ভারতের রেল নেটওয়ার্ক বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম, এবং এর রেল ব্যবস্থা সর্বদা নিয়মানুবর্তী না হলেও যথেষ্ট দক্ষ। ৬০,০০০ কিমির বেশি রেল ট্র্যাক ৭,৫০০টিরও বেশি স্টেশনকে সংযুক্ত করে এবং প্রতি দিন ২ কোটি লোকদের বহন করে। যদিও ভারতে দূরত্ব অত্যন্ত বেশি এবং ভারতীয় ট্রেন বিশ্বের সবচেয়ে ভাল ট্রেন নয়, কিন্তু এই ট্রেনে ভ্রমণ করলে ভ্রমণকারীদের অভিজ্ঞতায় এক নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। ট্রেন ছাড়া স্থানীয় ব্যক্তিদের বন্ধু করা এবং চিত্তাকর্ষক ও বৈচিত্র্যপূর্ণ ভারতীয় গ্রামীণ অঞ্চলকে দেখার তেমন ভাল উপায় নেই। রেল পরিবহন অনেকক্ষেত্রে ঘুরে দেখার সবচেয়ে দ্রুত ও সস্তা উপায়।
ভারতের জাতীয় রেল ব্যবস্থার সমস্ত ট্রেন কেন্দ্রীয় সরকারের ভারতীয় রেল দ্বারা পরিচালিত।
ট্রেন
সম্পাদনাআপনার যাত্রাপথ ও ভ্রমণের সময়ের উপর নির্ভর করে ভারতে বিভিন্নরকম ট্রেন বর্তমান। ব্যয়বহুল ও বিলাসবহুল ট্রেন সাধারণত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হয়, কেবল প্রধান স্টেশনে থামে, কেবল সংরক্ষিত আসন ও বিছানা বর্তমান এবং সাধারণত যাত্রীদের বেশি জায়গা দেয়। সস্তার পরিষেবা ধীরগতির হয়, অনেকসময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকে না এবং অসংরক্ষিত কামরা থাকে। বিভিন্নরকম ট্রেন ও কামরার জন্য আপনার কাছে পাশ্চাত্যের মতো প্রথম শ্রেণির কামরা থেকে একদম আটপৌরে কামরায় যাওয়ার বিকল্প আছে। আপনি যদি একদম বিলাসী রেল ভ্রমণ উপভোগ করতে চান, তাহলে ভারতের বিভিন্ন জনপ্রিয় গন্তব্যের চারিদিকে বিভিন্ন বিলাসী ট্রেন বর্তমান।
নিয়মিত ট্রেন
সম্পাদনাভারতের সমস্ত নিয়মিত ট্রেন হয় সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, এক্সপ্রেস/মেল, ফাস্ট প্যাসেঞ্জার, প্যাসেঞ্জার কিংবা লোকাল/ইএমইউ ট্রেন। ব্যয়বহুল থেকে সাধারণ ট্রেনের তালিকা হলো নিম্নরূপ:
- রাজধানী এক্সপ্রেস — এটি সম্পূর্ণভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুপারফাস্ট রাতের ট্রেন। এতে কেবল এসি স্লিপার ব্যবস্থা বর্তমান এবং এটি জাতীয় রাজধানী (নতুন দিল্লি) ও রাজ্য রাজধানীর মধ্যে পরিচালিত। রাজধানী এক্সপ্রেস ভারতীয় রেলের সবচেয়ে বিলাসবহুল ট্রেন। রাজধানী এক্সপ্রেসের এসি প্রথম শ্রেণির কোচ সবচেয়ে বিলাসবহুল এবং এটি ট্রেনের প্যানট্রি কারের সঙ্গে সংযুক্ত, যেখানে আপনি নিজের পছন্দের খাবার অর্ডার করতে পারেন। রাজধানী এক্সপ্রেস ভারতের দ্রুততম দূরপাল্লার ট্রেন এবং এটি সর্বদা নিয়মানুবর্তী। এটি সংশ্লিষ্ট রুটের অন্যান্য ট্রেনের থেকে প্রাধান্য পায়।
- বন্দে ভারত এক্সপ্রেস — এটি সম্পূর্ণভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সেমি-হাই-স্পিড আন্তঃনগর ইএমইউ ট্রেন। এতে বিভিন্ন আধুনিক পরিষেবা বর্তমান, যার মধ্যে স্বয়ংক্রিয় দরজা উল্লেখযোগ্য। এটি ভারতীয় রেলের সবচেয়ে দ্রুত ও বিলাসবহুল ট্রেনের মধ্যে অন্যতম, তবে এতে কেবল বসার ব্যবস্থা আছে (কোনো স্লিপার কামরা নেই)। নতুন দিল্লি–বারাণসী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস দিল্লি ও বারাণসীর মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত ট্রেন, কারণ এতে ভ্রমণ করলে কেবল ৮ ঘণ্টা লাগে যেখানে অন্যান্য ট্রেনে ভ্রমণ করলে কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা লাগে (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি ১২ ঘণ্টার অনেক বেশি লাগে)।
