ধটি দেখুন।
তুরস্ক-ইরান সীমান্ত আরারাত পর্বতের পাদদেশে ২,৬০০ মিটার উচ্চতায়, যেখানে বাইবেল অনুসারে, নোহ তার জাহাজ নিয়ে যাত্রা শেষ করেছিলেন।
তাবরিজ
সম্পাদনাআপনার যাত্রা পথে তাবরিজ হল প্রথম বড় ইরানি শহর।
তেহরান
সম্পাদনাতেহরান হল ইরানের রাজধানী। এটি প্রায় ১ কোটি বাসিন্দার একটি বিশাল শহর।
কেরমানে যাওয়ার জন্য আপনার পছন্দের বাস বা রেললাইন আছে। দিনে দুবার করে বাস যাচ্ছে এবং বাসগুলোতে পুরো দিন বা এক রাত সময় লাগে (প্রায় ১৫ ঘন্টা)। ট্রেনগুলি অবশ্যই আরও আরামদায়ক, তবে সপ্তাহে মাত্র তিনবার চলে। এমনকি জাহেদানে অবধি (২২ ঘন্টা) সরাসরি বাস আছে।
আপনার যদি তাড়াহুড়ো না থাকে তবে ইসফাহান জায়গাটা দেখার যোগ্য। এটি সম্ভবত ইরানের সবচেয়ে সুন্দর শহর। একই দিকে একটু এগিয়ে আরেকটি আকর্ষণীয় শহর শিরাজ এবং এর কাছেই পার্সেপোলিস এর ধ্বংসাবশেষ রয়েছে।
কের্মন
সম্পাদনাকেরমান জাহেদানের রেললাইনের একটি স্টেশন এবং দক্ষিণ ইরানের একটি কেন্দ্র। জাহেদানের বাসগুলি সাত ঘন্টা সময় নেয়, তবে জানুয়ারী ২০১২ পর্যন্ত সরাসরি তেহরান থেকে ঘুমানোর জন্য বা স্লিপার ছিল।
জাহেদান
সম্পাদনাজাহেদান পাকিস্তান সীমান্তের আগের শেষ শহর। কিছু বাস আছে যেগুলো সীমান্ত পর্যন্ত চলে এবং কিছু যেগুলো সীমান্ত পেরিয়ে কোয়েটায় শেষ হয়ে যায়, কিন্তু ট্যাক্সিচালকরা আপনাকে বলবে কোনো বাস নেই।
আপনি যদি সীমান্তে ট্যাক্সি নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তবে ভ্রমণের খরচ আগেই স্থির করুন এবং যা আমেরিকান ডলার $২০ এর বেশি হওয়া উচিত নয়। মরুভূমি জুড়ে ৭০০ কিলোমিটার দূরে কোয়েটা এর আগে পর্যন্ত কোনও উপযুক্ত ভোজনশালা বা রেস্তোরাঁ নেই বলে একদিনের জন্য আপনার সাথে খাবার এবং জল নিয়ে আসা' উচিত হবে।
বিকল্পভাবে, কেউ আন্তর্জাতিক ইকোনমি ক্লাস ট্রেন "জাহিদান মিক্সড প্যাসেঞ্জার" এ সফর করতে পারেন যা জাহেদান এবং কোয়েটার মধ্যে মাসে দুবার (প্রতি মাসের ৩ এবং ১৭ তারিখে) চলে, যদিও এটি অনেক ধীরগতির যা যাত্রাকে অসুবিধাজনক করে তোলে।
জাহেদান এবং সীমান্ত শহর মিরজাভের মাঝখানে খাবারের সমস্যা হতে পারে। মিরজাভে (সীমান্তের ঠিক পরে) একটি চায়ের দোকান আছে এবং গ্রামে ছোট বাজার আছে।
ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত
সম্পাদনাসেখানে ভ্রমণের বিপদ সম্পর্কে সতর্কতার জন্য পাকিস্তান নিবন্ধটি দেখুন।
মিরজাভে নামক ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত চৌকিটি কাভির-ই লুট মরুভূমিতে রয়েছে, যা দুই সীমান্তের মধ্যে একটি জায়গায়। এটি পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যে আসল সীমানা।
