মেসিডোনিয়ার তৃতীয় আলেকজান্ডার, যিনি আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট (মহান আলেকজান্ডার) নামেই বেশি পরিচিত, প্রাচীন গ্রিসে মেসিডোনিয়ার রাজা ছিলেন, যা আজ তিনটি দেশের মধ্যে বিভক্ত। তিনি ৩৩৬ খ্রিস্টপূর্বে মাত্র ২০ বছর বয়সে উত্তরাধিকারসূত্রে রাজ্যের অধিকার পান, এবং ৩০ বছর বয়সের মধ্যেই তিনি প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। তিনি গ্রিক নগর-রাষ্ট্রগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করেন, পার্শ্ববর্তী শত্রুদের পরাজিত করেন, মিশর অধিকার করেন, আকেরমেনীয় (প্রথম পারস্য) সাম্রাজ্য জয় করেন এবং ভারতীয় উপমহাদেশ আক্রমণ করেন। ৩২ বছর বয়সে তার মৃত্যু হওয়ায় তিনি দীর্ঘদিন সাম্রাজ্য শাসন করতে পারেননি, তবে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর সেনাপতিদের বংশধররা কয়েক শতাব্দী ধরে সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অংশ শাসন করেছেন।
যুদ্ধে কখনো পরাজিত হননি বলে, আলেকজান্ডার ইতিহাসের অন্যতম সফল এবং প্রভাবশালী সামরিক নেতা হিসেবে বিবেচিত হন। আজও অনেক সেনাবাহিনীতে সৈন্যদের প্রশিক্ষণে তাঁর কৌশলগুলো পড়ানো হয়।
জানুন
সম্পাদনা- আরও দেখুন: প্রাচীন গ্রীস, পারস্য সাম্রাজ্য, রোমান সাম্রাজ্য
বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আলেকজান্ডারের অধিকৃত অঞ্চল বিস্তৃত ছিল। আজকের দিনে তাঁর যাত্রাপথ অনুসরণ করার একটি প্রাথমিক ধারণা হতে পারে ১৯৭০-এর দশকের হিপ্পি ট্রেইল, যা স্থলপথে ইস্তানবুল থেকে দিল্লি পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে এই পথ সাধারণত গ্রিস এবং তাঁর অধিকৃত বিভিন্ন এলাকা বাদ দেয় যথা—লেভান্ট, মিশর, ইরাক এবং মধ্য এশিয়ায় পারস্য সাম্রাজ্যের উত্তরাঞ্চল। এছাড়াও এই পথ দিল্লি পর্যন্ত বিস্তৃত, যা তাঁর অধিকৃত উপমহাদেশের অংশের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সিল্ক রোড বরাবর বাণিজ্য আলেকজান্ডারের সময়ের পরে বেশ ভালভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, এবং তাঁর জয়কৃত অঞ্চলের অনেক অংশই এই পথের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আলেকজান্ডার অনেক শহর প্রতিষ্ঠা বা পুনরায় নামকরণ করেছিলেন; উইকিপিডিয়াতে তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর একটি তালিকা রয়েছে, এবং আমরা নীচে এর মধ্যে কিছু শহরের নাম উল্লেখ করেছি। বেশিরভাগ শহর সামরিক ক্ষেত্রে সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত ছিল, এবং অনেক শহরের প্রাথমিক বাসিন্দারা ছিলেন তাঁর সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সৈনিক।
গন্তব্যস্থল
সম্পাদনাআমরা নীচে অ্যালেকজান্ডারের যাত্রাপথ বরাবর কিছু উল্লেখযোগ্য স্থান তালিকাভুক্ত করেছি, তিনি যে ক্রমে পশ্চিম থেকে পূর্বে স্থানগুলি পরিদর্শন করেছিলেন সেই অনুযায়ী। যেসব স্থান শুধুমাত্র যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলোতে লাল চিহ্ন দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য স্থানে সবুজ চিহ্ন রয়েছে, যদিও সেই স্থানগুলির মধ্যেও অনেকগুলির জন্য যুদ্ধ হয়েছিল।
