Sourav saha032
উইকিভ্রমণে স্বাগত!
সম্পাদনাপ্রিয় Sourav saha032, উইকিভ্রমণে আপনাকে স্বাগত!
এই প্রকল্পে আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করছি, এ পরিবেশটি আপনার ভালো লাগবে আর উইকিভ্রমণকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন। উইকিভ্রমণে নতুন হিসেবে আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হলে এগুলো দেখতে পারেন:
আপনার যেকোনো প্রশ্ন বা জিজ্ঞাস্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ভ্রমণপিপাসুর আড্ডা ব্যবহার করুন। এছাড়া সম্প্রদায়ের প্রবেশদ্বারে আপনি একটি তালিকা পাবেন, যা আপনাকে সাহায্য করবে। এতদ্ব্যতীত আপনার যেকোনো অসুবিধায় সম্পূর্ণ নির্দ্বিধায় আমার আলাপ পাতায় বার্তা রাখুন। অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা ( আশা করি আপনি বাংলা উইকিভ্রমণ সম্প্রদায়ের একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আপনাকে আবারও স্বাগতম এবং শুভেচ্ছা! |
— উইকিভ্রমণ অভ্যর্থনা কমিটির পক্ষে, --—Yahya (talk • contribs.) ১৬:৫১, ১ অক্টোবর ২০২৪ (ইউটিসি)
খালি পাতা
সম্পাদনাঅনুগ্রহ করে খালি পাতা তৈরি করবেন না। অন্তত এক অনুচ্ছেদ অনুবাদ করে নিবন্ধ তৈরি করুন। তারপর ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ করুন। ধন্যবাদ। —Yahya (talk • contribs.) ১৬:৫১, ১ অক্টোবর ২০২৪ (ইউটিসি)
সাতভিটা গ্রন্থনীড় ও জয়নাল আবেদীন
সম্পাদনাজয়নাল আবেদীন: পাঠাগার আন্দোলনের অন্যতম যুগপুরুষ ও একটি সাক্ষাৎকার
আলোকিত মানুষ জয়নাল আবেদীন কুড়িগ্রাম শহরে থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে উলিপুরের বুড়াবুড়ী ইউনিয়নের এক প্রত্যন্ত গ্রামের নামে গড়ে তুলেছেন ‘সাতভিটা গ্রন্থনীড়’ পাঠাগার। পেশায়, কৃষির সাথে যুক্ত। পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা। গড়ে তুলেছেন চার হাজারেরও বেশি গ্রন্থের পাঠাগার।
শহর থেকে অনেক দূরে নদী সংলগ্ন এলাকায় এমন একটা জায়গায় জয়নালের পাঠাগার যেখানে যেতে হলে আপনাকে অনেকটা দুর্ভোগ পোহাতে হবে। কারণ ঐ জায়গাটার দেড় থেকে দুই কিলোমিটার এলাকায় গাড়ি চলাচল করার মতো যোগাযোগ ব্যবস্থা একদম নাই বললেই চলে। সেখানটায় বসে তাঁর যে উর্বর ভাবনা সেটা লক্ষ্যনীয়।
ইতিমধ্যে, সারা বাংলাদেশে সাড়া জাগানো পাঠাগার উদ্যোক্তা জয়নাল আবেদীন। পাঠাগার আন্দোলনের আলোচিত নাম জয়নাল আবেদীন। পত্রপত্রিকা কিংবা টেলিভিশনের মাধ্যমে নিশ্চয়ই আপনারা এই লোকটাকে দেখেছেন। ২০২০ সালের দিকে উনার সাথে আমার পরিচয়। খুব সাদামাটা এবং শান্ত স্বভাবের। বইপ্রেমী হিসেবে আমাদের প্রেরণা দিচ্ছেন। পাশাপাশি এলাকায় থাকার কারণে উনার সাহচর্য পাচ্ছি। প্রথম যেদিন খবরের পাতায় জয়নাল আবেদিন নামটা দেখেছিলাম, অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। একজন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে তুলে আনলেন এক ঝাঁক পত্রিকা।