বিকালে সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায়, এবং আপনি সেখানে থাকতে পারবেন না কারণ সেখানে থাকার ব্যবস্থা নেই। সীমান্তে দেরিতে পৌঁছালে জাহেদানে ফিরে যেতে হবে। আপনি সীমান্ত পোস্ট থেকে প্রায় ১০ কিমি দূরে মিরজাভে শহরে আবাসন খুঁজে পেতে সক্ষম হতে পারেন।
সীমান্ত পার হয়ে গেলে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এখান থেকে গাড়ী চালনা বাম দিকে।
সরাসরি সীমান্তে টাকা পরিবর্তন করবেন না, তাফতানের প্রধান চত্বরের দোকানে টাকা পরিবর্তন করা ঠিক হবে। তারা গ্রহণযোগ্য হারে রিয়াল এবং মার্কিন ডলার পরিবর্তন করে।
বিকল্পভাবে, জাহেদান থেকে ছয় ঘন্টা দক্ষিণে কুহক সীমান্ত মোড় নামে আরেকটি সীমান্ত মোড় আছে। একবার এখানে পৌঁছে গেলে, আপনি ন্যায়সঙ্গতভাবে পাকিস্তানে প্রবেশ করতে পারলেন এবং আরও ১২ ঘন্টার মধ্যে হায়দ্রাবাদে পৌঁছে যেতে পারেন (বিরতি হিসাবে, আপনার লারকানাকে ব্যবহার করা উচিত)।
কোয়েটা পর্যন্ত খাবারের সমস্যা হতে পারে। তাফতানে, পিটিডিসি দ্বারা চালিত একটি ছোট বাজার এবং একটি মোটেল আছে এছাড়া কোয়েটা যাওয়ার পথে অসংখ্য চেকপয়েন্ট রয়েছে যেখানে প্রতি কয়েক ঘন্টা পরপর বাস থামে।
কোয়েটা
সম্পাদনাযাত্রাপথের উপর নির্ভর করে, ইরান থেকে পাকিস্তানে প্রবেশ করার সময় আপনার প্রথম পৌঁছানোর স্থানটি হল কোয়েটা।
এখান থেকে লাহোর যাওয়ার সরাসরি ট্রেন আছে।
লাহোর
সম্পাদনালাহোর হল পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী।
এখান থেকে সীমান্তে যাবার বাস ও ট্যাক্সি পাওয়া যায়। লাহোর-নয়া দিল্লি ট্রেনটি সম্ভবত বাসের চেয়ে বেশি আরামদায়ক, তবে ধীরগতির, কারণ এটি সীমান্তে ঘণ্টার পর ঘণ্টা থেমে থাকে যখন পুলিশ লোকজন এবং ভ্রমণকারীর মালপত্র পরীক্ষা করে। এছাড়াও ট্রেনও অনেক কম চলাচল করে।
পাকিস্তান-ভারত সীমান্ত
সম্পাদনাদেশভাগের পর থেকে পাকিস্তান-ভারত সীমান্ত বহুবার বন্ধ এবং পুনরায় খোলা হয়েছে, তাই আগে থেকেই এই সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে নিন।
শিখ ধর্মের পবিত্রতম মন্দির অমৃতসর শহরে, এবং এটি সীমান্ত থেকে দিল্লি যাওয়ার পথের কাছে। সেইরকম কুরুক্ষেত্র, "ভগবদ্গীতায়" বর্ণিত যুদ্ধের স্থান এবং হিন্দুদের জন্য একটি তীর্থস্থান।
নয়াদিল্লি
সম্পাদনাভারত এর রাজধানী নয়াদিল্লি , বৃহত্তম গণতন্ত্র এবং বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ। ১৯ শতকে ব্রিটিশ রাজ নতুন দিল্লি তৈরি করার আগে পুরানো দিল্লি ছিল বেশ কয়েকটি সাম্রাজ্যের রাজধানী।
দুটি একসাথে একটি বিশাল ঘনবসতিপূর্ণ শহর। পুরানো দিল্লিতে মুঘল সাম্রাজ্যের সময় থেকে অনেক সুন্দর ভবন রয়েছে এবং কেনাকাটা এবং মশলাদার ভারতীয় খাবারের জন্য এটি একটি বিখ্যাত জায়গা। এটিতে বেশিরভাগ কম খরচের-শ্রেণীর হোটেল রয়েছে।
জর্জিয়া এবং আর্মেনিয়া মাধ্যমে বিকল্প পথ
