পাকিস্তানের একটি প্রদেশ

এশিয়া> দক্ষিণ এশিয়া> পাকিস্তান> গিলগিট-বালতিস্তান

পৃথিবীর অন্যতম পর্বত শৃঙ্গ সুউচ্চ কে২।

গিলগিট-বালতিস্তান ( উর্দু: گلگت بلتستان )–যা আগে "উত্তরাঞ্চল" নামে পরিচিত ছিল– হলো পাকিস্তানের প্রশাসন নিয়ন্ত্রণাধীন সবচেয়ে উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, গিলগিট-বালতিস্তান একটি স্বশাসিত অঞ্চল এবং এটি পাকিস্তানের অংশ হলেও এখানকার বাসিন্দাদের পাকিস্তানের সংসদে কার্যত কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই।

এই অঞ্চলে চারটি প্রধান পর্বতমালা—কারাকোরাম, পামির, হিমালয় এবং হিন্দুকুশ—মিলিত হয়েছে। এটি পর্বতারোহী ট্রেকার ও পর্যটকদের জন্য একটি "পর্বত স্বর্গ" হিসেবে পরিচিত। এখানে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বতগুলির মধ্যে পাঁচটি অবস্থিত, যা ৮,০০০ মিটারের বেশি উঁচু এবং আরও অনেক পর্বত ৭,০০০ মিটারের ওপরে। তুলনা করলে, পশ্চিম ইউরোপ অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও অংশেই ৫,০০০ মিটারের বেশি উঁচু কোন পর্বত নেই। কারণ রাশিয়া বা উত্তর আমেরিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গও ৬,২৫০ মিটারের বেশি নয়; আন্দিজ পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ প্রায় ৭,০০০ মিটারের একটু নিচে অবস্থিত।

গিলগিট-বালতিস্তান প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিশাল সমাহারে সমৃদ্ধ। এখানকার অপূর্ব উপত্যকা, সমতল ভূমি, সুউচ্চ শৃঙ্গ ও ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো সারা বিশ্বের পর্যটকদের আকর্ষণ করে। পৃথিবীর অন্যতম উচ্চ শৃঙ্গ কে২ এই অঞ্চলে অবস্থিত। বালতোরো হিমবাহ এবং গডউইন-অস্টেন হিমবাহের সংযোগস্থল কনকর্ডিয়া এবং কারাকোরাম পর্বতমালার বালতোরো মুজতাগ শাখা পর্বতারোহী ও ট্রেকারদের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় গন্তব্য।

মানচিত্র
গিলগিট-বালতিস্তানের মানচিত্র

গিলগিট-বালতিস্তানে তিনটি বড় ও প্রত্যন্ত প্রশাসনিক বিভাগ রয়েছে।

 বালতিস্তান
 দিয়ামির
 গিলগিট

শহর এবং প্রধান অঞ্চল

সম্পাদনা
  • 1 গিলগিট- অঞ্চলটির রাজধানী।
  • 2 স্কার্দু - গিলগিট-বালতিস্তানের বৃহত্তম শহর।
  • 3 নাগর- বিশ্বের ২৭তম সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এবং হিমবাহ, দুর্গ, জাদুঘর ও রিসোর্ট সমৃদ্ধ অঞ্চল।
  • 4 হুনজা উপত্যকা- চীনে প্রবেশের আগে কারাকোরাম হাইওয়ের ধারে অবস্থিত।
  • 5 গিজার জেলা- কোয়ো জোম, বৃহত্তম হিন্দু রাজ পর্বত এর অন্তর্ভুক্ত।

