আফ্রিকা > সাহেল
সতর্কীকরণ: রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও নাগরিক অস্থিরতার কারণে সাহেলের বেশিরভাগ দেশ ও শহর বর্তমান ভ্রমণের জন্য অনিরাপদ রয়ে গেছে। মৌরিতানিয়া , মালি, নাইজার, চাদ ও সুদান নিবন্ধে সতর্কতা দেখুন। | |
(সর্বশেষ হালনাগাদ: জানু ২০২৪) |
সাহেল হল সাহারা মরুভূমির দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত আফ্রিকার একটি বিস্তৃত অঞ্চল।
দেশসমূহ
সম্পাদনাচাদ শুধুমাত্র অত্যধিক দুঃসাহসী ভ্রমণকারীদের জন্য উপযুক্ত; এর উত্তর অংশ অত্যন্ত অস্থিতিশীল। |
মালি এমন একটি দেশ, যার রয়েছে অসাধারণ ইতিহাস ও ঐতিহ্য; যেখানে প্রাচীন বাণিজ্যিক রাজধানী ও জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র জেনে ও টিম্বুকটু অবস্থিত। |
মৌরিতানিয়া সম্ভবত এই অঞ্চলের সবচেয়ে নিরাপদ ও আধুনিক দেশ; এখানে দর্শনার্থীদের আগ্রহ প্রধানত সাহারার বালিয়াড়ি অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত। |
নাইজার এটি প্রতিবেশী মালির মতো এবং সম্ভবত সাহেল অঞ্চলে ভ্রমণকারীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় দেশ। |
সুদান আফ্রিকার অন্যতম বৃহত্তম দেশ এবং বিশ্বের প্রাচীনতম ধারাবাহিক প্রধান সভ্যতাগুলোর একটি আবাসস্থল; এটি সংঘাতপ্রবণ একটি দেশ। |
শহরসমূহ
সম্পাদনাআফ্রিকার এই অঞ্চলে জনসংখ্যা খুবই কম। শহরের সংখ্যা বিরল; এক শহর অপরটি থেকে বিশাল দূরত্বে অবস্থিত। তবে এখানে কিছু প্রধান শহর রয়েছে৷
- 1 আগাডেজ— ঐতিহাসিকভাবে উত্তর নাইজারে ট্রান্স-সাহারান কাফেলা রুটের একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ ছিল।
- 2 বামাকো- মালির রাজধানী।
- 3 খার্তুম— সুদানের রাজধানী এবং এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর
- 4 মুফতি— মালির অন্যতম প্রধান বন্দর এবং অনেক চিত্তাকর্ষক স্থান; যেমন: জেনে, টিম্বুকুটু, ও ডগন অঞ্চলের প্রবেশদ্বার।
- 5 এনজামেনা- চাদের রাজধানী।
- 6 নিয়ামে— নাইজারের রাজধানী এবং সম্ভবত ভ্রমণকারীদের জন্য সবচেয়ে প্রবেশযোগ্য সাহেলী শহর।
- 7 নুওয়াকশুত- মৌরিতানিয়ার রাজধানী।
- 8 পোর্ট সুদান- বড় লোহিত সাগর বন্দর শহর।
- 9 টিম্বুকতু- বিশেষ করে শিক্ষা এবং ইসলামের প্রসারের জন্য মহান ঐতিহাসিক গুরুত্ববাহী একটি শহর।
অন্যান্য গন্তব্য
সম্পাদনা- 10 বালেয়ারা—নাইজারের নিয়ামে থেকে দুই ঘণ্টা দূরে অবস্থিত একটি শহর। এতে পশ্চিম আফ্রিকার সবচেয়ে বড় পশুর বাজারগুলোর একটি রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী বাজার ও কারিগরী সামগ্রীর বাজার।
- 11 ডগন অঞ্চল— বিক্ষিপ্ত এই পাহাড়ী অঞ্চলের প্রাকৃতিক দৃশ্যের মধ্য দিয়ে একটি ট্র্যাক কোনো মালি দর্শনার্থী হারাতে চাইবেন না।
- 12 জেনে—একসময়ের টিম্বুকটুকে প্রতিদ্বন্দ্বী করে গড়ে ওঠা একটি ধর্মীয় ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। মালির বহুতল মাটির ভবন সমৃদ্ধ এই ছোট্ট শহরটি বেশ দৃষ্টিনন্দন।
- 13 ডব্লিউ জাতীয় উদ্যান— একটি বড় সীমান্ত অতিক্রমকারী জাতীয় উদ্যান। নাইজারের নিয়ামে থেকে সবচেয়ে সুবিধাজনকভাবে প্রবেশ করা যায়।
- 14 চাদ হ্রদ
জানুন
সম্পাদনারমজান
রমজান ইসলামি বর্ষপঞ্জীতে ৯ম ও পবিত্রতম মাস। এটি ২৯-৩০ দিন স্থায়ী হয়। মুসলমানরা সেই সময়ে প্রতিদিন উপবাস করে; স্ত্রী সহবাস হতে বিরত থাকে এবং বেশিরভাগ রেস্তোঁরা সন্ধ্যায় ইফতার না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোন কিছুই (জল ও সিগারেটসহ) গলার মধ্য দিয়ে পেটে যাওয়া উচিত নয়। তবে অমুসলিমদের এটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তখন জনসমক্ষে খাওয়া বা পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত; কারণ এটি অত্যন্ত অসভ্য বলে বিবেচিত হয়। কর্পোরেট জগতেও কর্মঘণ্টা কমে যায়। রমজানের সঠিক তারিখ স্থানীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণের উপর নির্ভর করে এবং দেশ থেকে দেশে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। রমজান ঈদ আল-ফিতরের উৎসবের সাথে শেষ হয়, যা বেশ কয়েক দিন স্থায়ী হতে পারে; বেশিরভাগ দেশে সাধারণত তিন দিন চলে।