গ্রীস
সম্পাদনামেসিডোনিয়ার দ্বিতীয় ফিলিপ ছিলেন আলেকজান্ডারের পিতা। তাঁর মৈত্রীচুক্তি ও অধিকৃত অঞ্চলের সাথে আলেকজান্ডারের প্রথম দিকে অধিকৃত অঞ্চল মেসিডোনীয়দের সম্পূর্ণ গ্রীস এবং তার কাছাকাছি কিছু এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ দেয়:
- 1 পেলা। অ্যালেকজান্ডারের জন্মস্থান এবং মেসিডোনিয়ার রাজধানী। খ্রিস্টপূর্ব ১৬৮ সালে, রোমানরা এই অঞ্চল লুট করে এবং এখানকার কোষাগার রোমে পাঠানো হয়। বর্তমানে এটি একটি সমৃদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এবং এখানে একটি চমৎকার জাদুঘর রয়েছে।
- 1 চায়েরোনিয়া, বিওটিয়া। খ্রিস্টপূর্ব ৩৩৮ সালে, ফিলিপ এথেন্স এবং থিবস-এর সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে মেসিডোনীয়দের নেতৃত্ব দেন। আলেকজান্ডার এই সময় বাম্পক্ষের সৈন্যদের দায়িত্বে ছিলেন এবং তিনিই প্রথম, থিবসের এলিট পদাতিক বাহিনী, যা সেক্রেড ব্যান্ড নামে পরিচিত, তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।
খ্রিস্টপূর্ব ৩৩৬ সালে ফিলিপ তাঁর দেহরক্ষীর হাতে নিহত হন এবং আলেকজান্ডারকে রাজা ঘোষণা করা হয়। ফিলিপ "হেলেনিক লীগ" নামক একটি মৈত্রীজোট গড়ে তুলেছিলেন এবং এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন,যা পরবর্তীকালে গ্রীসের বেশিরভাগ অংশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল সেই পারসিয়ানদের আক্রমণ করার জন্য, যারা পূর্ববর্তী শতাব্দীতে গ্রীস আক্রমণ করেছিল এবং তখনও আনাতোলিয়ার (বর্তমানে এশিয়াটিক তুরস্ক) এমন অনেক এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছিল, যেখানে জনসংখ্যার বেশিরভাগই ছিল গ্রিক। ফিলিপের মৃত্যুর পর, অ্যালেকজান্ডার এর নেতা হিসেবে নিযুক্ত হন।
- 2 পেলিয়ন। খ্রিস্টপূর্ব ৩৩৫ সালে, অ্যালেকজান্ডার একটি ইলিরিয়ান জোটের বিরুদ্ধে পেলিয়নে অবরোধ শুরু করেন। মেসিডোনীয়রা ইলিরিয়ানদের পরাজিত করে এবং তাদের উত্তর সীমান্ত সুরক্ষিত করতে একটি নতুন আউটপোস্ট তৈরি করে। যদিও পেলিয়ন আধুনিক আলবেনিয়ায় অবস্থিত বলে জানা যায়, এর সঠিক অবস্থান জানা যায়নি।
- 2 থিবস। এটি সেই সময়ের কেন্দ্রীয় গ্রীসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নগর-রাষ্ট্র ছিল। যখন অ্যালেকজান্ডার ইলিরিয়ানদের সাথে যুদ্ধ করছিলেন, থিবস এবং হেলেনিক লীগের অন্যান্য শহরগুলি বিদ্রোহ করে। অ্যালেকজান্ডার থিবস দখল করে শহরটি ধ্বংস করেন; এর পরে, অন্যান্য মিত্রজোট আবার সহযোগিতা করতে শুরু করে। আধুনিক থিবস শহরটি খুব বড় বা আকর্ষণীয় নয়, তবে এতে একটি চমৎকার প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর রয়েছে।
ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল
সম্পাদনাগ্রীসে নিজের ভিত সুরক্ষিত করে এবং অনেক গ্রীক মিত্রজোট সঙ্গে নিয়ে, অ্যালেকজান্ডার পারসিয়ানদের অধীনস্থ ভূমধ্যসাগরীয় এলাকাগুলোর দিকে অগ্রসর হন:
- 3 গ্রানিকাস নদী। ফিলিপ পূর্বে আনাতোলিয়ায় একটি সৈন্যবাহিনী পাঠিয়েছিলেন, এবং সিংহাসনে আরোহণের কিছুদিন পরেই, আলেকজান্ডার তাদের সঙ্গে যোগ দেন এবং অতিরিক্ত সেনাবাহিনী নিয়ে আসেন। পারসিয়ানরা প্রাচীন ট্রয় শহরের কাছাকাছি তাঁকে থামানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়।
- 3 গর্ডিয়ন (মধ্য আনাতোলিয়া)। এই শহর ছিল ফ্রিজিয়ার রাজধানী, যা একসময় একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল এবং আনাতোলিয়ার বেশিরভাগ অংশ শাসন করত, কিন্তু অ্যালেকজান্ডারের সময় ফ্রিজিয়া পারসিয়ান সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশে পরিণত হয়েছিল। এখানে একটি জটিল বন্ধনী ছিল, কথিত ছিল যে এই বন্ধনী শহরের প্রতিষ্ঠাতা বেঁধেছিলেন, এবং একটি কিংবদন্তি ছিল যে কেউ যদি এটি খুলতে পারে, তবে সে এশিয়াকে শাসন করবে। আলেকজান্ডার তাঁর তরবারি দিয়ে এই বন্ধনী কেটে ফেলে, যা "গর্ডিয়ান বন্ধনী কাটা" নামে পরিচিত।
আজ গর্ডিয়ন একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, যা তুরস্কের রাজধানী আংকারা থেকে প্রায় ৮০ কিমি (৫০ মাইল) দক্ষিণে অবস্থিত।
- 4 ইসাস (Syrian Gate)। এটি ছিল অ্যালেকজান্ডারের প্রথম যুদ্ধ যেখানে পারসিয়ান বাহিনীর সম্রাট তৃতীয় দারিয়ুস সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। গ্রীকদের সংখ্যা পারসিয়ানদের তুলনায় অনেক কম থাকা সত্ত্বেও তারা জয়লাভ করে। যুদ্ধটি খ্রিস্টপূর্ব ৩৩৩ সালে সংঘটিত হয়।
- 4 ইস্কান্দেরুন (আলেকজান্দ্রেটা)। এটি আলেকজান্দ্রিয়া অ্যাড ইস্যুম নামে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল, যাতে "সিরিয়ান গেট"-এর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া যায়, যেই কারণে মূলত ইসাসের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। আজকের ইস্কান্দেরুন তুরস্কের হাতাই প্রদেশের বৃহত্তম শহর, যা ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত এবং এখানে সুন্দর তালগাছ-সজ্জিত জলপ্রান্তর রয়েছে।
- 5 টাইর (দক্ষিণ লেবানন)। এই ফিনিশিয়ান শহরটি আলেকজান্ডারের সময়কাল থেকেই প্রাচীন এবং আলেকজান্ডারের বিখ্যাত অবরোধের মধ্যে অন্যতম। পরবর্তীকালে এটি রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর হয়ে ওঠে। আজকের দিনে এটি লেবাননের চতুর্থ বৃহত্তম শহর, যা সংরক্ষিত রোমান স্থাপত্য এবং বৃহত্তম রোমান হিপ্পোড্রোমের জন্য পরিচিত। এছাড়া এখানে সুন্দর সমুদ্রসৈকতও রয়েছে।
- 6 গাজা। আলেকজান্ডার এই শহরটি অবরোধ করেন। তিনবার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর, চতুর্থ প্রচেষ্টায় তিনি প্রাচীর ভেদ করতে সক্ষম হন এবং তাঁর পদাতিক বাহিনী শহরের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে পরাজিত করে। শহরের পতনের পর, যুদ্ধ উপযোগী অধিকাংশ পুরুষকে হত্যা করা হয় এবং নারীদের ও শিশুদের ক্রীতদাসরূপে বিক্রি করা হয়।
গাজা দখলের ফলে মেসিডোনীয় এবং তাদের মিত্রজোটের জন্য মিশরে প্রবেশের পথ খুলে যায়, এবং গাজা পতনের পর পারসিয়ানদের মিশরীয় শাসক কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই আত্মসমর্পণ করেন।