সম্পাদনাতুরস্কের এরজুরুম থেকে একটি সহজ বিকল্প রুট বর্তমান যা আপনাকে ইরানের তাব্রিজে নিয়ে যাবে এবং যাত্রাপথে খুব বেশি কিলোমিটার যোগ না করেই এরজুরুম থেকে জর্জিয়া হয়ে আর্মেনিয়া থেকে তাব্রিজ পর্যন্ত। এটি তালিকায় দুটি দেশকে যুক্ত করেছে এবং বেশিরভাগ ইউরোপীয় এবং আমেরিকানদের জন্য জর্জিয়া বা আর্মেনিয়ায় কোন ভিসার প্রয়োজন নেই।
এই যাত্রাপথে এরজুরুম থেকে কার্সে যাওয়া অন্তর্ভুক্ত হবে, সাথে আনি ধ্বংসাবশেষের ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য স্থল বা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট পরিদর্শন করা যাবে। এটি আর্মেনিয়ার একটি প্রাচীন রাজধানী এবং পূর্ব তুরস্কের উজ্জ্বলতম স্থান ছিল। কার্স থেকে উত্তর-পূর্বে জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিসি পর্যন্ত। এরপর তিবিলিসি থেকে আপনি হাগপাট এবং সানাহিনের ইউনেস্কো স্থল সহ লরি অঞ্চলের দর্শনীয় স্থানগুলির দেখার সাথে সাথে আর্মেনিয়ায় যান, তারপরে নীচে ইয়েরেভান এবং সেখান থেকে তাব্রিজে যান।
কার্স
সম্পাদনাউত্তর-পূর্ব তুরস্কের কার্স হল আনির ইউনেস্কো ধ্বংসাবশেষের নিকটতম শহর এবং তিবিলিসিতে যাওয়ার সুবিধাজনক ধাপ।
তিবিলিসি
সম্পাদনাতিবিলিসি জর্জিয়ার রাজধানী। এটি ইউনেস্কো স্থল মিসখেতা (এমটিএসএইচটএ) শহরের কাছাকাছি।
ইয়েরেভান
সম্পাদনাইয়েরেভান আর্মেনিয়ার রাজধানী। এটি ইউনেস্কোর একমিয়াডজিন, গার্নি এবং গেগার্ডের স্থলগুলির কাছাকাছি। আপনার ইরানের দক্ষিণে যাওয়ার পথে, নোরাভাঙ্ক মনাস্ট্রি এবং বিশেষ করে ইউনেস্কো মনোনীত তাতেভ মনাস্ট্রি (বিশ্বের দীর্ঘতম কেবল কার সহ) স্থানগুলি অবশ্য দ্রষ্টব্য।
আফগানিস্তানের মধ্য দিয়ে বিকল্প পথ
সম্পাদনাসতর্কীকরণ: Afghanistan is extremely dangerous for travel. See the Afghanistan article for details. | |
সরকারি ভ্রমণ পরামর্শ
| |
(সর্বশেষ হালনাগাদ: এপ্রিল ২০২৪) |
তেহেরান থেকে লাহোর পর্যন্ত দুটি প্রধান রাস্তা রয়েছে।
বর্তমান সময়ের স্বাভাবিক যাত্রা পথ উপরে দেখানো হয়েছে. আফগানিস্তানকে এড়িয়ে তার চরম পশ্চিম প্রান্তে পাকিস্তানে প্রবেশ করতে তেহরান থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ঘুরে যান। এটি নিরাপদ। যে কোনো সতর্কতার সাথে ভ্রমণকারীদের আফগানিস্তান এড়িয়ে চলা উচিত।
১৯৬০ এবং ৭০এর দশকের প্রধান স্থলপথের রাস্তাটি পূর্বে ইরানের শহর মাশাদ, তারপর আফগানিস্তান এর হেরাত, খান্দাহার এবং কাবুল এবং খাইবার পাস হয়ে পাকিস্তানে গিয়েছিল। এটি নীচে বর্ণনা করা হয়েছে, কিন্তু এটি সাধারণভাবে আজকের সময়ে খুব বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়'।