- তেজস এক্সপ্রেস — এটি সম্পূর্ণভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সেমি-হাই-স্পিড লোকোমোটিভ ট্রেন। এতে বিভিন্ন আধুনিক পরিষেবা বর্তমান, যার মধ্যে স্বয়ংক্রিয় দরজা উল্লেখযোগ্য। যদিও এতে কেবল বসার ব্যবস্থা আছে (কোনো স্লিপার কামরা নেই), তেজস এক্সপ্রেস দিনের আলোতেই তার যাত্রা সম্পূর্ণ করে। কিছু রাজধানী এক্সপ্রেস একইসঙ্গে তেজস এক্সপ্রেস।
- শতাব্দী এক্সপ্রেস — দ্রুত, নিকটপাল্লার আন্তঃনগর ট্রেন, যা কোনো অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহরদের সংযুক্ত করে, যেমন দুটি পার্শ্ববর্তী রাজ্যের রাজধানী। এটি সম্পূর্ণভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেন, তবে এতে কেবল বসার ব্যবস্থা আছে (কোনো স্লিপার কামরা নেই)।
- দুরন্ত এক্সপ্রেস — দ্রুত দূরপাল্লার ট্রেন, তবে এর বেগ ও প্রাধান্য রাজধানী এক্সপ্রেসের তুলনায় কম। আগেকার দুরন্ত এক্সপ্রেস ছিল ননস্টপ ট্রেন যা অনেক দূরে অবস্থিত দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহরকে সরাসরি সংযুক্ত করত। তবে বর্তমানে দুরন্ত এক্সপ্রেস কিছু স্টেশনে থামে। এতে এসি ও নন-এসি দুরকম কামরা বর্তমান এবং এটি রাজধানীর তুলনায় কম দামে বিলাসিতা ও নিয়মানুবর্তিতা প্রদান করে।
- গরিব রথ এক্সপ্রেস — এটি সম্পূর্ণভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুপারফাস্ট রাতের ট্রেন। এতে বসার ও শোয়ার উভয় ব্যবস্থা বর্তমান, এবং কম দামে বেশি কামরা প্রতি আসন পাওয়া যায়। এটি উপরে উল্লেখিত অন্যান্য ট্রেনের মতো নিয়মানুবর্তী বা বিলাসী নয় এবং এটি উপরে উল্লেখিত ট্রেনের থেকে কম প্রাধান্য পায়।
বিদ্র: উপরে উল্লেখিত সমস্ত ট্রেন সম্পূর্ণভাবে সংরক্ষিত এবং এদের কোনো অসংরক্ষিত কামরা নেই (নিচে দেখুন)।
- জন শতাব্দী এক্সপ্রেস — এটি সুপারফাস্ট আন্তঃনগর ট্রেন এবং এতে এসি, নন-এসি ও অসংরক্ষিত বসার কামরা বর্তমান। জন শতাব্দী এক্সপ্রেস সাধারণত অত্যন্ত নিয়মানুবর্তী।
- এক্সপ্রেস ও মেল — এই ট্রেনে এসি ও নন-এসি কামরা এবং বসার ও শোয়ার ব্যবস্থা বর্তমান। এগুলি কেবল প্রধান রেলওয়ে স্টেশনে থামে।
- ফাস্ট প্যাসেঞ্জার — এই ট্রেনে কেবল নন-এসি কামরা এবং অসংরক্ষিত বসার (অনেকসময়) ও শোয়ার (কদাচিৎ) ব্যবস্থা বর্তমান। এটি প্রায় সমস্ত স্টেশনে থামে।
- প্যাসেঞ্জার — এই ট্রেনে কেবল অসংরক্ষিত নন-এসি বসার কামরা বর্তমান। এটি সমস্ত স্টেশনে থামে।
- লোকাল বা ইএমইউ — এই ট্রেনে বসার ও দাঁড়ানোর ব্যবস্থা বর্তমান এবং এটি সাধারণত কোনো বড় শহরের চারিদিকে পরিচালিত। লোকাল ট্রেন অনেকসময় কোনো শহরতলি রেল নেটওয়ার্কের অংশ।