অন্যান্য গন্তব্য

সম্পাদনা
  • 6 দেওসাই জাতীয় উদ্যান
  • পরিদের মাঠ: এটি হল একটি বিন্দু, যেখানে তিনটি বিখ্যাত পর্বতশ্রেণী মিলিত হয়-হিমালয়, হিন্দুকুশ ও কারাকোরাম
  • 7 খুনজেরাব জাতীয় উদ্যান: খুঞ্জেরাব পাসের চারপাশের একটি পার্ক, যেখানে কারাকোরাম হাইওয়ে পাকিস্তান-চীন সীমান্ত অতিক্রম করে।
  • 8 পুনিয়াল উপত্যকা: শের কিল্লা সুরম্য পুনিয়াল উপত্যকার প্রধান গ্রাম। এলাকাভেদে সবচেয়ে বড় গ্রামগুলোর একটি হল হাতুন।
  • 9 রামা হ্রদ: ৮১২৬ মিটার উঁচু নাঙ্গা পর্বতের পূর্ব দিকের একটি বিস্ময়কর দৃশ্য এখানে দেখা যায়। অভিযান-প্রেমী পর্যটক, হাইকার, মৎস্য শিকারি, শিল্প-প্রেমী, পর্বতারোহী বা পোলো উত্সাহীদের জন্য পৃথিবীতে এমন কয়েকটি জায়গা রয়েছে, যার সাথে একমাত্র গিলগিটের তুলনা হতে পারে।
  • শিলা খোদাই: প্রায় খ্রিস্টীয় ৮ম শতাব্দীতে নির্মিত ছোট বৌদ্ধসত্ত্ব দ্বারা বেষ্টিত একটি বিশাল বুদ্ধমূর্তি। স্কার্দু-সাদপাড়া রোডের সাদপাড়া নল্লার জুড়ে স্কার্দু থেকে তিন কিলোমিটার দূরে একটি পাথরে খোদাই করা হয়েছে। কচুরা হ্রদের ধারে পাথরের উপর প্রাক-ঐতিহাসিক পুরুষ ও প্রাণীর মূর্তি খোদাই করা আছে। কিছু শিলা খোদাই এবং পারকুটা ( মেহেদি আবাদ) নালার কাছে একটি মঠের একটি চিত্রও পাওয়া যায়।
  • সিঙ্গাল পুনিয়াল উপত্যকার এই স্থানটি আদর্শ ট্রাউট মাছ ধরার সুযোগ দেয়।
  • 10 খারমাং

অনুধাবন

সম্পাদনা
নাগর উপত্যকায় রাকাপোশি।

গিলগিট বর্তমান অঞ্চলটির প্রশাসনিক কেন্দ্র, যা সিল্ক রোডের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল এবং যার মাধ্যমে বৌদ্ধধর্ম ভারত থেকে এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। এখানে প্রচুর সংস্কৃত বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ পাওয়া যায়, যার মধ্যে হৃদয় সূত্রের দীর্ঘ সংস্করণ উল্লেখযোগ্য। দার্দস এবং সিজিনাস নামে পরিচিত দুই প্রাচীন জাতি পৌরাণিক তালিকায় উল্লেখিত হয়েছে এবং পটলেমির লেখা থেকেও দার্দসদের সম্পর্কে জানা যায়। বিখ্যাত দুই পর্যটক ফা হিয়েন ও হ্সুয়ান সাং ভ্রমণকাহিনীতে গিলগিটের পথ পাড়ি দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে পুরনো রেশম পথের সেই পথটি কারাকোরাম মহাসড়ক (KKH) হিসেবে পরিচিত।

গিলগিট শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ত্রাকানে রাজবংশ কর্তৃক শাসিত হয়েছিল, যা প্রায় ১৮১০ সালে শেষ হয়। এরপর অঞ্চলটি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে পতিত হয়েছে এবং ১৮৪২ সালে শিখরা অঞ্চলটি দখল করে। ১৮৪৬ সালে এটি জম্মুর অধীনে চলে যায়। গিলগিটের অধিবাসীরা ১৮৫২ সালে বিদ্রোহ করে নতুন শাসকদের তাড়িয়ে দেয়। ইয়াসিন এবং গুলাপুরের খুশওয়াখতে রাজবংশ গিলগিটের জনগণকে নেতৃত্ব দিয়ে ডোগরা শাসকদের বিতাড়িত করে। কিন্তু পরে চিত্রালের কাতুর রাজবংশ ইয়াসিনকে বিজিত করলে খুশওয়াখতেদের ক্ষমতা ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর ১৮৬০ সালে জম্মুর শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৮৯ সালে গিলগিট ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে আসে এবং এটি হুনজা ও নগরসহ গিলগিট এজেন্সির অধীনে একীভূত হয়। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পরে গিলগিটকে সাময়িকভাবে জম্মু ও কাশ্মীরের মহারাজার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু খুব দ্রুতই এটি পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। আজ পর্যন্তও, গিলগিট-বালতিস্তান কাশ্মীর বিরোধের অংশ হিসেবে রয়ে গেছে এবং ভারত একে পাকিস্তান-অধিকৃত লাদাখের একটি অংশ বলে দাবি করে।