কৃষিকাজ করে একজন মানুষ এরকম পাঠাগার দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চিন্তা করেন, ভাবতেই অবাক হই। যে রোজগারের টাকায় নিজের পেট বাঁচানো বড় দায় পড়ে যায়, সেই টাকায় একজন মানুষ কি করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে নিজেকে সংযত রাখেন আলোহীন জাতির উন্নতির জন্য! এটা আমাদের জয়নাল আবেদীনের মত লোকদের থেকে শেখা উচিত। উচ্চ আসনে বসে থেকে বড় হওয়া যায় না, বুদ্ধি এবং স্বশিক্ষার মাধ্যমে নিজেকে আলোকিত করে অভাব অনটনের মধ্যে থেকেও কিভাবে সারা বাংলাদেশের রোল মডেল হয়ে দাঁড়ানো যায় তার একমাত্র উদাহরণ জয়নাল আবেদীন। তিনি নিজেই আবুহেনা মুস্তফা সম্পাদিত ষান্মাসিক ‘ছোটনদী’ পত্রিকার সপ্তম বর্ষ প্রথম সংখ্যা ২০২১—এ ‘আমার পাঠাগার আন্দোলন: গ্রাম থেকে শুরু’ শীর্ষক প্রবন্ধে লিখেছেন....
“....ছোট এই জীবনে মানুষ তো কতো কিছু নিয়ে স্বপ্ন দেখে! আমিও একটি স্বপ্ন দেখেছিলাম —আমার এই স্বপ্ন দরিদ্র থেকে ধর্নাঢ্য হবার স্বপ্ন নয়, তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতা হবার স্বপ্ন নয়, এই স্বপ্ন হলো গ্রামে কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষকে আলোয় নিয়ে আসার স্বপ্ন, শিক্ষার্থীদের জানার পরিধিকে বৃদ্ধি করার স্বপ্ন, শিক্ষা থেকে দূরে সরে থাকা মানুষগুলোকে আবার টেনে আনার স্বপ্ন।”
এই স্বপ্ন কোনো সাধারণ কেন্দ্রে সংহত হতে পারে না, তিনি সত্যিই একজন অসাধারণ বইপাগল মানুষ। যিনি সুন্দর পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে অন্ধকার দূর করার চিন্তা করেন।
‘আপনি তো নিজের পেটের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাহলে পাঠাগারের চাহিদা পূরণ করেন কিভাবে?’ —এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন... ‘আমি জানি এভাবে চলতে থাকলে কখনোই আমার অর্থাভাব দূর হবে না। তবুও মনকে শান্ত রাখি সন্তুষ্ট থাকার অভয় দেই। নিজের সামান্য অর্জিত বোধবুদ্ধি থেকে। পাঠাগার চালিয়ে যাওয়া এ বিষয়টি আসলে বলা যায় আমার সাথে মিশে গেছে।’
কর্মসূত্রে তিনি গাজীপুর ছাড়াও অন্যান্য জেলায় ইটভাটায় বেশ কয়েক বছর কাজ করেছেন। কিন্তু বইয়ের প্রতি টান তাকে রুদ্ধ করতে পারেনি। অবসর সময়ে চায়ের দোকানে চা-পান না খেয়ে, সেই সময়টা বই পড়ার কাজে লাগাতেন। ঠিক সেই সময়টায় বইয়ের প্রতি ঝুঁকে পড়েন এবং পুরাতন লাইব্রেরি থেকে বই সংগ্রহ করে অবসর সময়ে পড়তেন। যে টাকা রোজগার হয় তাতে নতুন বই কিনে পড়ার মতো অবস্থা ছিল না, তাই পুরাতন বই