ভারতীয় রেল দুই ধরনের কামরা ব্যবহার করে। আইসিএফ কোচ ভারতীয় রেলের যাত্রীবাহী পরিষেবার প্রধান অবলম্বন ছিল। যেহেতু এটি ১৯৫০-এর দশকে চালু করা হয়েছিল, সেহেতু এই কামরাগুলি বহু পুরনো এবং এর অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামো জীর্ণ হয়ে গেছে। ২০০০-এর দশকে চালু হওয়া এলএইচবি কোচের বেশিরভাগই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (দীন দয়ালু কোচ ব্যতীত) এবং এর অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামোও ভাল। এটি সাধারণত লাল ও ধূসর কিংবা নীল ও ধূসর রঙের হয় এবং আইসিএফ কোচের থেকে সাধারণত বেশি আরামদায়ক। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, রাজধানী এক্সপ্রেস, তেজস এক্সপ্রেস ও শতাব্দী এক্সপ্রেস এলএইচবি কোচ, দুরন্ত এক্সপ্রেস ও জন শতাব্দী এক্সপ্রেস ট্রেনভেদে এলএইচবি ও আইসিএফ কোচ, বন্দে ভারত এক্সপ্রেস তার নিজস্ব কামরা এবং অন্যান্য সমস্ত ট্রেন খুব সম্ভবত আইসিএফ কোচ ব্যবহার করে।
পার্বত্য ট্রেন
সম্পাদনাভারতীয় রেল বিভিন্ন শৈলশহরে ন্যারো-গেজ ট্রেন পরিচালনা করে। এখানে ছোট্ট ট্রেন সুড়ঙ্গের ভিতর, সেতুর উপর এবং আঁকাবাঁকা পথ বরাবর বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্য দিয়ে যায় এবং এতে ভ্রমণ করা এক আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। এখানে উল্লেখিত পার্বত্য রেলের প্রথম তিনটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।
- দার্জিলিং হিমালয়ান রেল — হিমালয়ের খাড়া ও ভয়ঙ্কর পাদদেশ বেয়ে যাওয়া এই "টয় ট্রেন"-এ করে শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত ৮৩ কিমি দীর্ঘ পথ যেতে ৬ ঘণ্টা লাগে। ১৮৮৩ সালে সম্পন্ন এই রেলপথ সড়কপথকে অনুসরণ করে। দার্জিলিঙের নিকট বাতাসিয়া লুপ তার চমৎকার দৃশ্যের জন্য বিখ্যাত।
- কালকা–শিমলা রেল — কালকা থেকে শিমলা পর্যন্ত এই ৯৬ কিমি দীর্ঘ রেলপথটি হিমাচলের শিবালিক পর্বতের চমৎকার দৃশ্য দিয়ে যায়। এই রেলপথটি ১৯০৩ সালে চালু করা হয়েছিল।
- নীলগিরি পার্বত্য রেল — তামিলনাড়ুর মেট্টুপালায়ম থেকে উটি পর্যন্ত ৪৬ কিমি দীর্ঘ ভারতের সবচেয়ে খাড়া রেলপথ এবং উটি যাওয়ার সময় এটি ৬,১৫৯ ফুট (১,৮৭৭ মিটার) পর্যন্ত আরোহণ করে। এটি ১৮৯৯ সালে চালু করা হয়েছিল।
বিলাসবহুল ট্রেন
সম্পাদনাভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করার সবচেয়ে বিলাসবহুল উপায়ের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিলাসবহুল ট্রেনে ভ্রমণ। ১৯৮২ সালে রাজস্থান ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন ও ভারতীয় রেলের যৌথ উদ্যোগে প্যালেস অন হুইলস নামক বিলাসবহুল ট্রেন চালু হয়েছিল, যার দ্বারা রাজস্থানে পর্যটন প্রচার করা হয়েছে। এতে সাধারণত বিদেশি পর্যটকদের পরিবেশন করা হয়। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী ভারতে মোট ৬টি বিলাসবহুল ট্রেন বিভিন্ন রুটে যাতায়াত করে এবং মোট ১১টি প্রিপ্যাকেজড ভ্রমণপথ প্রদান করে।