আফগানিস্তান ১৯৭০এর দশকেও ভীতিজনক ছিল; বেশিরভাগ পুরুষের হাতে রাইফেল ছিল এবং তাদের সবার কাছে ছুরি থাকত। যাইহোক, প্রায় সমস্ত বন্দুকই ছিল একক গুলি বিশিষ্ট, বেশিরভাগই লোডার ছিল ১৯ শতকের ব্রিটিশ সেনা মার্টিনি-হেনরিস লিভার অ্যাকশন সহ। তারপর ১৯৭৯ সালে, ইউএসএসআর দেশটি আক্রমণ করে। শীঘ্রই অনেক আফগানীর কাছে একে-৪৭ ছিল। আজ প্রায় প্রতিটি আফগান মানুষের কাছে একটি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র রয়েছে''।
অবশ্যই, সমস্ত আফগান পর্যটকদের উপর গুলি করতে পারে না বা একজনকে অপহরণ করতে পারে না। তারা বেশিরভাগই বন্ধুমনোভাবাপন্ন, সহায়ক এবং অতিথিপরায়ণ। যাইহোক, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের দ্বারা আক্রমণ করা একমাত্র দেশ হিসাবে, তাদের সাদা-চর্মযুক্ত বিদেশীদের বিরক্ত করার কিছু কারণ রয়েছে। ২০২১ সালে তালেবানের অধিগ্রহণের সাথে সাথে, সেখানে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ, যদিও বিপদের বিবরণ সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়।
আপনি যদি আফগানিস্তানের ঝুঁকি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তবে যুদ্ধ অঞ্চল নিরাপত্তা বিষয়ে আমাদের নিবন্ধটি দেখুন।
মাশাদ
সম্পাদনাতায়েবাদ
সম্পাদনা১১ কিমি দূরে এসলাম গালে নামে সীমান্তে মিনিবাস এবং ট্যাক্সি আছে।
ইরান-আফগানিস্তান সীমান্ত
সম্পাদনাআফগান দিক থেকে হেরাত যাওয়ার বাস আছে।
হেরাত
সম্পাদনাহেরাত একটি বড়, সমৃদ্ধ আফগান শহর, ইরানী সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত। ইরানের সাথে বাণিজ্যের কারণে এবং অন্যান্য আফগান শহরের তুলনায় এটি বেশী উন্নত। লোকেরা খুব বন্ধুত্বপূর্ণ এবং বিদেশীদের প্রতি অতিথিপরায়ণ এবং কাবুল এর লোকদের চেয়েও বেশি ধার্মিক।
হেরাতে কোন পর্যটন নেই, তবে ইউরোপ বা অন্যান্য পশ্চিমা দেশ থেকে আসা বিদেশী শ্রমিকদের একটি ছোট সম্প্রদায় রয়েছে। জার্মান বা ভারতীয় কনস্যুলেটে জিজ্ঞাসা করে বা মার্কো পোলো হোটেলে ঘুরে বেড়ালে তাদের খুঁজে পাওয়া সহজ।
আফগানের রাস্তা
সম্পাদনাঅধিকাংশ আফগানিস্তানের রাস্তা খুবই খারাপ।'' আপনার একটি চার চাকা ড্রাইভ গাড়ির প্রয়োজন যাতে একটি টানিবার যন্ত্র বা উইঞ্চ সহ গাড়ি চালানোর কথা বিবেচনা করা যায়।
একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম হল পশ্চিমে হেরাত থেকে পূর্বে কাবুল পর্যন্ত প্রধান মহাসড়ক। এটি কান্দাহার হয়ে দক্ষিণে ব্যাপকভাবে ঘুরে যায়; দেশের কেন্দ্র দুর্গম পাহাড়ে ভরা। কাবুল থেকে খাইবার গিরিপথ পেরিয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার মহাসড়কটিও ভালো, যদিও খাড়া এবং সবসময় ঝোড়ো হাওয়ার সম্মুখীন হতে হয়। এই দুটি মহাসড়কই একত্রে পূর্ববর্তী কালে স্থলপথে ভ্রমণকারীদের জন্য প্রধান যাত্রাপথ ছিল কিন্তু আজ আফগানিস্তানের এই রাস্তায় ঝুঁকি নেওয়ার জন্য (সমস্ত পরামর্শের বিপরীতে) কেউ বেছে নিতেও পারে।