দিয়ে বই পড়ার চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করেছেন। পরবর্তীতে নিজ গ্রাম সাতভিটায় ফিরে, বই পড়ায় মানুষকে উৎসাহিত করতে শুরু করলেন এবং শেষমেষ সফল হলেন। দৃঢ় চিন্তা এবং চেতনা জয়নাল আবেদিনকে নিয়ে গিয়েছিল উন্নতির শিখরে। শুধু নিজের জন্য নয়, পুরো একটা জাতির রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে জয়নাল আবেদীন। অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রার সুব্যবস্থা হিসেবে, ‘সাতভিটা গ্রন্থনীড়' প্রতিষ্ঠা হয়।
২০১১ সালের নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখ ‘সাতভিটা গণপাঠাগার’ নামে এর কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৪ সালে সংগত কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এবং মাঝামাঝি ৫টা বছর জয়নাল আবেদীনকে ক্রমে ক্রমে তাড়না করতে থাকে। বাড়ি বাড়ি পাঠকের কাছে বই পৌঁছে দিতেন। এভাবেই বইয়ের আদান-প্রদান ঘটতে থাকে। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে ‘সাতভিটা গ্রন্থনীড়' পুনরায় নতুনত্বের দিশা খুঁজে পায়। ‘সাতভিটা গণপাঠাগার’ থেকে হয়ে ওঠে ‘সাতভিটা গ্রন্থনীড়।’ পাঠাগার উদ্যোক্তা জয়নাল আবেদীন তাঁর চিন্তা-চেতনায় একদল বইপ্রেমী মানুষ গড়তে পেরেছেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘একদল আমাকে উৎসাহ দেয়, সমর্থন যুগিয়ে বলে এসব কাজ করা দরকার আর একদল লোক আমাকে বলে ‘ছিটেরু’ বা প্রমিত বাংলায় পাগল।’’ এই বইপ্রেমী পাগল লোকটিই আজ আমাদের পথের দিশা খুঁজে দিয়েছেন।
তিনি ‘ছোটনদী’তে স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন... “মানুষের জীবন তো স্রোতের মতো, তার গতিপথ মাঝে মাঝে বদলায়। গাজীপুরের ইট ভাটার কষ্টকর দিনগুলো থেকে মুক্তি পেতে ভাবলাম নিজের গ্রামে গিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। এই বোধ কাজ করার পর আমি মাঝে মাঝে গ্রামে আসা-যাওয়া করতে লাগলাম। পারিবারিক চাপও কিছুটা ছিলো, আমার মনেরও চাপ কিছুটা ছিল বিধায় ২০১৬ সালে আমার নিজ গ্রামে সাতভিটায় ফিরে আসি। স্থায়ীভাবে ফিরে আসার আগেই, আসা-যাওয়ার মাঝেই সাতভিটায় আমি বইপড়া আন্দোলন শুরু করেছিলাম।”
বই পড়তে মানুষকে উৎসাহ এবং একত্রিত করা খুব জটিল ব্যাপার। মানুষ বই পড়তে চায় না। সারাক্ষণ বইয়ের নামে তালবাহানা দিয়ে পালিয়ে বাঁচতে চায়। কিন্তু জয়নাল আবেদীন সবাইকে একটি জায়গায় ধরে এনে উর্বর মস্তিষ্ক গড়ার সাধনায় ব্রতী হয়েছেন। তাঁর সাথে কথা বলে জানা যায়, এখন পর্যন্ত নিয়মিত অনিয়মিত মিলে মোট পাঠক ৬০০+ প্রতিনিয়ত পাঠাগারে আসেন ১৮/২২ জন। ভ্রাম্যমান হিসেবে নিজ ইউনিয়নের ৪টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্কুল চলাকালীন সময়ে বই নিয়ে বসেন। লোকে বলে, ইচ্ছে থাকলে সবই পারা যায়, তিনি পেরেছেন। যখন দেখি বিমানবন্দর থেকে শুরু করে ঢাকার বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সামনে বড় বড় ব্যানারে টাঙানো জয়নাল আবেদীনের ছবি তখন গর্ব করে বলতে হয়, আমরাও পারবো।