গিলগিট-বালতিস্তানের অধিকাংশ মানুষই চায় যে, তাদের অঞ্চলটি পাকিস্তানের একটি পৃথক প্রদেশ হিসেবে স্বীকৃত হোক এবং কাশ্মীরের সাথে যুক্ত না করা হোক। তবে পাকিস্তান সরকার কাশ্মীর বিরোধে তাদের কৌশলগত অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে আশঙ্কায় তা করতে রাজি হয়নি। তবে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে পাকিস্তান সরকার অঞ্চলটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রদেশে রূপান্তর করার উদ্যোগ নেয় বলে মনে হয়। এই উদ্যোগ কতদূর যাবে তা স্পষ্ট নয়; তবে এটি ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক আরও খারাপ করতে পারে এবং কাশ্মীর অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে; কারণ অনেক কাশ্মীরি জাতীয়তাবাদী এবং স্বাধীনতাপন্থীরা গিলগিট-বালতিস্তানকে কাশ্মীরের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে।

গিলগিট-বালতিস্তানের আয়তন ৭২,৯৭১ বর্গ কি. মি. (২৮,১৭৪ বর্গমাইল) এবং এটি অত্যন্ত পার্বত্য এলাকা।

উর্দু হল পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা; সে হিসেবে ভাষাটি গিলগিট-বালতিস্তানসহ সমগ্র পাকিস্তানে কথ্য ভাষা হিসেবে প্রচলিত। স্থানীয় ভাষাগুলো হল শিনা, বাল্টি, খোয়ার, ওয়াখি এবং বুরুশাস্কি। পাকিস্তানের অন্যান্য জায়গার মতো, এখানকার শিক্ষিত শ্রেণী এবং পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িতদের মধ্যে ইংরেজি মোটামুটিভাবে ব্যবহৃত হয়।অন্যান্য ভাষার মধ্যে রয়েছে ইশকাশিমি, পুরগি, দোমাকি, পশতু, কিরগিজ, লুনেচি, ব্রোকস্কাত, লাদাখি, উইঘুর, শুগনি,, সারিকোলি, উজবেক, মুঞ্জি, তুর্কমেন ও চাংথাং।

প্রবেশ

সম্পাদনা

বিমানে

সম্পাদনা

পাকিস্তান আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থা (PIA) প্রতিদিন ইসলামাবাদ থেকে গিলগিত পর্যন্ত বোয়িং ৭৩৭ দিয়ে বিমান পরিচালনা করে। যাত্রার সময় প্রায় ৫০ মিনিট এবং তা বিশ্বের অন্যতম সুন্দর ভ্রমণ হিসেবে বিবেচিত হয়; কারণ রুটটি নাঙ্গা পর্বতের ওপর দিয়ে যায় এবং এই পর্বতটি বিমানটির উড়ন্ত উচ্চতার চেয়েও উঁচু। লাহোরইসলামাবাদ থেকে গিলগিতস্কার্দু (KDU  আইএটিএ ) পর্যন্তও বিমান চলাচল রয়েছে। তবে, এসব ফ্লাইট সম্পূর্ণভাবে আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল এবং শীতকালে প্রায়শই ফ্লাইট কয়েকদিনের জন্য বিলম্বিত হয়। ফ্লাইট বাতিল হলে সাধারণত তা পরের দিন ছেড়ে যায। তাই অনেক সময় সড়কপথে যাওয়া বেশি দ্রুত ও নিশ্চিত হতে পারে।

সড়কপথে

সম্পাদনা
পাকিস্তান-চীন সীমান্ত।

কারাকোরাম হাইওয়ে, যা একদা রেশম পথের একটি অংশ ছিল–ইসলামাবাদকে গিলগিতস্কার্দুর সঙ্গে সংযুক্ত করে। গিলগিত ও স্কার্দু পাকিস্তানি উত্তরাঞ্চলে পর্বতারোহণ অভিযানের দুটি প্রধান কেন্দ্র।