- প্যালেস অন হুইলস — যদিও ভারতে বিলাসবহুল ট্রেন ভ্রমণ ব্রিটিশ আমলে মহারাজার যুগ থেকে চলে এসেছে, ১৯৮২ সালে ভারতে প্রথম সম্পূর্ণ বিলাসবহুল ট্রেন চালু হয়েছিল। রাজস্থানকে এক আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে প্রচার করার জন্য রাজস্থান ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন ও ভারতীয় রেলের যৌথ উদ্যোগে প্যালেস অন হুইলস চালু করা হয়েছিল। এই উদ্যোগটি বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে বিরাটভাবে সফল হয়েছিল এবং কয়েক দশক পরে এধরনের আরও ট্রেন চালু হয়েছিল। এই ট্রেনটি নতুন দিল্লি থেকে শুরু করে জয়পুর, চিত্তোরগড়, উদয়পুর, জয়সলমির, যোধপুর ও আগ্রা হয়ে ভ্রমণ করে। এই ট্রেনে বিভিন্ন আধুনিক সুযোগসুবিধা, যেমন ইন্টারনেট, লাইভ টিভি, ভোজনালয়, বার, বাথরুমসহ গেস্ট কেবিন, এমনকি স্পা বর্তমান। প্যালেস অন হুইলস-এর সম্পূর্ণ প্যাকেজের খরচ মাথাপিছু ৩৪০ মার্কিন ডলার প্রতি রাত থেকে শুরু এবং ব্যস্ত মরসুমে (অক্টোবর–মার্চ) এর খরচ মাথাপিছু ৪৫০ মার্কিন ডলার প্রতি রাত পর্যন্ত হতে পারে।
শ্রেণি
সম্পাদনাভারতে রেল ভ্রমণের বিভিন্ন শ্রেণির কামরা বর্তমান। সব ট্রেনে সব শ্রেণির কামরা বর্তমান নেই, যেমন চেয়ার কার কামরা সাধারণত নিকটপাল্লার ট্রেন ও উচ্চতর-গতির ট্রেনে থাকে, অন্যদিকে স্লিপার কামরা কেবল রাতের ট্রেনে থাকে।
দূরপাল্লার শ্রেণি
সম্পাদনা- এসি প্রথম শ্রেণি (1A) — ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক শ্রেণির কামরা। এতে লকেবল চার বার্থের ও দুই বার্থের কামরা বর্তমান। এই ধরনের কামরা পরিষ্কার ও মাদুর দেওয়া এবং এর শৌচালয় বা বাথরুম অন্যান্য কামরার থেকে অনেক পরিষ্কার থাকে। সেখানে চাদর, বালিশ ও কম্বল দেওয়া হয় (একজন কর্মী রাতে বিছানা করে দেন)। এসি প্রথম শ্রেণির কামরা সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ রাতের ট্রেনে থাকে এবং এটি সবচেয়ে ব্যয়বহুল শ্রেণি।
- এসি ২ টায়ার (2A) — এতে যাত্রীদের শোয়ার জন্য একটি মুক্ত কেবিনে চারটি বার্থ কিংবা কামরার ধার বরাবর দুটি বার্থ থাকে। প্রত্যেক কেবিনে গোপনীয়তার জন্য একটি করে পর্দা থাকে। এখানে চারটি শৌচালয় বা বাথরুম বর্তমান, এবং এর কামরার উভয়প্রান্তে দুটি করে শৌচালয় থাকে। এখনকার শৌচালয়ে সাধারণত পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য ধাঁচের পায়খানা থাকে এবং সেখানে টয়লেট পেপার বর্তমান। সেখানে চাদর, বালিশ ও কম্বল দেওয়া হয়।
- এসি ৩ টায়ার (3A) — এটি এসি ২ টায়ারের মতোই, কিন্তু কেবিনে একটি অতিরিক্ত মিডল বার্থ বর্তমান। এসি ২ টায়ারের মতো প্রত্যেক কেবিনে গোপনীয়তার জন্য একটি করে পর্দা থাকতে পারে। মিডল বার্থের লোক যদি অনেকক্ষণ ধরে ঘুমোতে অভ্যস্ত হন তাহলে এটি সকালে লোয়ার বার্থে সোজা বসতে অসুবিধা হবে। বিকালে চাদর, বালিশ ও কম্বল দেওয়া হয়। এখানে অতিরিক্ত যাত্রীদের উপস্থিতির জন্য এসি ৩ টায়ার কামরা এসি ২ টায়ার কামরার চেয়ে বেশি কোলাহলপূর্ণ হয়।
- এসি ৩ টায়ার ইকোনমি (3E) — এটি সাধারণত গরিব রথ এক্সপ্রেস ও কিছু দুরন্ত এক্সপ্রেস পাওয়া যায়। এটি এসি ৩ টায়ারের মতোই, কিন্তু ধারেও মিডল বার্থ বর্তমান, যার ফলে একটি বে-তে (bay) মোট ৯টি বার্থ থাকে।