- 7 আলেকজান্দ্রিয়া (Egypt)। আলেকজান্ডারের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর, যা সেই সময় থেকে আজ অবধি একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হিসেবে পরিচিত। আলেকজান্ডার একে তাঁর "গ্রীসের জানালা" বলে অভিহিত করেছিলেন। গ্রীকরা এখানে একটি অত্যন্ত উঁচু বাতিঘর নির্মাণ করে, যা ছিল বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি। তবে, এই বাতিঘরটি আর নেই। বিখ্যাত আলেকজান্দ্রিয়া গ্রন্থাগারের আকার এতই বিশাল ছিল যে ছাপাখানার আবিষ্কারের অনেক পর পর্যন্তও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের কোনো গ্রন্থাগার এটি ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। ব্যস্ত বন্দরে নিয়ে আসা প্রতিটি বই গ্রন্থাগারে কপি করার জন্য জমা দিতে হতো, তারপর সেগুলো তাদের গন্তব্যে যেতে পারত।
আজ আলেকজান্ডারের সমাধি শহরের একটি জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ।
পার্সিয়া
সম্পাদনাআনাতোলিয়া এবং পার্সিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলগুলি দখল করার পর, দারিয়ুসের একাধিক শান্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, আলেকজান্ডার পূর্বদিকে এগিয়ে পারসিয়ান সাম্রাজ্যের বাকি অংশ জয় করতে থাকেন।
- 8 ব্যাবিলন। ইসাসে পরাজয়ের পর, দারিয়ুস এই প্রাচীন শহরে ফিরে গিয়ে তার বাহিনী পুনর্গঠন করেন। পরে আলেকজান্ডার ব্যাবিলনকে তার রাজধানী হিসেবে বেছে নেন এবং পরবর্তী বিজয়ের পরিকল্পনা করার সময় সেখানেই মারা যান। আজ এটি ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে, যা এখন আধুনিক ইরাকে অবস্থিত।
- 5 গাউগামেলা (আরবেলার যুদ্ধ)। দারিয়ুসের বাহিনী ব্যাবিলন থেকে পূর্বে অগ্রসর হয়ে অ্যালেকজান্ডারের বাহিনীর সঙ্গে এখানে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এটি পারসিয়ান অভিযানের চূড়ান্ত যুদ্ধ ছিল, যা বর্তমান ইরাকি কুর্দিস্তানের দোহুকের নিকট সংঘটিত হয়। আবারও গ্রীকরা সংখ্যায় অনেক কম ছিল, কিন্তু তারা জয়লাভ করে। তাদের সৈন্যরা বেশিরভাগই সুসজ্জিত ও প্রশিক্ষিত ছিল, এবং আলেকজান্ডার কৌশলগতভাবে বুদ্ধিমান ছিলেন।
- 9 সুশা। এটি পারস্যের প্রশাসনিক রাজধানী ছিল; আলেকজান্ডার এটিকে দখল করে পরবর্তী অভিযানের জন্য একটি ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেন। আজকের দিনে শহরটি শুশ নামে পরিচিত এবং এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়, তবে প্রাচীন সুসার ধ্বংসাবশেষগুলি একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।
- 6 পার্সিয়ান গেট। এটি জাগ্রোস পর্বতমালার একটি গিরিপথ, যেখানে সংখ্যায় কম থাকা পারস্য বাহিনী এক মাস ধরে আলেকজান্ডারকে আটকাতে সক্ষম হয়েছিল, যখন তিনি সুসা থেকে পারসিপোলিসের রাজপথে আসছিলেন।