বর্তমান সময়ে পাঠাগার আন্দোলনের সাথে যারা জড়িত তাদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন একদমই অন্যরকম। সাদামাটা মনের মানুষটিকে দেখে কখনই আপনার মনে হবে না যে তার ভিতরে জাগরণের এতটা উচ্ছাস। পোশাক দেখে বাইরে থেকে বোঝা মুশকিল লোকটি আসলে অসম্ভব রকম জ্ঞানী। যেখানে কিছু কিছু মানুষ নিজের প্রয়োজনে পাঠাগারকে আলোকিত তকমা লাগিয়ে স্বার্থের পিছে পিছে ছুটছেন, সেখানে তিনি খেটে খাওয়া টাকা দিয়ে অন্যের প্রয়োজনে ব্যায় করছেন। এই পাঠাগার না করলেও জয়নাল আবেদীনের তেমন কোন ক্ষতি হতো না কিন্তু আমাদের মতো অর্বাচীন জাতি আলোর পথ থেকে বঞ্চিত হতো। আমরা পাঠক বিমুখ জাতি কুসংস্কার, গোঁড়ামি ও প্রথাগত কারণে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছি। আমাদের বিশ্বাসে সত্যের সাথে সাথে বিশ্বাসের যে ভাইরাস উৎপন্ন হয় তা থেকে আমরা সহজে নিস্তার পাই না, এর জন্য বই একান্ত জরুরি একটা মাধ্যম যার মাধ্যমে সত্যের উপলব্ধি খানিকটা কার্যকর প্রাপ্ত হয়।
★ সাক্ষাৎকার — জয়নাল আবেদীন ( পাঠাগার উদ্যোক্তা, সাতভিটা গ্রন্থনীড়, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ )
[ সাক্ষাৎকারটি অর্ন্তজালের মাধ্যমে কবি অন্তর চন্দ্র নিয়েছেন]
অন্তর চন্দ্র: শুভ বিকেল। ভালো আছেন তো? জয়নাল আবেদীন: শুভ বিকেল । জ্বি ভালো আছি।
অন্তর চন্দ্র: আমি আপনার ‘সাতভিটা গ্রন্থনীড়’ সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক। জয়নাল আবেদীন: জ্বি বলুন, কি জানতে চান!
অন্তর চন্দ্র: আপনার বই পড়ার শুরুটা কখন? জয়নাল আবেদীন: আমার বই পড়ার শুরুটা শখের বসে। আপনারা জানেন যে আমি জীবন জীবিকার তাগিদে দেশের বিভিন্ন জেলায় কাজ করতাম আমি সবচেয়ে বেশি কাজ করতাম ইটভাটায়। এই কাজটি চলতো মধ্য রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত দুপুরের পর আমাদের লম্বা একটা সময় বেচে যেত। এই সময়টিতে আমার যারা সহকর্মী ছিল তারা বাজারে চা খাওয়া টিভি দেখা বিভিন্ন খোশগল্প করে কাটালেও আমি নিরুৎসাহিত ছিলাম এ ব্যাপারে। মানে বিকালের সময়টা কাটতো বেশ আনমনে। একদিন বাজারে ঘুরতে গিয়ে ফুটপাতের দোকানে সস্তা কিছু বইয়ের দেখা পেলাম। এবং সেটি দিয়েই আমার পড়া শুরু। তারপর যেখানে বইয়ের দোকান দেখেছি বই সংগ্রহ করেছি নিজে পড়ার জন্য। টাকার কথা চিন্তা করে পুরাতন বই আমার সবচেয়ে বেশি কেনা হয়েছে।