আপনি যদি রমজানে সাহেল ভ্রমণ করার পরিকল্পনা করেন, তাহলে রমজানে ভ্রমণ নিবন্ধটি ভালো করে পড়বেন এবং সেই মতে পরিকল্পনা করবেন। |
সাহেল অঞ্চলটি আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূল থেকে মোরিতানিয়ার পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ৩,৮৬২ কিলোমিটার প্রসারিত; পূর্বে লোহিত সাগরের উপকূল থেকে সুদানের বিরাট অংশ জুড়ে বিস্তৃত। অঞ্চলটির অংশবিশেষকে অন্যান্য দেশ অন্তর্ভুক্ত করলেও এর ভ্রমণ নির্দেশনার উদ্দেশ্যে এতে চাদ, মালি, নাইজার মৌরিতানিয়া ও সুদান অন্তর্ভুক্ত। এই অঞ্চলটি আধা-শুষ্ক তৃণভূমি, সাভানা, স্তেপ ও কাঁটা গাছপালার ভূমি নিয়ে গঠিত, যা দক্ষিণে মধ্য আফ্রিকার সাভানা ও উত্তরে সাহারা মরুভূমির মধ্যে অবস্থিত।
সাহেলের ভূ-প্রকৃতি প্রধানত সমতল এবং এর উচ্চতা সাধারণত ২০০ থেকে ৪০০ মিটারের মধ্যে।
ইতিহাস
আফ্রিকার ইতিহাসে সাহেল অঞ্চলে বাণিজ্যিক সুবিধা পেয়ে কয়েকটি উন্নত রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এসব রাজ্য সাহেলীয় সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত, যা সাহেলের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং তাদের মধ্যে পরস্পরে অনেক মিল ছিল। এই রাজ্যগুলোর সমৃদ্ধি এসেছিল সাহারা মরুভূমির বাণিজ্য পথগুলির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মাধ্যমে। তাদের ক্ষমতা এসেছিল বিভিন্ন বড় পুঁজির পশু; যেমন উট ও ঘোড়া থেকে, যা দ্রুত ছিল। তাই তারা একটি বৃহৎ সাম্রাজ্যকে কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হতো এবং যুদ্ধেও কার্যকর ছিল। প্রথম বড় সাহেলীয় সাম্রাজ্যগুলি ৭৫০ সালের পর আবির্ভূত হয় এবং নাইজার বেন্ড অঞ্চলে তিম্বুক্তু, গও ও জেনের মতো বেশ কয়েকটি বড় বাণিজ্যিক শহরকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল।
উনবিংশ শতাব্দীতে ফরাসিরা পশ্চিম ও মধ্য সাহেলে আগ্রাসন চালিয়ে উপনিবেশ স্থাপন করে এবং ১৮২০ সালে মিশরের শাসক মুহাম্মদ আলী পূর্ব সাহেল (বর্ত: সুদান) আক্রমণ করে। পরে ব্রিটিশরা সুদানের কার্যত দখলকারী হয়ে ওঠে। প্রতিটি সাহেলিয়ান দেশ ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে তাদের ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তির কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।
দুর্ভাগ্যবশত, ২১শ শতাব্দীতে এই অঞ্চলের অব্যাহত অস্থিতিশীলতা ও অভ্যুত্থানের কারণে, এই অঞ্চলকে আঞ্চলিকভাবে "অভ্যুত্থান বেল্ট" নামে ডাকা হয়। এই অঞ্চলে ভ্রমণ পৃথিবীর সবচেয়ে অজানা এবং দূরবর্তী গন্তব্যগুলির একটি। কারণ অনেক বিদ্রোহী চরমপন্থী গোষ্ঠী সাহেল অঞ্চলে নিজেদের অবস্থান গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।
আবহাওয়া
সাহেলের উত্তরাঞ্চলে বার্ষিক বৃষ্টিপাত প্রায় ১০০-২০০ মিলিমিটার থেকে শুরু করে দক্ষিণে প্রায় ৭০০-৯০০ মিলিমিটার পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়।
পড়ুন
এই অঞ্চলে স্থলপথে ভ্রমণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে মাইকেল পেলিনের বই সাহারা (Sahara: আইএসবিএন ০২৯৭৮৪৩০৩৬ )-এ, যা ২০০১ সালে বিবিসি প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য করা একটি যাত্রার বিবরণ প্রদান করে।
প্রবেশ
সম্পাদনাঘোরাঘুরি
সম্পাদনাদর্শনীয়
সম্পাদনাআহার
সম্পাদনা- আরও দেখুন: উত্তর আফ্রিকান রন্ধনশৈলী