এছাড়াও কাবুল থেকে উত্তরে হিন্দুকুশ পর্বতমালার মধ্য দিয়ে মাজার-ই শরীফ এবং মধ্য এশিয়া এর তাজিকিস্তান সীমান্ত পর্যন্ত একটি ভালো রাজপথ রয়েছে। এই রাস্তাটিতে রয়েছে সালাং টানেল, যা বিশ্বের দীর্ঘতম। এটি রাশিয়ার সহায়তায় নির্মিত হয়েছিল এবং তারপরে রাশিয়ান আক্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল।
কান্দাহার
সম্পাদনাকান্দাহার দক্ষিণ আফগানিস্তানের প্রধান শহর। ১৯৯৬-এর শেষের দিকে থেকে ২০০১ পর্যন্ত, এটি তালেবান সরকারের "কার্যকারী" বা "ডি ফ্যাক্টো" রাজধানী ছিল এবং ২০০১-এর শেষের দিকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী দ্বারা তালেবানদের উৎখাত করা পর্যন্ত এটি ছিল।
বোলান গিরিপথ এখান থেকে দক্ষিণে পাকিস্তানের কোয়েটা যায়, কিন্তু ২০১৩ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত এটি বেশ বিপজ্জনক রাস্তা ছিল এবং পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল না।
কাবুল
সম্পাদনাকাবুল হল আফগানিস্তানের রাজধানী।
আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্ত
সম্পাদনাকাবুল থেকে পেশোয়ার যাওয়ার পথে অন্তত এক দিন সময় লাগে এবং প্রায়ই জালালাবাদ এ রাত্রে অবস্থান করার প্রয়োজন হয়। ২০১৬-এর মাঝামাঝি পর্যন্ত, বেশিরভাগ পশ্চিমী সরকারের পেশোয়ার বা জালালাবাদ ভ্রমণের বিরুদ্ধে সতর্কতামূলক ভ্রমণ পরামর্শ রয়েছে; উভয়ই বেশ বিপজ্জনক। তাদের মধ্যে এলাকাটি আরও অত্যন্ত বেশি বিপজ্জনক।
কাবুল থেকে সীমান্ত পর্যন্ত
সম্পাদনাবাসগুলি তাড়াতাড়ি শুরু যাত্রা শুরু করে এবং সীমান্তে পৌঁছতে প্রায় আট ঘন্টা সময় লাগে। রাস্তাটি খুব ভালো নয় তাই খুব আরামদায়ক যাত্রার আশা করা যাবেনা। মূল্য ২০০ থেকে ২৫০ এ এফ (€4 এর নিচে) যদি আপনি একটি মিনি ভ্যান বাসে আরো দশ থেকে বিশ জন লোকের সাথে যান। লম্বা মানুষের পক্ষে সামনের আসন বেশি আরামদায়ক হবে। এই ভ্যানগুলি কখনও কখনও একটু বেশি ব্যয়বহুল।
ট্যাক্সি দ্রুত এবং বেশী ব্যয়বহুল।
জালালাবাদ কাবুল এবং সীমান্তের মধ্যবর্তী একটি মাঝারি আকারের শহর। যদি রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনুমতি দেয় যেটা ২০১৮ সালের প্রথম দিকে অসম্ভব ছিল, সেখানে একটি রাত কাটানো বিবেচনা করতে পারেন। সকালে জালালাবাদ থেকে যাত্রা শুরু করলে কাবুল থেকে আসা লোকজনের আগে সীমান্তে গিয়ে ভিড় এড়াতে পারবেন।
মধ্যাহ্নভোজের সময় সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায়।
সীমান্ত থেকে পেশোয়ার পর্যন্ত
সম্পাদনাবাস এবং ট্যাক্সি সীমান্ত পর্যন্ত যাবে। তারপর লোকজনকে পায়ে হেঁটে সীমান্ত অতিক্রম করতে হবে এবং দ্বিতীয় বাস বা ট্যাক্সি নিতে হবে। বিদেশীদের (অ-পাকিস্তানি বা অ-আফগানি) উপজাতীয় অঞ্চলগুলি অতিক্রম করার অনুমতি পেতে হবে, যেগুলি সীমান্ত এবং পেশোয়ারের মধ্যে অবস্থিত এবং উপজাতিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং পাকিস্তান সরকার দ্বারা নয়। অনুমতি বিনামূল্যে কিন্তু একজন সৈনিক আপনাকে তার সাথে ট্যাক্সিতে নিয়ে যাবে। সৈন্যের দাম পড়বে প্রায় ১০০ পাকিস্তানি রুপিয়া (€১.৪) এবং ট্যাক্সির ভাড়া এর দ্বিগুণ।