ইসলামাবাদ থেকে গিলগিত পর্যন্ত বাস ভ্রমণের সময় প্রায় ২০-২৪ ঘণ্টা; খরচ হয় ৩,০২০ থেকে ৪,১৮০ রুপি এবং বাসগুলি রাওয়ালপিন্ডি পিরওধাই বাস টার্মিনাল থেকে দিনে ৩ বার ছাড়ে। ইসলামাবাদ/রাওয়ালপিন্ডি থেকে গিলগিত পর্যন্ত সরকারি বাস পরিষেবা ন্যাটকো (NATCO: নর্দার্ন এরিয়াজ ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন) পরিচালনা করে, যা বিদেশি যাত্রীদেরও বহন করে। ন্যাটকো বাসে ভ্রমণ করা বিদেশি যাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হয় যে, হাইওয়ের প্রতিটি পুলিশ চেকপয়েন্টে দেখানোর জন্য বাস চালককে দেওয়ার জন্য ১০টি পাসপোর্ট কপি সঙ্গে রাখবেন।

কারাকোরাম মহাসড়কে প্রায়শই ভূমিধস ঘটে। তবে বুলডোজার দিয়ে সাধারণত অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়। এ মহাসড়কটি গিলগিতকে সস্ট (সীমান্তের পাকিস্তানের দিকে শুল্ক এবং স্বাস্থ্য পরিদর্শন কেন্দ্র) ও খুঞ্জিরাব পাসের মাধ্যমে চীনের চিনচিয়াং প্রদেশের তাশকোর্গান ও কাশগরের সাথে সংযুক্ত করে, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ পাকা আন্তর্জাতিক সীমান্ত পারাপার (১৫,৩৯৭ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত)।

আপনি যদি একটি দল নিয়ে ভ্রমণ করেন; তাহলে ইসলামাবাদ বিমানবন্দর থেকে একটি ভ্যান বা গাড়ি ভাড়া নিতে পারেন অথবা শহরের কেন্দ্রীয় বাজার থেকে গাড়ি ভাড়া করতে পারেন।

শীতকালে এই অঞ্চলে ভ্রমণ বিপজ্জনক হতে পারে।কারণ ভূমিধস ও তুষারপাত প্রায়শই রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে আপনাকে কয়েক সপ্তাহ বা এমনকি কয়েক মাসও আটকে থাকতে হতে পারে।

ঘোরাঘুরি

সম্পাদনা

ন্যাটকো ( NATCO: নর্দার্ন এরিয়াজ ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন), সিল্ক রুট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন এবং অন্যান্য পরিবহন সংস্থাগুলি বাস ও জিপ পরিষেবা সরবরাহ করে থাকে। এই পরিষেবাগুলি গিলগিত-বালতিস্তানের দুটি প্রধান শহর এবং আশেপাশের জনপ্রিয় পর্যটন স্থান, হ্রদ ও হিমবাহের দিকে চলাচল করে।

গাড়ি/মোটরবাইকে

সম্পাদনা

আপনি চাইলে গাড়ি ভাড়া নিতে পারেন। আর যারা আরও রোমাঞ্চপ্রিয় তারা মোটরবাইক ব্যবহার করে ভ্রমণ করতে পারেন। তবে রাস্তাগুলোর অবস্থা এবং নিরাপত্তা সম্পর্কে আগে থেকেই ভালোভাবে জেনে নিন এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস মাথায় রাখুন। তবে গিলগিট-বালতিস্তানের বেশিরভাগ রাস্তায় পেট্রোল পাওয়া যায় এবং মোটরবাইক সারানোর দোকানও সহজেই পাওয়া যায়, সেই সাথে খরচও কম।

দর্শনীয়

সম্পাদনা
নাঙ্গা পর্বত।

গিলগিট-বালতিস্তান হল বিশ্বের উচ্চতম পর্বতগুলির একটির আবাসস্থল। এখানে এসব পর্বতে অবিশ্বাস্য ট্রেকিংয়ের সুযোগ রয়েছে। প্রায় ৫০০ কিমি প্রস্থ এবং ৩৫০ কিমি গভীরতায় ৬,০০০ মিটারের উপরে ৭০০ এর বেশি চূড়া এবং ৭০০০ মিটারের উপরে ১৬০টিরও বেশি চূড়া রয়েছে। কে২-এর উচ্চতা কম হওয়া সত্ত্বেও মাউন্ট এভারেস্টের তুলনায় এখানে আরোহণ করা প্রযুক্তিগতভাবে অধিক চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করা হয়।