অন্তর চন্দ্র: কেন বই পড়বেন? —এর পেছনে নিজস্ব কোন কারণ আছে কি? জয়নাল আবেদীন: প্রথমে কিন্তু আমি বলেছি যে আমি শখের বসে বই পড়েছি। আমার মনে হয় আমরা যারা নবীন পাঠক তাদেরকে শখের বসেই বই পড়া শুরু করা দরকার। রবীন্দ্রনাথ তার ‘সাহিত্যের পথে’ বইটিতে বলেছেন... “যা কিছু আনন্দ দেয় মন তাকেই সুন্দর বলে আর এই সুন্দরই হচ্ছে সাহিত্যের সামগ্রী।” তার মানে শখের বসে আমি সুন্দরকে খুঁজবো সুন্দরের সাথে থাকতে থাকতে সুন্দরের ছোঁয়া পেতে পেতে আমি সুন্দর হয়ে উঠবো। আর নিজস্ব কারণ বলতে তেমন কিছু নাই আমার মনে হয় এক জীবনে অনেকগুলো সুন্দর জীবন-যাপনের উপায় হতে পারে বই পড়া। সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে ভালোবাসাবাসিতে গুরুত্ব বহন করে। রমাপদ চৌধুরীর খারিজ বইটির পেছনে লেখা আছে "সাহিত্যের সাথে জীবনের ভালোবাসাবাসির এক নিবিড় আলেখ্য। " সত্যি তাই।
অন্তর চন্দ্র: আপনাদের পাঠাগার কোথায় অবস্থিত? আমাদের সবার জন্য যদি আরেকবার বলতেন? জয়নাল আবেদীন: কুড়িগ্রাম শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার এবং উলিপুর থেকে ১৬ কিলোমিটার। গ্রাম : সাতভিটা, ডাকঘর : হিঞ্জুলী, ইউনিয়ন :বুড়াবুড়ী, উপজেলা :উলিপুর, জেলা :কুড়িগ্রাম।
অন্তর চন্দ্র: আপনার পাঠাগার করার ভাবনা কোত্থেকে এলো? জয়নাল আবেদীন: প্রথমে আমি কখনোই ভাবিনি যে পাঠাগার করবো। কেননা আমার বই পড়া শুরু হয়েছে সস্তা বই দিয়ে। তারপর যখন পড়লাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’ কি দারুণ প্রেম অমিত-লাবণ্যর। যখন শ্রীকান্ত পড়লাম কৈশোরের দূরন্তপনা দেখে বিস্মিত হয়েছিলাম। আবার যখন সুনীলের ‘ছবির দেশে কবিতার দেশে’ পড়লাম তখন চোখের সামনে ভেসে উঠেছিল প্যারিসের লুভর মিউজিয়াম। এই যে নানা দেশ ও জাতির বৈচিত্র্যময় জীবন সম্পর্কে জানা বিভিন্ন মনীষীদের জীবনী পাঠের মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করা এটি কেবল বইয়ের মাধ্যমে হতে পারে। আর আমরা হলাম পাঠক বিমুখ জাতি। তাই পাঠাগার হলে, এই বইগুলো হয়তো খুব সহজে হাতের কাছেই পাবে। এতে করে যদি শিক্ষার্থীরা কেউ না কেউ বই নিয়ে পড়ে সামান্যতম উপকৃত হয়। এ চিন্তা থেকে পাঠাগার করা।
অন্তর চন্দ্র: আপনি তো নিজের পেটের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাহলে পাঠাগারের চাহিদা পূরণ করেন কিভাবে? জয়নাল আবেদীন: আমি জানি এভাবে চলতে থাকলে কখনোই আমার অর্থাভাব দূর হবে না। তবুও মনকে শান্ত রাখি সন্তুষ্ট থাকার অভয় দেই। নিজের সামান্য অর্জিত বোধবুদ্ধি থেকে। পাঠাগার চালিয়ে যাওয়া এ বিষয়টি আসলে বলা যায় আমার সাথে মিশে গেছে।
অন্তর চন্দ্র: আপনার পাঠাগার সম্বন্ধে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় কথাটা কি? জয়নাল আবেদীন: যে স্বপ্ন নিয়ে চলছি একটি পাঠক সমাজ গড়ে তো আপাতত এটি জরুরি।
