সুনামগঞ্জ শহর হলো বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শহর, যা সিলেট বিভাগের অন্তর্গত সুনামগঞ্জ জেলায় পড়েছে। এটি মূলত সুনামগঞ্জ পৌরসভা, যা ৯টি ওয়ার্ডে বিভক্ত এবং সুরমা নদীর পারে বিস্তৃত।
কীভাবে যাবেন?
সম্পাদনাস্থলপথে
সম্পাদনাসড়কপথে ঢাকা হতে সুনামগঞ্জের দূরত্ব ২৯৬ কিলোমিটার এবং রেলপথে ঢাকা হতে সিলেট রেল স্টেশনের দূরত্ব ৩১৯ কিলোমিটার; এখানে রেল যোগাযোগ নেই বিধায়, প্রথমে সিলেট এসে তারপর সুনামগঞ্জ আসতে হয়। বিভাগীয় শহর সিলেট থেকে এটি ৬৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সড়কপথ
সম্পাদনাঢাকার সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল ও মহাখালী বাস স্টেশন থেকে সুনামগঞ্জে আসার সরাসরি দুরপাল্লার এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস আছে; এগুলোতে সময় লাগে ৫.৩০ হতে ৮ ঘণ্টা। ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে মামুন, শ্যামলী, এনা, নূর, একতা, সাউদিয়া, নিউ লাইন, মিতালি প্রভৃতি পরিবহন কোম্পানীর বাস আছে প্রতি ঘণ্টায়। এছাড়াও বিআরটিসি (কুমিল্লা হতে), নাসিরাবাদ (ময়মনসিংহ হতে) পরিবহন কোম্পানীর বাসে আসা যায়।
- মামুন পরিবহন: ☎ ০৮৭১-৬১১৬৭ (সুনামগঞ্জ), +৮৮০১৭১৮-৪৩৮ ৭৩২ (ফকিরাপুল), +৮৮০১৭১১-৩৩৭ ৮৫১ (সায়েদাবাদ);
- এনা পরিবহন: মোবাইল: +৮৮০১৭৭৬-১৯১ ৪১৮;
- শ্যামলী পরিবহন: ☎ ০৮৭১-৬১৪৯৮ (সুনামগঞ্জ), +৮৮০১৭১৪-৫৩৭ ৯১৬ (গাবতলী)।
- ঢাকা-সুনামগঞ্জ রুটে সরাসরি চলাচলকারী পরিবহনে আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলোঃ
- এসি বাসে - ৯০০/- এবং
- নন-এসি বাসে - ৫৫০/-।
রেলপথ
সম্পাদনাআকাশপথে
সম্পাদনাসুনামগঞ্জ আসার জন্য সরাসরি বিমান যোগাযোগ নেই। সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর হচ্ছে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যার অবস্থান সুনামগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার পশ্চিমে।
জলপথে
সম্পাদনাহাওড় বেষ্টিত জেলা হওয়া সত্ত্বেও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে এ জেলার নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রচলন নেই বললেই চলে; কেবলমাত্র সিলেট ও হবিগঞ্জের কিছু এলাকা থেকে সরাসরি নৌপথে আসা যায়।
অপরদিকে, হাওড় এলাকায় যোগাযোগের একমাত্র বাহন নৌযান। হাওর বেষ্টিত অঞ্চল বিধায় সুনামগঞ্জ অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা নৌপথ কেন্দ্রিক। এ জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে মাত্র ৬টি উপজেলা (ছাতক, জগন্নাথপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দিরাই, জামালগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ সদর) থেকে জেলা সদরে সড়কপথে যোগাযোগ রয়েছে। অবশিষ্ট ৪টি উপজেলার (বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ধর্মপাশা ও দোয়ারাবাজার) সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ নেই; নৌপথে চলাচল করতে হয়। আবার, সরাসরি সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অধিকাংশ রাস্তাই কাঁচা বা অন্যান্য কারণে বর্ষায় পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নৌপথই একমাত্র অভ্যন্তরীন যোগাযোগের মাধ্যম।
দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা
সম্পাদনা- হাসন রাজার বাড়ি;
- যাদুকাটা নদী;
- সুরমা নদী;
- গৌরারং জমিদার বাড়ি।
- টাঙ্গুয়ার হাওড়
খাওয়া দাওয়া
সম্পাদনাসুনামগঞ্জে স্থানীয় পর্যায়ের বিখ্যাত খাদ্য হলো আথনী পোলাও ও সাতকরা (হাতকরা)। এছাড়াও স্থানীয় আনারস, কমলা, পান, লেবু এবং কাঠালের দারুণ সুখ্যাতি রয়েছে। আরও রয়েছে চা-পাতা। হাওড় এলাকায় প্রচুর মাছ পাওয়া যায় এবং খামার ভিত্তিক হাঁস পালন করা হয়। এখানে সাধারণভাবে দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়।
থাকা ও রাত্রিযাপনের স্থান
সম্পাদনাসুনামগঞ্জে থাকার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কিছু মানসম্মত রেস্ট হাউস ও মোটামুটি মানের হোটেল রয়েছে, যেখানে ৪০০ থেকে ২,০০০ টাকায় বিভিন্ন ধরণের রুম পাওয়া যায়। এসব হোটেলের মধ্যে রয়েছে -
- হোটেল নূর : পূর্ববাজার, স্টেশন রোড, সুনামগঞ্জ, ☎ ০৮৭১-৫৫২২৫, মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-৬৩০ ৮৮৭;
- হোটেল সারপিনিয়া : জগন্নাথবাড়ী রোড, সুনামগঞ্জ, ☎ ০৮৭১-৫৫২৭৮;
- হোটেল নূরানী : পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন রোড, সুনামগঞ্জ, ☎ ০৮৭১-৫৫৩৪৬, মোবাইল: ০১১৯৬-১৪২ ৯৩৯;
- হোটেল মিজান : পূর্ববাজার, স্টেশন রোড, সুনামগঞ্জ, ☎ ০৮৭১-৫৫৬৪০।