- 10 পার্সেপোলিস (তখত-এ-জামশিদ)। এটি সেই সময়ের পারস্য সাম্রাজ্যের আনুষ্ঠানিক রাজধানী ছিল। আলেকজান্ডার দখল করার কিছু পরে শহরের অধিকাংশ অংশ আগুনে ধ্বংস হয়ে যায়; কিছু ইতিহাসবিদ বিশ্বাস করেন এটি দুর্ঘটনাবশত হয়েছিল, অন্যরা মনে করেন এটি পরিকল্পিত ঘটনা, সম্ভবত সাইরাসের ১৫০ বছর আগে অ্যাথেন্সকে পুড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশোধ ছিল এই ঘটনা। আজ এর ধ্বংসাবশেষগুলি একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং একটি প্রধান পর্যটনস্থল। পার্সেপোলিসে সফরের জন্য নিকটবর্তী বড় শহর হল শিরাজ।
মধ্য এশিয়া
সম্পাদনাপার্সেপোলিস পতনের পর, পার্সিয়ান সম্রাট দারিয়ুস তার সাম্রাজ্যের উত্তর অংশে, মধ্য এশিয়ায় পালিয়ে যান। আলেকজান্ডার তাকে তাড়া করেন এবং সেই অঞ্চলও জয় করেন।
- 11 মেরভ। মার্গিয়ানার রাজধানী মেরভ। এটি ছিল পার্সিয়ান সাম্রাজ্যের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত একটি প্রদেশের রাজধানী। আলেকজান্ডার এটি দখল করে এবং সেখানে একটি শহরের নাম রাখেন আলেকজান্দ্রিয়া ইন মার্গিয়ানা। মেরভ, মঙ্গোল সাম্রাজ্যের ত্রয়োদশ শতাব্দীর এক রক্তক্ষয়ী আক্রমণে ধ্বংস হয়; এটি পুনরায় নির্মিত হয়েছিল কিন্তু তার পূর্বের গৌরব কখনও ফিরে পায়নি। এটি আঠারো শতকে বুখারার আমিরের হাতে আবার ধ্বংস হয়। আজকের দিনে, তুর্কমেনিস্তানের মারি শহরের কাছে এর কেবল ধ্বংসাবশেষই অবশিষ্ট রয়েছে।
- 12 সোগদিয়া (ট্রানসোজানিয়া)। এটি ছিল পার্সিয়ান সাম্রাজ্যের উত্তর-পূর্বতম প্রদেশ, অক্সাস নামক নদীর উত্তরে অবস্থিত অঞ্চল, যা বর্তমানে আমু দারিয়া নামে পরিচিত। এর প্রধান শহরগুলি ছিল সমরকন্দ, মানচিত্রের কেন্দ্রে উপরের দিকে এবং আরও পশ্চিমে বুখারা। আলেকজান্ডার উভয় শহরই দখল করেন। আজকে এই দুটি শহরের কেন্দ্রস্থল ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত, মূলত ইসলামী স্থাপত্যের জন্য, যা আলেকজান্ডারের সময়ের অনেক পরে নির্মিত হয়েছিল।
- 7 জাকার্টেসের যুদ্ধ। এটি ছিল আলেকজান্ডারের উত্তর-পূর্বদিকের যুদ্ধ, যা একটি তৎকালীন জ্যাক্সার্টেস নামে পরিচিত নদীর তীরে সংঘটিত হয়েছিল, এই নদী বর্তমানে সির দারিয়া নামে পরিচিত, যা সোগডিয়ার উত্তর সীমান্ত গঠন করে। যুদ্ধক্ষেত্রটি বর্তমান তাশখেন্ট শহরের কাছে অবস্থিত ছিল। প্রতিপক্ষ ছিল সাকা, উত্তরাঞ্চলের তৃণভূমি থেকে আসা যাযাবর অশ্বারোহী যোদ্ধারা।
- 13 খুজান্ড। এটি আলেকজান্দ্রিয়া এসচাট (সর্বাধিক দূরবর্তী আলেকজান্দ্রিয়া) নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রধানত জ্যাক্সার্টেসের সীমানা রক্ষার কারণে, যা ছিল আলেকজান্ডারের সাম্রাজ্যের উত্তর-পূর্বতম সীমান্ত।
উপরে উল্লেখিত সমস্ত শহর পরবর্তীতে সিল্ক রোডের বাণিজ্যিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে এবং মধ্যযুগ পর্যন্ত তা বজায় ছিল। মেরভ ছাড়া অন্য সব শহর আজও বিদ্যমান। মানচিত্রের উপরের ডানদিকে অবস্থিত ফেরঘানা উপত্যকা কাশগর থেকে সমরকন্দের প্রধান সিল্ক রোড রুট হয়ে ওঠে।
- 14 ব্যাক্ট্রিয়া। আলেকজান্ডারের আগেও এই অঞ্চল পার্সিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ ছিল; আজকের দিনে এর বেশিরভাগ অংশ উত্তর আফগানিস্তানে অবস্থিত। আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর প্রায় দুই শতাব্দী ধরে একটি গ্রিক-ব্যাক্ট্রিয়ান রাজ্য ব্যাক্ট্রিয়া, সোগডিয়া এবং মার্গিয়ানা শাসন করেছিল। তাদের রাজধানী মানচিত্রে ব্যাক্ট্রেস নামে প্রদর্শিত; আজকে এটি বালখ নামে পরিচিত।