- স্লিপার (SL) — বেশিরভাগ ভারতীয় স্লিপার কামরায় ভ্রমণ করেন এবং এটি দেশের চারিদিকে ঘুরে দেখার জন্য একটি সস্তা উপায়। এখনকার বার্থগুলি এসি ৩ টায়ারের মতোই সাজানো হয়, কেবিনে ৬টি বার্থ ও ধার বরাবর ২টি বার্থ, তবে এতে কোনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই। এর অসুবিধা হচ্ছে যে কামরার ভিতরটা গরম, ঘর্মাক্ত ও অস্বস্তিকর। শৌচালয় বা বাথরুম অনেকসময় নোংরা হয় এবং ভারতের কিছু প্রান্তে আপনাকে অসংরক্ষিত যাত্রীদের সঙ্গে একই কেবিনে ভ্রমণ করতে হবে। আপনি যদি দুঃসাহসিক হন, তাহলে এর মাধ্যমেই আপনি গোটা ভারতবর্ষকে দেখতে পাবেন। এই কামরার মধ্যে চাওয়ালা এবং বিভিন্নরকম দ্রব্য ও খাবার (সাধারণত স্থানীয়) বিক্রি করা ফেরিওয়ালা ঘুরে বেড়ান এবং আপনি নিজেকে এই শ্রেণির কামরায় ভ্রমণকারী নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সঙ্গে খাবার ভাগ করতে ও বিভিন্ন জীবনকাহিনীর সম্বন্ধে জানতে পারবেন।
বিভিন্ন শ্রেণির সাধারণ গঠনের জন্য আপনি ইংরেজি ভাষায় এই বেসরকারি ডায়াগ্রামগুলি দেখতে পারেন।
নিকটপাল্লার শ্রেণি
সম্পাদনাবিগত বছরে নতুন কামরা ও পরিষেবা চালু হওয়ার জন্য এই নিকটপাল্লার কামরাদের গুণগত মান ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়, এমনকি একই শ্রেণির মধ্যে।
- অনুভূতি (EA) — কিছু শতাব্দী এক্সপ্রেস ট্রেনে এটি পাওয়া যায়। এটি এগজিকিউটিভ চেয়ার কারের এক আধুনিক রূপ, এবং এতে যাত্রীদের জন্য উন্নত আসন ও ডিসপ্লে স্ক্রিন বর্তমান। এটি তেজস এক্সপ্রেসের চেয়ার কারের মতোই।
- এগজিকিউটিভ চেয়ার কার (EC) — কেবল বন্দে ভারত এবং কিছু শতাব্দী ও দুরন্ত এক্সপ্রেসে পাওয়া যায়। এটি অত্যন্ত আরামদায়ক এবং নিকটপাল্লার ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক।
- এসি চেয়ার কার (CC) — বেশিরভাগ আন্তঃনগর ট্রেনে পাওয়া যায়, এবং এটি আরামদায়ক, তবে এর আসন এগজিকিউটিভ চেয়ার কারের মতো প্রশস্ত নয়। যতটা সম্ভব এই শ্রেণির কামরায় ভ্রমণ করা উচিত, কারণ সেকেন্ড সিটার কামরায় যথেষ্ট ভিড় থাকে, সাধারণত ব্যস্ত রুটে।
- সেকেন্ড সিটার (2S) — বেশিরভাগ আন্তঃনগর ট্রেনে পাওয়া যায়, এবং এতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ নেই। আসনগুলি আরামদায়ক, কিন্তু বাইরের রোদ ও ধুলোর জন্য গরমে এতে করে ভ্রমণ করা অস্বস্তিকর। এছাড়া এটি সাধারণত "জেনারেল" টিকিটধারী যাত্রীরা ব্যবহার করেন এবং ট্রেন টিকিট এগজামিনারকে (টিটিই) জরিমানা (সাধারণত ₹২০) দিয়ে আসনগুলি ব্যবহার করেন। এখানে খুব ভাল সম্ভবনা আছে যে আপনি ৩ জনের জন্য বরাদ্দ আসনে ৪ জন লোকদের সঙ্গে আসন ভাগ করেছেন। এছাড়া, অনলাইনে টিকিট কাটার সময় যদি আপনি অনেকগুলি ফাঁকা আসন দেখতে পান, তাহলে আপনি ফাঁকা কামরা আশা করবেন না।
অন্যান্য শ্রেণি
সম্পাদনা- অসংরক্ষিত (UR) বা জেনারেল (GEN) — এই কামরায় আরামদায়ক আসন আছে কিন্তু কামরাটি আসনের ধারে ও মাল রাখার জায়গায় বসা লোকেদের ভিড়ে জমজমাট হয়ে যায়। এতে ভ্রমণ করা সাধারণত উপযুক্ত নয়, এমনকি স্বল্প দূরত্বের জন্যও নয়।