পাহাড়

সম্পাদনা
রাকাপোশি পর্বতমালা।
নামহীন টাওয়ার, যা ব্যঙ্গাত্মকভাবে এই শৃঙ্গের নাম।
  • বিশ্বের পঞ্চাশটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গের মধ্যে আঠারোটিই গিলগিট-বালতিস্তানে অবস্থিত। তাদের পদমর্যাদার সাথে নিচে উল্লেখ করা হল:
  • 11 কে২ (মাউন্ট গডউইন-অস্টেন ): উচ্চতায় ২য়; ৮,৬১১মিটার।
  • 12 নাঙ্গা পর্বত : ৯ম; ৮,১২৫ মি (২৮,২৫০ ফুট)
  • 13 গাশারব্রুম ১: ১১তম; ৮,৮০৮ মিটার।
  • 14 ব্রড পিক: ১২তম; ৮,০৪৭ মিটার।
  • 15 গাশারব্রুম ২: ১৩তম; ৮,০৩৫ মিটার।
  • 16 গাশারব্রুম ৩: ১৫ তম; ৭,৯৪৬ মিটার।
  • 17 গাশারব্রুম ৪, ১৭তম; ৭,৯৩২ মিটার।
  • 1 দিস্তাগিল সার (Q782496): ১৯তম; ৭,৮৮৪ মিটার।
  • 2 খুনিয়াং চিশ (Q1480438), ২১তম; ৭৮২৩ মিটার।
  • 3 মাশেরব্রুম (Q854295), ২২তম; ৭,৮২১ মিটার।
  • 4 বাটুরা সার (Q811064), ২৫তম; ৭,৭৯৫ মিটার।
  • 18 কানজুত সার, ২৬তম; ৭,৭৮৮ মিটার।
  • 19 রাকাপোশি: ২৭তম; ৭,৭৬০ মিটার।
  • 20 সালতোরো কাংরি: ৩১তম; ৭,৭৪২ মিটার।
  • 5 চেগোলিসা (Q1061065); ৩৬তম; ৭,৪৯৮ মিটার।
  • 6 সিসপেয়ার (Q1550815); ৩৮তম; ৭,৬১১ মিটার।
  • 21 ট্রিভর, ৩৯তম; ৭,৫৭৭ মিটার।
  • 7 স্কিয়াং কাংরি (Q864756): ৪৪তম; ৭,৫৪৫ মিটার।

এদের তুলনা হিসেবে পশ্চিম ইউরোপের সবচেয়ে উঁচু পর্বত মন্ট ব্ল্যাঙ্ক ( যা ৫,০০০ মিটারেরও কম) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বিন্দু মাউন্ট হুইটনিন ( যা ৪,৫০০ মিটারেরও কম) উল্লখ করা যেতে পারে। এই অঞ্চলে আক্ষরিক অর্থেই এই দুটির যেকোনটির চেয়ে কয়েক গুণ উচ্চ শিখর রয়েছে।

এছাড়া অন্যান্য পর্বতও রয়েছে। যেমন; 22 নামহীন টাওয়ার

হিমবাহ

সম্পাদনা

মেরু অঞ্চলের বাইরে বিশ্বের ৭টি দীর্ঘতম হিমবাহের ৩টি গিলগিট-বালতিস্তানে রয়েছে: বিয়াফো হিমবাহ, বাল্টোরো হিমবাহ এবং বাতুরা হিমবাহ

সিয়াচেন হিমবাহের দৈর্ঘ্য ৭৫ কিমি। হিসপার হিমবাহ (৫৩ কিমি) বিয়াফো হিমবাহের সঙ্গে হিসপার লা-তে (৫১৫৪.১৬ মিটার বা ১৬,৯১০ ফুট) মিলিত হয়ে প্রায় ১১৬.৮৭ কিমি (৭২ মাইল) দীর্ঘ একটি বরফ করিডোর তৈরি করে। বাটুরা হিমবাহের দৈর্ঘ্যও ৫৮ কিমি। এই বরফের নদীগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ৬২ কিমি দীর্ঘ বালতোরো হিমবাহ, যা প্রায় ৩০টি শাখা নদী দ্বারা পরিপূর্ণ এবং এই বৃহৎ হিমবাহটির মোট আয়তন ১২৯১.৩৯ বর্গকিমি।