পথটি কিংবদন্তি খাইবার পাস দিয়ে গেছে।
নিরাপত্তা
সম্পাদনাভ্রমণকারীরা যারা জানেন তারা কী করছেন তাদের জন্য ভ্রমণ নিরাপদ বলে মনে করা যেতে পারে। যানজট সবচেয়ে বড় বিপদ তাই শুক্রবারে ভ্রমণ করার সুপারিশ করা যেতে পারে যখন ট্রাফিক অন্যান্য দিনের তুলনায় হালকা থাকে। সম্ভব হলে আগে থেকেই পরিচিত একজন ভালো ড্রাইভার নিন। বাসগুলি ট্যাক্সির চেয়ে নিরাপদ কারণ সেগুলি ধীরে চালাতে পারে।
পেশোয়ার
সম্পাদনাপেশোয়ার পাকিস্তানের একটি বড় শহর। শহরটিতে প্রচুর যানজট হয় এবং মনে হয় এখানের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল।
পশ্চিমী মানের অনেক পান্থনিবাস বা হোটেল এবং অতিথিশালা বা গেস্ট হাউস আছে। বিশেষ করে "ইউনিভার্সিটি টাউন" জেলায় এবং শহরের কেন্দ্রে।
- বাজার এবং একটি পুরানো মসজিদ সহ পুরানো শহরের কেন্দ্রটি দেখার মতো।
- গ্রীষ্মে, পাহাড়ে পদব্রজে ভ্রমণ বা হাইকিং ট্যুর দেওয়া হয়। গ্রিনস হোটেলের সামনে গ্রিন ট্যুর এ জিজ্ঞাসা করুন।
- খাইবার পাস এক ঘণ্টার দূরত্বে এবং ট্যাক্সি নিয়ে যাওয়া যায়। এটি উপজাতীয় এলাকায় অবস্থিত, এবং এটি খুঁজে পাওয়া সহজ। বিদেশীদের এই এলাকায় প্রবেশের জন্য অনুমতির প্রয়োজন।
- পেশোয়ার জাদুঘর এবং পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক নিদর্শনের জন্য অবশ্য দ্রষ্টব্য।
পথের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনাআরও কিছু জায়গা ঘুরে দেখার মতো, কিন্তু এই যাত্রায় আপনাকে সেগুলির মধ্য দিয়ে যেতে হবে না।
তুরস্ক
সম্পাদনা- আঙ্কারা (তুরস্কের রাজধানী)
- এসকিসেহির
- এরজিনকান
- আনি এর ধ্বংসাবশেষ, আর্মেনিয়ার প্রাচীন রাজধানী এবং ১০০১ গির্জার শহর হিসাবে পরিচিত
- লেক ভ্যান-এর আকতামার দ্বীপে আর্মেনিয়ান মঠ - পূর্ব তুরস্কের অন্যতম চিত্তাকর্ষক স্থান।
- দক্ষিণ তুরস্কের ভূমধ্যসাগরীয় উপকূল একটি বেড়ানোর জায়গা, যা গ্রীক দ্বীপপুঞ্জের মতোই কিন্তু সস্তা।
ইরান
সম্পাদনাপাকিস্তান
সম্পাদনা- করাচি (পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর)
- মুলতান (শহরটি সুফি মাজারের আবাসস্থল)
- ইসলামাবাদ (পাকিস্তানের রাজধানী; সব দূতাবাস সেখানে আছে)
- রাওয়ালপিন্ডি (উত্তর পাকিস্তানের নাভিকেন্দ্র; ইসলামাবাদ যেতে চাইলে এখানে থাকুন)
- তক্ষশীলা (সম্রাট অশোকের বৌদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান)
ভারত
সম্পাদনা- অমৃতসর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে পাঞ্জাবের একটি শহর। এখানে স্বর্ণ মন্দির রয়েছে, এটি শিখ ধর্মের কেন্দ্র এবং কিছু জাদুঘর এবং স্মৃতিসৌধ রয়েছে।