- মহিলা — আপনি যদি একক মহিলা হন, তাহলে আরামদায়ক এবং সম্ভবত কম জমজমাট ভ্রমণের জন্য আপনি "মহিলা" (কিংবা ইংরেজিতে Ladies বা Men Not Allowed) নামক কামরা খুঁজুন। পুরুষেরা এই কামরায় প্রবেশ করবেন না, এমনকি পরিবার হিসেবে, কারণ একে কেউ ভালভাবে মেনে নেবেন না।
- প্রতিবন্ধীদের জন্য বা দিব্যঙ্গজন — এটি ট্রেনের উভয়প্রান্তে পাওয়া যায় এবং এটি কেবল প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত।
মুল্য
সম্পাদনাট্রেন ও মূল্যের বিবরণের জন্য আইআরসিটিসি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। এছাড়া (এবং বিশেষ করে আপনার কোনো অ্যাকাউন্ট না থাকলে) আপনি ভারতীয় রেলের Fare Enquiry অনুচ্ছেদে আপনি ট্রেন, মূল্যের বিবরণ ও টিকিটের উপস্থিতি সম্বন্ধে জানতে পারেন।
বিভিন্ন ধরনের ট্রেন ও শ্রেণি থাকার সত্ত্বেও মূল্য ব্যবস্থাটি কিছুটা যুক্তিসঙ্গত।
- বন্দে ভারত, শতাব্দী, রাজধানী, জন শতাব্দী ও গরিব রথ এক্সপ্রেস ট্রেনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্য ব্যবস্থা বর্তমান। বিভিন্ন ক্যাটারিং মূল্যের জন্য একমুখী মূল্য বিপরীত মূল্যের থেকে কিছুটা কমবেশি হবে।
মূল্যের ভিত্তিতে পাঁচ রকম ট্রেন বর্তমান:
- প্যাসেঞ্জার — ধীরগতির ট্রেন যা সমস্ত স্টেশনে থামে।
- ফাস্ট প্যাসেঞ্জার — যাত্রীবাহী ট্রেন যা ছোট স্টেশনে থামে না এবং ভাড়া একই।
- এক্সপ্রেস ও মেল — কেবল প্রধান স্টেশনে থামে এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেনের থেকে বেশি ভাড়া আদায় করে।
- সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস — কিছু প্রধান স্টেশনে থামে না এবং এক্সপ্রেস ও মেল ট্রেনের থেকেও বেশি ভাড়া আদায় করে।
- রাজধানী, শতাব্দী ও বন্দে ভারত এক্সপ্রেস — এগুলি এলিট ট্রেন এবং এদের সমস্ত কামরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এগুলি কেবল কিছু নির্দিষ্ট স্টেশনে থামে। এর ভাড়া অত্যন্ত বেশি কারণ এতে সমস্ত আহার অন্তর্গত।
টিকিট ব্যবস্থা
সম্পাদনাঅনলাইনে বা রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে টিকিট কাটা যায়। অনলাইনে টিকিট কাটলে টিকিটকে তৎক্ষণাৎ প্রিন্ট করা যায় বা আপনাকে মেইলে পাঠানো হয়। টিকিটের উপস্থিতি আপনি কখন ভ্রমণ করছেন, কত আগে আপনি টিকিট কাটছেন এবং কোন শ্রেণিতে আপনি ভ্রমণ করবেন, এইসবের উপর নির্ভর করে। ব্যস্ত রুট ও তারিখে আপনি ওয়েটিং লিস্টে চলে যাবেন এবং অন্যের টিকিট বাতিল হলেই আপনি ট্রেন পাবেন, নাহলে আপনাকে অস্বস্তিকর জেনারেল কামরায় ভ্রমণ করতে হবে।
অসংরক্ষিত বা জেনারেল বাদে উপরে উল্লেখিত যেকোনো শ্রেণিতে ভ্রমণের জন্য আপনাকে আগে থেকে টিকিট সংরক্ষণ করতে হবে। আপনি দুরকম ভাবে টিকিট কাটতে পারবেন, ই-টিকিটিং ও কাউন্টার বুকিং।
অনিশ্চিত সংরক্ষণ