মনোরম কচুরা হ্রদ।

গিলগিট-বালতিস্তানে বেশ কয়েকটি উচ্চ-উচ্চতার হ্রদ রয়েছে।

  • 23 শেওসার হ্রদ: দেওসাই সমভূমিতে।
  • 24 সাতপাড়া হ্রদ স্কারদুতে।​
  • স্কারদুর কাচুরা লেক।
  • 25 বোরিথ উচ্চ হুনজায়।
  • 26 অ্যাটোবাদ হ্রদ উচ্চ হুনজায়।
  • 27 রামা হ্রদ আস্টোরের কাছে।
  • 28 রাশ হ্রদ নগরের কাছে।
  • ক্রোম্বার পাসের ক্রোমবার হ্রদ
  • খাপলুতে ডাহলি হ্রদ
  • খাপলুতে ঘেঁছে হ্রদ
  • খাপলুতে রখুলং হ্রদ
  • 8 কাপ্লু দূর্গ একসময় প্রসাদ ছিল। বর্তমান এটি একটি হোটেল। (Q14655881)
  • 9 শিগার দূর্গ শিগার শহরে অবস্থিত। এটিও বর্তমান একটি হোটেল।
  • 10 বালতিত দূর্গ করিমাবাদ শহরে অবস্থিত। এখন এটি একটি জাদুঘর। (Q1247039)
  • অন্দ্ররা দূর্গ

করণীয়

সম্পাদনা
  • কারাকোরাম আকাশ ভ্রমণ (এয়ার সাফারি): হল পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থা (PIA) দ্বারা ইসলামাবাদ থেকে শুরু হওয়া সবচেয়ে সুন্দর এক বিমান যাত্রা এবং এই যাত্রায় বিমানটি কারাকোরাম পর্বতমালার উপর দিয়ে উড়ে যায়। এই যাত্রায় আপনি কারাকোরাম পর্বতশ্রেণীর মনোরম দৃশ্য দেখতে পারবেন।
  • পর্বতারোহণ, ট্রেকিং ও হাইকিং: এলাকাটি এসব কর্মকাণ্ডের জন্য আদর্শ। জনপ্রিয় ট্রেকগুলির মধ্যে কে২ বেস ক্যাম্প ট্রেক অন্যতম। তবে সীমিত অথবা সংরক্ষিত অঞ্চলে পর্বতারোহণ এবং ট্রেকিং করতে পাকিস্তানের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি প্রয়োজন হবে। এর জন্যে অনুমতি পেতে যোগাযোগ করতে পারেন: পাকিস্তান স্পোর্টস কমপ্লেক্স, কাশ্মির রোড, আবপারা, ইসলামাবাদ +৯২৫১৯২০৩৫০৯ এই নাম্বারে টেলিফোনে যোগাযোগ করা যাবে
  • মাছ ধরা : স্কারদু থেকে সাতপাড়া হ্রদ ( ৮ কিমি) ও কচুরা হ্রদে প্রচুর ট্রাউট মাছ পাওয়া যায়। গিলগিটস্কারদুতে মৎস্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক মাছ ধরার জন্য অনুমতিপত্র জারি করা হয়।
  • উদ্ভিদ ও প্রাণীজগৎ: এই এলাকায় গোলাপ, লিলি, প্যানসি, উইলো, পাইনও ফার গাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আপেল, এপ্রিকট, পিচ, প্লাম, তুঁত, আখরোট এবং আঙুর পাওয়া যায়। অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত বাদাম পাওয়া যায়
  • বন্যপ্রাণী: বালতিস্তান অঞ্চলের বন্যপ্রাণীর মধ্যে মার্কহোর, আইবেক্স, তুষার চিতা এবং পাখির মধ্যে চকর, তিতির ও হাঁস উল্লেখযোগ্য। যদিও এসবের অধিকাংশ প্রাণী ও পাখি সংরক্ষিত; তবুও সীমিত পরিসরে শিকার করার অনুমতি রয়েছে। শিকারের অনুমতি স্থানীয় প্রশাসন থেকে নেওয়া যায়।
  • বাইকিং: এই এলাকায় বাইকিং খুব জনপ্রিয় এবং আপনি চাইলে বিভিন্ন সুন্দর পথে বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারেন।
  • ইকো ট্যুর: এলাকার বিভিন্ন জাতীয় উদ্যানে ইকো ট্যুর পরিচালনা করা হয়, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি দারুণ সুযোগ।
  • স্কিইং: শীতকালে এখানে স্কিইং করার সুযোগ রয়েছে। পর্বতের তুষারাবৃত ঢালে স্কিইং করা এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা।
  • পোলো: শানদুর পোলো উৎসব একটি ঐতিহ্যবাহী পোলো প্রতিযোগিতা, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতায় আয়োজিত হয়। এই উৎসবের সময় আপনি স্থানীয় পোলো ম্যাচ এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম উপভোগ করতে পারবেন।