মধ্য এশিয়া থেকে আলেকজান্ডার ভারতীয় উপমহাদেশ আক্রমণ করতে অগ্রসর হন। পথে তিনি বেশ কয়েকটি শহর প্রতিষ্ঠা করেন।
- 15 বাগ্রাম। আলেকজান্ডার কাবুলের উত্তরে হিন্দুকুশ পর্বতমালার মধ্য দিয়ে অতিক্রমকারী পথগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এখানে আলেকজান্দ্রিয়া অন দ্য ককেসাস নামে একটি শহর প্রতিষ্ঠা করেন। এই স্থানটি এখনও সামরিক ক্ষেত্ররূপে গুরুত্বপূর্ণ; আফগানিস্তান আক্রমণের সময় রাশিয়া এবং আমেরিকা উভয়ই এখানে প্রধান সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছিল।
- 16 হেরাত। আলেকজান্দ্রিয়া আরিয়ানা নামে প্রতিষ্ঠিত, আজকের দিনে হেরাত আফগানিস্তানের তৃতীয় বৃহত্তম এবং পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর। এটি সীমান্তের কাছে অবস্থিত এবং সবসময় পারস্য বা ইরানের সাথে গভীর সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
- 17 কান্দাহার। এই শহরটি খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০ সালে আলেকজান্দ্রিয়া ইন আরাকোসিয়া নামে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ইসলামী বিজয়ের আগে পর্যন্ত শহরের নাম হিসেবে নথিভুক্ত নাম ছিল। "কান্দাহার" নামটি সম্ভবত "ইস্কান্দার" থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যা আলেকজান্ডারের স্থানীয় উপভাষা। আঠারোশো শতাব্দীতে এটি দেশের রাজধানী ছিল এবং তালেবান শাসনের সময় আবার এটিকে রাজধানী করা হয়। আজ এটি আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং সবচেয়ে বিপজ্জনক শহরগুলির একটি হিসেবে বিবেচিত।
দক্ষিণ এশিয়া
সম্পাদনাদারিয়ুসের অধীনে পার্সিয়ান সাম্রাজ্য পূর্বে গান্ধার অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা এখন পাকিস্তানে অবস্থিত এবং এটি ছিল সাম্রাজ্যের পূর্বতম প্রদেশ। আলেকজান্ডার সেখানে স্থানীয় নেতাদের তাঁর অধীনস্থ হতে আহ্বান জানান ও নিজেকে সাম্রাজ্যের নতুন শাসক হিসেবে পরিচয় দেন। কিছু শাসক তা মেনে নেন, তবে বাকিদের পরাজিত করার জন্য তিনি আক্রমণ চালান।
- 18 খাইবার পাস (পাকিস্তান)। আলেকজান্ডারের আগের ও পরের অন্যান্য বিজেতাদের মতো তিনিও এই পাস দিয়ে আফগানিস্তান থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করেন। এই অঞ্চলের পাহাড়ি গোষ্ঠীগুলি সবসময়ই অত্যন্ত দুর্ধর্ষ ছিল, এবং আলেকজান্ডারও সফল হতে পারেননি যতক্ষণ না তিনি স্থানীয় কিছু প্রধানকে ঘুষ দিয়ে অন্যান্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহায়তা দেওয়ার জন্য রাজি করান।
- 19 তাক্সিলা। এই গুরুত্বপূর্ণ গান্ধারীয় বাণিজ্য শহরের শাসক আলেকজান্ডারের সাথে মিত্রতা স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে এটি গ্রিক প্রভাবিত বৌদ্ধ শিল্পের একটি প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে। আজকের দিনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এবং পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয়, যা ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।