- শিমলা দিল্লির উত্তরে একটি পার্বত্য শহর এবং ব্রিটিশ রাজের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী ছিল। এখানের জলবায়ু মনোরম এবং এখানে আকর্ষণীয় পুরানো ঔপনিবেশিক ভবন আছে।
- মুম্বাই হল ভারতের সবচেয়ে উন্নত শহর যা সমগ্র ভারতের জনসংখ্যার প্রায় ২%। ১৯৪৭ সালে শেষ হওয়া ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পুরানো ঔপনিবেশিক ভবনগুলি দেখার জন্য দক্ষিণ মুম্বাই একটি আকর্ষণীয় স্থান। শহরটি বিনোদন শিল্প বলিউডকে আশ্রয় করে, যা হলিউডের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চলচ্চিত্র শিল্প। শহরের শালীন নৈশপ্রমোদ বা নাইটলাইফ সহ একটি বিশ্বজনীন সংস্কৃতি রয়েছে। এই শহরটি ৭টি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত যা সেতুদ্বারা সংযুক্ত করা হয়েছে।
- আহমেদাবাদ ২০১৩ সালের হিসাবে ভারতের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল রাজ্য গুজরাট-এর সবচেয়ে বড় শহর আহমেদাবাদ। এই শহরের মুঘল সম্রাট আহমদ শাহের সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। মুম্বাইয়ের পায়ের ছাপের উপর, এই শহরটি ভারতের পরবর্তী ম্যানচেস্টার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আর্মেনিয়া
সম্পাদনা- যদিও এটি ইরান থেকে উত্তরে কিন্তু যদি আপনি পুরো তুরস্ক এবং ইরান জুড়ে আর্মেনিয়ান গীর্জা এবং মঠগুলি দেখতে পান এবং আপনার ভাল লাগে তবে আপনার অবশ্যই আর্মেনিয়া তে যাওয়া উচিত। বিকল্পভাবে, আপনি মূল যাত্রাপথ থেকে একটি চক্কর দিয়ে পূর্ব তুরস্ক থেকে জর্জিয়া এবং বাতুমি এবং আখালতসিখে বা তিবিলিসি হয়ে আর্মেনিয়াতে যেতে পারেন এবং ইরানের দিকে ফিরে যেতে পারেন বা উল্টোটাও করতে পারেন।
পরবর্তী ভ্রমণ
সম্পাদনাআগের দিনে, যারা এই পথটি অতিক্রম করেছিল তারা কদাচিৎ নয়াদিল্লিতে তাদের যাত্রা শেষ করেছিল, এবং আপনিই বা কেন করবেন তার কোনও কারণ নেই। কেউ কেউ উত্তরে হিমালয়, নেপাল রাজ্যের (তৎকালীন) দিকে যাত্রা করেছিলেন; জাতীয় রাজধানী কাঠমান্ডু ফ্রিক স্ট্রিট নামের একটি রাস্তা সেই দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। অনেকে পরিবর্তে দক্ষিণে গোয়ার বিস্তৃত সৈকত বরাবর জ্ঞানার্জনের চেষ্টা করেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এর দিকে এগিয়ে যাওয়া, যেখানে ব্যানানা প্যানকেক ট্রেইল এর আশেপাশে একটি অনুরূপ দৃশ্য বিদ্যমান, এটিও বেশ জনপ্রিয় ছিল, যদিও বার্মা (মায়ানমার) এর মধ্য দিয়ে একটি স্থলপথে যাত্রা আজকের মতই সীমাবদ্ধ ছিল। কেউ কেউ এমনকি অস্ট্রেলিয়া-এর দিকে রওনা দিয়েছিলেন, তবে সাধারণত তিমুর সাগর অতিক্রম করার জন্য একটি ছোট ফ্লাইটের প্রয়োজন হয়।
{{#assessment:ভ্রমণপথ|ব্যবহারযোগ্য}}