অন্তর চন্দ্র: প্রথম যখন পাঠাগার প্রতিষ্ঠা হয় ২০১১ সালের ১৫ নভেম্বর এবং তার চার বছর পর অর্থাৎ ২০১৪ সালে সংহত কারণে বন্ধ হয়ে যায়। তারপর আবারো ২০১৮ সালে পাঠাগারের কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়। এর মাঝামাঝি ৫ বছর কি আপনার মাথায় পাঠাগারের চিন্তা আসেনি? জয়নাল আবেদীন: এসেছে কিন্তু সাধ থাকলেও সাধ্য ছিল না। ১.নিজে বাড়ীতে থাকতে পারতাম না বলে পাঠাগার দেখা শোনার কাজ করার লোক ছিল না। ২. পাঠাগারের ঘর করার মত জায়গাও ছিল না আমার। তারপর চ্যালেঞ্জ গ্রহন করি জায়গা কিনে ঘর করবো। দীর্ঘ সময় ও রক্ত ঘামে ভেজানো টাকায় জায়গা ও ঘর হয়।
অন্তর চন্দ্র : এখন পর্যন্ত কতজন পাঠক প্রতিনিয়ত পাঠাগারে আসেন? জয়নাল আবেদীন: আমাদের এখন পর্যন্ত নিয়মিত অনিয়মিত (যে একটি হলেও বই নিয়েছে) মিলে মোট পাঠক ৬০০+ প্রতিনিয়ত পাঠাগারে আসেন ১৮/২২ জন। অন্তর চন্দ্র: এখন পর্যন্ত বই সংগ্রহের সংখ্যা কত? জয়নাল আবেদীন: ৪১৭০ টি বই ইতিমধ্যে সংগ্রহ করেছি। আশাকরি, ভবিষ্যতে সংখ্যাটা আরও বাড়বে।
অন্তর চন্দ্র: আমরা জানি আপনি পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন এবং পাঠাগার আন্দোলনের জন্য ইতিমধ্যেই সারাদেশে আলোচিত হয়েছে তাতে করে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন কি? জয়নাল আবেদীন: না, আসলে আমি নিজের সুযোগ-সুবিধার জন্য পাঠাগার করি নাই। আলোচিত হওয়াতে যে সুযোগ সুবিধা পেয়েছি তা হলো, —এ কাজের সমমনা অনেকগুলো মানুষ পেয়েছি যারা প্রতিমুহুর্তে আমাকে উৎসাহ উদ্দীপনা দেন। অন্তর চন্দ্র: ভবিষ্যতে পাঠাগার নিয়ে আপনার ভাবনা কি? জয়নাল আবেদীন: বইকে পাঠকের আরও কাছাকাছি নেওয়ার জন্য বর্তমান আমি একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভ্রাম্যমান হিসাবে প্রতি রবিবার দুপুর ০১টা থেকে ০২টা পর্যন্ত বই নিয়ে বসি। আমাদের ইউনিয়নে এরকম চারটি উচ্চ বিদ্যালয় আছে সেখানে বসা হয়। এবং আরো অনেক পরিকল্পনা আছে যা আস্তে আস্তে বাস্তবায়ন করবো।
অন্তর চন্দ্র: আপনাকে মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। জয়নাল আবেদীন: আপনাকেও ধন্যবাদ। 103.25.251.254 ০৬:২৭, ৬ অক্টোবর ২০২৪ (ইউটিসি)
বৈদ্যুতিক সিস্টেম
সম্পাদনাবৈদ্যুতিক সিস্টেম নিবন্ধে পুনর্নির্দেশনা করা হয়েছে কারণ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা নামে ইতোমধ্যে নিবন্ধ রয়েছে। পুনরায় এটা তৈরি করার অর্থ কি? কোন কিছু না বুঝলে আমাকে জানান। কিন্তু পুনরায় তৈরি করবেন না। ধন্যবাদ। ~মহীন (আলাপ) ০৯:২২, ২৫ অক্টোবর ২০২৪ (ইউটিসি)
- আচ্ছা, আমি আর পাতা তৈরি করব না। Sourav saha032 (আলাপ) ১০:৪৪, ২৫ অক্টোবর ২০২৪ (ইউটিসি)