সম্পাদনাকোনো নিশ্চিত বা কনফার্মড (CNF) টিকিট না পেলে আপনাকে ওয়েটলিস্টেড (WL) বা রিজার্ভেশন এগেনস্ট ক্যান্সেলেশন (RAC) অবস্থা দেওয়া হবে। আগে থেকে টিকিট কাটা থাকলে সময়ের ধারা অনুযায়ী আপনার অবস্থা WL থেকে RAC, এমনকি CNF অবস্থায় চলে যাবে, কারণ অন্যরা টিকিট বাতিল করতে পারেন, সুতরাং নিয়মিত আপনার অবস্থা যাচাই করা এবং আপনার পরিকল্পনাকে গতিময় করা ভাল। আপনি যেকোনো সময় আপনার টিকিটের অবস্থা যাচাই করার জন্য বা টিকিটের উপরে ডানদিকে লেখা ১০ অঙ্কের প্যাসেঞ্জার নেম রেকর্ড (PNR) বা পিএনআর সংখ্যা ব্যবহার করুন। পিএনআর হচ্ছে ভারতীয় রেলের কম্পিউটার সংরক্ষণ ব্যবস্থার (IR-CRS) ডেটাবেসের একটি রেকর্ড, যেখানে কোনো যাত্রী বা যাত্রীসমূহের ভ্রমণের বিবরণ সংরক্ষিত থাকে। সংখ্যাটি WL32/WL14 বা অনুরূপ হবে, যেখানে কাঠামোটি হচ্ছে WL (প্রাথমিক অবস্থান)/WL (বর্তমান অবস্থান)। আপনার পিএনআর অবস্থা যাচাই করার বিভিন্ন উপায় আছে যার মধ্যে জনপ্রিয় উপায়গুলি নিচে দেওয়া হয়েছে:
- ওয়েবসাইট থেকে। ভারতীয় রেল হচ্ছে অনলাইনে পিএনআর অবস্থা যাচাই করার জন্য সরকারি পোর্টাল।
- ১৩৯ নম্বরে ডায়াল করে।
- মোবাইল অ্যাপ থেকে।
- এসএমএস থেকে সংরক্ষণ অবস্থা যাচাই।
- আপনার নিকটতম রেলওয়ে স্টেশনের "অনুসন্ধান" (Enquiry) বা "সহযোগ" (Sahyog) কাউন্টারে।
আপনার টিকিট ওয়েটলিস্টেড থাকলে আপনি কোনো সংরক্ষিত কামরায় প্রবেশ করতে পারবেন না (আপনি কেবল জেনারেল কামরায় সফর করতে পারবেন)। সংরক্ষিত কামরায় ওয়েটলিস্টেডদের টিকিটধারী হিসেবে ধরা হয় না এবং তাদের জরিমানা দেওয়া হয়। তবে আপনার কাছে RAC টিকিট থাকলে স্লিপার বা অন্যান্য শোয়ার কামরায় আপনাকে কেবল "বসার" জন্য বার্থ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আপনি এবং অপর RAC টিকিটধারী বার্থ ভাগাভাগি করবেন যাতে করে শোয়ার জায়গায় আপনারা বসে ভ্রমণ করতে পারেন। শেষ মুহূর্তে অন্যের টিকিট বাতিল ইত্যাদি কারণে ট্রেন টিকিট এগজামিনার (টিটিই) আপনার জন্য এক CNF শোয়ার বার্থের ব্যবস্থা করবেন। ট্রেন, রুট ও ঋতুভেদে ভ্রমণের শুরুতে বা মাঝে আপনার RAC টিকিট CNF-এ উন্নীত হতেও পারে, নাও হতে পারে। ট্রেন ছাড়ার আগে আপনার WL টিকিট উন্নীত না হলে আপনি টাকা ফেরতের আবেদন করতে পারেন, কিন্তু ট্রেন ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা আগে পর্যন্ত এটি করা সম্ভব (স্বল্প দূরত্বের জন্য ৩ ঘণ্টা, দূরপাল্লার জন্য ১২ ঘণ্টা)। অনলাইনে টিকিট কাটলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে WL টিকিটের টাকা ফেরত সম্ভব।
তৎকাল কোটা
সম্পাদনাসমস্ত সংরক্ষিত ট্রেন প্রস্থান তারিখের আগের দিনে তৎকাল (TK) নামক স্বল্প কোটার আসন রাখে। এইসব আসনের জন্য অতিরিক্ত খরচ আছে। অনলাইনে টিকিট কাটার সময়ও এই বিকল্পটি আছে। এই অতিরিক্ত কোটা (ট্রেনের ৪% আসন) থাকার সত্ত্বেও আপনার কাঙ্ক্ষিত ট্রেন পেতে অনেকসময় অসুবিধা হবে। আপনি তৎকাল টিকিট বাতিল করলে আপনি টাকা ফেরত পাবেন না। একইসঙ্গে কেবল চারটি তৎকাল টিকিট কাটা যায়। তৎকাল টিকিট কাটার সময় আইডি প্রমাণের প্রয়োজন।
পৌর রেল
সম্পাদনাভারতের বড় শহরে সাধারণত একাধিক স্টেশন বর্তমান। বেশিরভাগ ট্রেন কেবল একটি স্টেশনে থামবে, কিন্তু অন্যান্য ট্রেন, বিশেষ করে প্যাসেঞ্জার ও লোকাল ট্রেন, দুই বা তার অধিক স্টেশনে থামতে পারে।