কেনাকাটা

সম্পাদনা

গিলগিট-বালতিস্তানে খুব কম ব্যাঙ্ক ও এটিএম টাকা তোলার জন্য বিদেশী ব্যাঙ্ক কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করে। একজন পরিদর্শনকারী বিদেশী হিসাবে গিলগিট -বালতিস্তানে আপনার পুরো যাত্রার জন্য পর্যাপ্ত নগদ অর্থ নিয়ে আসা অথবা গিলগিটের আলফালাহ ব্যাঙ্ক শাখায় এটিএম ব্যবহার করা আপনার সর্বোত্তম উপায় হবে, যা কখনও কখনও বিদেশী কার্ড থেকে টাকা উত্তোলনের সেবাও প্রদান করে।

অধিকাংশ হোটেলে রেস্টুরেন্ট আছে।

  • ক্যাফে ডি হুনজা: এটি হুনজা ভ্যালির করিমাবাদ শহরের একটি ছোট কিন্তু আরামদায়ক ক্যাফে। এখানে বিভিন্ন স্থানীয় খাবার, কফি ও প্যানকেক (রুটি) পাওয়া যায়। ক্যাফেটির নিজস্ব একটি ছোট লাইব্রেরি আছে, যেখানে মানচিত্র ও ভ্রমণ সম্পর্কিত বই ও ম্যাগাজিন রয়েছে।
  • হুনজা কুইজিন: এটি করিমাবাদের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত এবং হুনজার সকল ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন করে।
  • বাল্টিত ফোর্ট ক্যাফে: হুনজা উপত্যকার বাল্টিত ফোর্টের একটি নতুন সংযোজন। অর্ডার অনুযায়ী স্থানীয়, পাকিস্তানি এবং মহাদেশীয় খাবার প্রস্তুত করা হয়।
  • প্যাগোডা রেস্তোরাঁ: এটি চমৎকার ও সুস্বাদ চীনা খাবার সরবরাহ করে। প্যাগোডা হানিমুন লেকের মাঝখানে একটি দ্বীপে অবস্থিত, যা একটি ছোট সেতু দ্বারা শাংরিলা রিসোর্টের সাথে সংযুক্ত।
  • লেক ভিউ রেস্তোরাঁ: এটি সাংগ্রিলা রিসোর্টের একটি মনোরম দৃশ্য দেখায় এবং এতে পাকিস্তানি ও মহাদেশীয় খাবার পাওয়া যায়।
  • তন্দুরি ভিলেজ: প্রাচীন পুরনো রেসিপির স্বাদ দেয়; যেমন চিকেন টিক্কা, শিখ কাবাব, মাটন টিক্কা, গ্রিল করা মাছ এবং ঘরে তৈরি তান্দুরি রুটি।
  • ক্যাফে ডিসি-3: এই ডিসি-৩ বিমানটির কোড নাম ছিল আলফা আলফা ফক্সট্রট ( এএএফ)। অনন্য এই ক্যাফেটি একটি পুরনো বিমানের ভেতরে অবস্থিত, যা একটি নদীর তীরে অবতরণ করেছিল এবং ১৯৫০ এর দশকে বর্তমান স্থানে আনা হয়। ক্যাফেটি বিভিন্ন ধরনের হালকা খাবার ও ক্যাবিন ক্রু আতিথেয়তা প্রদান করে।
  • চালট ট্যুরিস্ট ইন: এটি চাল নগরে অবস্থিত। এটি বিভিন্ন ধরণের হালকা খাবার এবং কেবিন ক্রু আতিথেয়তা প্রদান করে।
  • হাজি রমজান হোটেলটি গিলগিট শহরে অবস্থিত, যেখানে অর্ডার অনুযায়ী তাজা পাকিস্তানি খাবার প্রস্তুত করা হয়।

পানীয়

সম্পাদনা

বেশিরভাগ শীর্ষস্থানীয় হোটেলে বার রয়েছে।

কলের পানি পান করা এড়িয়ে চলুন। এখানে স্থানীয়রা সাধারণত স্রোতের পানি পান করে। কিন্তু যারা এতে অভ্যস্ত নয়, তাদের জন্য এটি অনিরাপদ হতে পারে। তাই শুধুমাত্র আপনার ফিল্টার করা, ফুটানো অথবা বোতলজাত পানি পান করুন, যা সর্বত্র পাওয়া যায়।