- 8 হাইড্যাপসেসের যুদ্ধ। এই যুদ্ধটি বর্তমান পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের ঝিলাম নদীর কাছে সংঘটিত হয়েছিল। হাইডাসপেস ছিল গ্রিকদের দেওয়া নাম, যা বর্তমানে ঝিলাম নদী নামে পরিচিত। পরাজিত স্থানীয় শাসক আত্মসমর্পণ করে এবং আলেকজান্ডারের অধীনস্ত শাসক হয়ে ওঠেন।
- আলেকজান্ডার হাইডাসপেস নদীর তীরে দুটি শহর প্রতিষ্ঠা করেন—বুসেফেলা (তার প্রিয় ঘোড়ার নামে) এবং নিকাইয়া।
- 20 আলেকজান্দ্রিয়া ওন দ্য ইন্দাস। এটি দুটি নদী—ইন্দাস এবং আসেসিনেস (বর্তমানে চেনাব)—এর মিলনস্থলে অবস্থিত একটি শহর ছিল, যেখানে নৌঘাঁটিও ছিল।
- এছাড়াও, আলেকজান্ডার ইন্দাস নদীর মোহনায় আরেকটি আলেকজান্দ্রিয়া শহর প্রতিষ্ঠা করেন।
আলেকজান্ডার উপমহাদেশে যে অঞ্চল দখল করেছিলেন, তার মধ্যে বর্তমানের পাঞ্জাবের বেশিরভাগ অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল। "পাঞ্জাব" শব্দটির অর্থ পার্সিয়ান ভাষায় "পাঁচটি জলাশয়", এবং এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয়েছে মানচিত্রে দৃশ্যমান পাঁচটি নদীর জন্য; এর মধ্যে চারটি ইন্দাস নদীর উপনদী এবং পঞ্চমটি তাদের একটির উপনদী।
গান্ধার দখল করার মাধ্যমে আলেকজান্ডার পার্সিয়ান সাম্রাজ্যের যা অবশিষ্ট ছিল তার পুরোপুরি নিজের অধীনে করেন। এর পর তার অনেক সৈন্য পূর্ব দিকে আরও অগ্রসর হতে অনীহা প্রকাশ করে এবং কিছু সেনাপতি তাদের সমর্থন করেন, কারণ তাদের মতে তারা ইতিমধ্যেই প্রচুর কীর্তি স্থাপন করেছেন এবং নিজেদের ঘরবাড়ি ও পরিবারের কাছ থেকে অনেক দূরে রয়েছেন। আলেকজান্ডার অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাদের অনুরোধ মেনে নেন এবং বেশিরভাগ সেনাবাহিনীকে নিয়ে পারস্যে ফিরে যান, পথে বর্তমান সিন্ধ এবং বেলুচিস্তান অঞ্চল দখল করেন।
আলেকজান্ডারের পরবর্তী সময়ে
সম্পাদনাআলেকজান্ডার, ব্যাবিলনকে তাঁর নতুন সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং ভারত অভিযান শেষে সেখানে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি পারস্য উপসাগরে একটি নৌবহর নির্মাণ করেন এবং আরব উপদ্বীপ থেকে শুরু করে অপর একটি নতুন বিজয়ের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু ৩২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ব্যাবিলনেই তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে; টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া এবং বিষপ্রয়োগ এগুলি সম্ভাব্য কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তার সাম্রাজ্য তার সেনাপতিদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়, এবং এই বিভাজন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ ও বিবাদ চলতে থাকে।
সেনাপতিদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন প্রথম সেলুকাস নিকেটর, যিনি মূল বিভাজনে ব্যাবিলন পেয়েছিলেন এবং আরও অনেক কিছু অধিকার করেছিলেন। এই মানচিত্রে সেলিউকিড সাম্রাজ্য (হালকা নীল) এবং তাঁর মৃত্যুর সময় অন্যান্য গ্রীক শাসিত রাজ্যগুলো দেখানো হয়েছে। এই সাম্রাজ্য ৬৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল, যখন রোমান সেনাপতি পম্পেই এটি শেষ করেন।