শহরতলি রেল
সম্পাদনাশহরতলি রেল, যা অনেকসময় "লোকাল ট্রেন" নামে পরিচিত, সাধারণত শহরের মধ্যে পরিবহনের সবচেয়ে দ্রুত ও সস্তা মাধ্যম, তবে এতে প্রচুর ভিড় হতে পারে। এরা ভারতীয় রেলের একই ব্রডগেজ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এবং এক্সপ্রেস ট্রেনের থেকে কম গুরুত্ব পায়। যারা এধরনের ট্রেনের সঙ্গে অভ্যস্ত নন তাঁদের এইসব ট্রেনে না ভ্রমণ করা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, কারণ অন্যান্য নিত্যযাত্রীদের ভিড় ঠেলে ঠেলে সঠিক স্টেশনে ট্রেন থেকে নামা কিছুটা সমস্যজনক। কলকাতা, চেন্নাই, দিল্লি, পুণে, মুম্বই ও হায়দ্রাবাদে শহরতলি রেল পরিষেবা বর্তমান।
মেট্রো রেল ও মনোরেল
সম্পাদনাভারতের প্রধান মহানগরে দ্রুতগামী গণপরিবহন ব্যবস্থা বর্তমান, যা সাধারণত "মেট্রো" নামে পরিচিত। এদের নিজস্ব রেলপথ বর্তমান, যা ব্রডগেজ নেটওয়ার্ক থেকে সম্পূর্ণভাবে পৃথক। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, আহমেদাবাদ, কলকাতা, কানপুর, কোচি, গুরুগ্রাম, চেন্নাই, জয়পুর, নয়ডা, নাগপুর, পুণে, বেঙ্গালুরু, মুম্বই, লখনউ ও হায়দ্রাবাদে মেট্রো পরিষেবা বর্তমান। কলকাতা ব্যতীত অন্যান্য সমস্ত মেট্রো ব্যবস্থা ভারতীয় রেল দ্বারা পরিচালিত নয়। দিল্লি মেট্রো দেশের সবচেয়ে বড় মেট্রো ব্যবস্থা যা নিকটবর্তী কিছু শহরকে সংযুক্ত করে।
মেট্রো ছাড়াও মুম্বইয়ে ২০ কিমি দীর্ঘ মনোরেল পরিষেবা বর্তমান, যা ভারতের একমাত্র মনোরেল ব্যবস্থা। অন্যান্য শহরে মনোরেলের পরিকল্পনা থাকলেও মুম্বই মনোরেলের বিভিন্ন সমস্যার জন্য বেশিরভাগ মনোরেল পরিকল্পনা অন্যান্য পরিবহন প্রকল্পে রূপান্তর করা হয়েছে।
র্যাপিড রেল
সম্পাদনাসেমি-হাই-স্পিড আঞ্চলিক রেল, যা "র্যাপিড রেল" নামে জনপ্রিয়, কোনো বড় পৌর এলাকা ও নিকটবর্তী কোনো ছোট শহরের মধ্যে পরিচালিত হয়। মেট্রোর মতোই এদের নিজস্ব রেলপথ বর্তমান, যা ব্রডগেজ নেটওয়ার্ক থেকে সম্পূর্ণভাবে পৃথক। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, ভারতে কেবল একটি র্যাপিড রেল পরিষেবা বর্তমান যা গাজিয়াবাদ (দিল্লির কাছে) ও দুহাইয়ের মধ্যে পরিচালিত।
ট্রাম
সম্পাদনাআহার ও পানীয়
সম্পাদনাখাওয়া-দাওয়া ও রাত্রিযাপন ট্রেনের ধরন ও শ্রেণির উপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল। ভারতের রন্ধনশৈলী বৈচিত্র্যপূর্ণ, এবং যেহেতু স্টেশনে সাধারণত আহার প্রস্তুত হয়ে ট্রেনের মধ্যে পরিবেশন করা হয়, সেহেতু ভ্রমণের সময় আপনি সেখানকার স্থানীয় রন্ধনশৈলী উপভোগ করতে পারবেন। স্লিপার ও জেনারেলের মতো নিম্নশ্রেণির কামরায় হকাররা খাবার বিক্রি করে।
ভারতের প্রায় সমস্ত ট্রেনে আহারের সময় গরম খাবার দেওয়া হয়। এই খাবার সাধারণত রেলওয়ে স্টেশনের রান্নাঘরে প্রস্তুত করে হয় ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত প্যান্ট্রি কার কামরায় তুলে দেওয়া হয়, কিংবা ওয়েটারের মাধ্যমে যাত্রীদের খাদ্য পরিবেশন করা হয়। কিছু ট্রেনে সেখানকার প্যান্ট্রি কার কামরায় খাবার রান্না করা হয়।