রাত্রিযাপন

সম্পাদনা

নিরাপদে থাকুন

সম্পাদনা

নিরাপত্তাগত দিক থেকে গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলটি পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণাধীন সবচে' নিরাপদ অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি হিসাবে গণ্য হয়। তবে এটির কিছু অংশ পর্যটকদের জন্য নিষিদ্ধ; বিশেষ করে "নিয়ন্ত্রণ রেখা" বরাবর বাফার জোন যা ভারত ও পাকিস্তানকে বিভক্ত করে এবং কাশ্মীরের পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কিছু অংশ। জেলা সদর হাসপাতালগুলি গিলগিট, স্কারদু, খাপলু (গাছে জেলা), চিলাস (দিয়ামির), গাযিনে (গাহকুচ) রয়েছে।

এখানে উচ্চতায় অসুস্থতা এবং সড়ক দুর্ঘটনা অনেক বড় সমস্যা। তাই সেসব বিবেচনা করুন এবং ভ্রমণের কয়েক সপ্তাহ আগে নিজেকে এর সাথে মানিয়ে নিন।

সম্মান

সম্পাদনা

কাশ্মীরে বসবাসকারী অনেক লোকের মতো লোকেরা বেশ কয়েকটি বিরোধী শিবিরে বিভক্ত; তাদের কেউ পূর্ণ স্বাধীনতা চায়; কেউ পাকিস্তানের সাথে একীভূত হতে চায় এবং কেউ যারা ভারতের সাথে একীভূত হতে চায়; তবে এমন লোকের সংখ্যা হাতেগোণা কয়েকজন এবং এসব কারণই গিলগিট-বাল্টিস্তানি রাজনীতিকে অবিশ্বাস্যভাবে জটিল করে তোলে।

এলাকাটিতে মোবাইল পরিষেবা পাওয়া যায়।

যেকোন জরুরী প্রয়োজনে ১১২২ এ কল করুন।

গিলগিট-বালতিস্তানে মাত্র একটি কার্যকর সেল ফোন নেটওয়ার্ক অপারেটর রয়েছে; তা হল SCO/ SCOM। একজন বিদেশী হিসাবে আপনি গিলগিটের SCO এর শাখা দোকানে অথবা অফিসে একটি কার্যকরী সিম কার্ড কিনতে পারেন। এই ধরনের একটি সিম কার্ড সক্রিয় করতে সাধারণত প্রায় ২৪ ঘন্টা সময় লাগে।

পরবর্তী ভ্রমণ

সম্পাদনা

সড়কপথে

সম্পাদনা

চীন: পূর্বে সপ্তাহে ৩ দিন বাস পরিষেবা গিলগিট থেকে চীনের কাশগড় পর্যন্ত সীমান্ত চালু ছিল এবং সে সময় কারাকোরাম মহাসড়কের ৬০০ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করার নির্মাণ কাজ চলছিল। দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় সাস্ট ও তাশকুরগানের মধ্যে প্রতিটি দিকে প্রতিদিন একটি করে বাস চালানোর পরিকল্পনাও ছিল।

ইসলামাবাদ: কারাকোরাম হাইওয়ে হয়ে, যা রেশম পথ নামে পরিচিত।

ভারত: শ্রীনগর-মুজাফফরাবাদ রুট ও ওয়াগা সীমান্ত আপনাকে ভারতে যাওয়ার অনুমতি দেবে, যখন স্কার্দু -কার্গিল রাস্তা বন্ধ থাকবে

বিমানে

সম্পাদনা

পাকিস্তান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনস গিলগিট ও স্কার্দু বিমানবন্দর ও ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দৈনিক বিমান পরিচালনা করে। এটির উড্ডয়ন সময় প্রায় ৫০ মিনিট। এই বিমানটি বিশ্বের সবচেয়ে মনোরম ফ্লাইটগুলির একটি; কারণ এর রুটটি নাঙ্গা পর্বতের উপর দিয়ে যায় এবং তখন পর্বতের চূড়াটি বিমানের উড্ডয়নের উচ্চতার চেয়েও বেশি হয়। পিআইএ স্কার্দু ও ইসলামাবাদের মধ্যে বোয়িং ৭৩৭-এ নিয়মিত বিমান পরিচালনা করে। যাহোক, সমস্ত ফ্লাইট আবহাওয়ার পরিচ্ছন্নতা সাপেক্ষে এবং শীতকালে বিমানগুলি প্রায় কয়েক দিন বিলম্বিত হয়।