সেলিউকিড সাম্রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর, একটি গ্রীক-বাক্ট্রিয়ান রাজ্য কেন্দ্রীয় এশিয়ার একটি বড় অংশ শাসন করেছিল প্রায় ১২৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত। দ্বিতীয় শতাব্দী খ্রিস্টপূর্বাব্দে, তাদের এবং চীনা দরবারের প্রতিনিধিরা উভয়েই কাশগর পৌঁছান এবং সেখানে একে অপরের সাথে দেখা করেন। এটি চীন এবং ইউরোপীয়দের মধ্যে প্রথম যোগাযোগ মনে করা হয় এবং এটি সিল্ক রোড বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেয়, যেখানে ফেরগানা উপত্যকা কাশগর এবং সামারকন্দের মধ্যে প্রধান পথ ছিল। প্রায় ১৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বাক্ট্রিয়ান রাজ্য ভারতীয় উপমহাদেশে আক্রমণ করে এবং একটি গ্রীক-ভারতীয় রাজ্য সেখানে প্রায় ১০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত টিকে ছিল। ট্যাক্সিলায় মূলত বৌদ্ধ শিল্পের অনেক কাজ রয়েছে যা স্পষ্ট গ্রীক প্রভাবিত।
অন্য একজন সেনাপতি, পটলেমি, মিশরের ফারাও হয়েছিলেন যার রাজধানী ছিল আলেকজান্দ্রিয়া, এবং সেখানে বিখ্যাত গ্রন্থাগার এবং মশাল তৈরি করেছিলেন। তিনি যে রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তার শেষ শাসক ছিলেন ক্লিওপেট্রা, যিনি ৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মারা যান। তার পর, মিশর একটি রোমান প্রদেশে পরিণত হয়; রোমানদের শীর্ষ কাজগুলোর জন্য নিয়োগ করা হয়, পটলেমিক গ্রীকরা সরকারী এবং এর বাইরেও পেশাদার শ্রেণির বড় অংশ ছিল। গ্রীক ছিল সরকারের ভাষা এবং গ্রীক সংস্কৃতি মুসলিম বিজয়ের পূর্ব পর্যন্ত ৬৪১ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিল। মিশরের ভাষা, যা এখন কোপটিক নামে পরিচিত, শীঘ্রই একটি গ্রীক-উদ্ভূত অক্ষরে লিখিত হয় এবং আজও এটি ধর্মীয় ব্যবহারে আছে।
সুরক্ষিত থাকুন
সম্পাদনাঅ্যালেকজান্ডারের বিজয় নতুন বাণিজ্যিক পথ প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং ওই অঞ্চলে একটি আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা তৈরি করেছিল, এবং এটি কিছুটা হিপ্পি ট্রেলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হলেও, অনেক অংশ এখন বিপজ্জনক।
১৯৭৯ সালে ইরান শিয়া চরমপন্থীদের দখলে চলে যায় এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করে; এরপর থেকে কোন দেশই পুরোপুরি নিরাপদ নয়। এই শতাব্দীতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট আফগানিস্তান এবং ইরাকে আক্রমণ করেছে, যখন সিরিয়ায় একটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ চলছে। ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও কিছু সমস্যা রয়েছে।
আপনি যদি আফগানিস্তান, ইরাক বা সিরিয়ায় সফরের কথা ভাবছেন তবে আমাদের যুদ্ধকালীন নিরাপত্তা সম্পর্কিত নিবন্ধটি দেখুন।
{{#মূল্যায়ন:ভ্রমণপথ|ব্যবহারযোগ্য}}