বিলাই বিল বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের কানাইয়া এলাকায় অবস্থিত।ঢাকা কাছে উন্নত ভূমির যেসব বিল রয়েছে তন্মধ্যে বেলাই বিল রূপ-সৌন্দর্য্যে অনন্য।

৪০০ বছর পূর্বেও বেলাই বিলে কোন গ্রামের অস্তিত্ব ছিল না। খরস্রোতা চেলাই নদীর কারণে বিলটিও খরস্রোতা স্রোতস্বিনীরূপে বিরাজমান ছিল। কিংবদন্তি আছে, ভাওয়ালের ঐ সময়ের ভূস্বামী ঘটেশ্বর ঘোষ ৮০টি খাল কেটে চেলাই নদীর জল নিঃশেষ করে ফেলেন। তারপরই এটি প্রকাণ্ড বিলে পরিণত হয়।

বিশাল এই বিলটির কোনো কোনো স্থানে প্রায় সারাবছরই পানি থাকে, তবে বর্ষায় এর রূপ বেড়ে যায় অনেকাংশে। বর্ষা মৌসুমে জেলেরা বিলে চারপাশে ডাঙ্গি খনন করে। এখানে ধরা হয় মাছ। আর শুষ্ক মৌসুমে বিলটি হয়ে উঠে একফসলী জমিরূপে। তখন বোরো ধানের চাষাবাদ করা হয়। বর্তমানে বিলটির আয়তন আট বর্গমাইল এলাকায় বিস্তৃত হলেও পূর্বে আরও বড় ছিল। বাড়িয়া, ব্রাহ্মণগাঁও, বক্তারপুর ও বামচিনি মৌজার গ্রামগুলোকে ঘিরে রেখেছে এই বিলাই বিল।

পড়ন্ত বেলায় কানাইয়া বাজারের কাছে তৈরি হওয়া নতুন সেঁতুর ওপর দাঁড়িয়ে এর সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়। শাপলা-শালুকে ভরা বেলাই বিল। সাদা ও নীল শাপলার ছড়াছড়ি। নারীদের শস্য ঝাড়াইয়ের দৃশ্যও চোখে পড়বে। বিলে বুকে স্বচ্ছ টলটলে পানি। এখানকার গ্রামের মাটি লাল। লাল মাটিতে লাউ খুব ভালো জন্মায়। আর রয়েছে সারি সারি তালগাছ যা নৌকায় বসেদূরের তালগাছ দেখতে বেশ সুন্দর দেখায়।

ইঞ্জিনচালিত ও ডিঙি নৌকার দুটোই পাওয়া যায়। তবে ইঞ্জিনের শব্দের চেয়ে শব্দবিহীন ডিঙি নৌকাই উত্তম। বিলের চারপাশে দ্বীপের মতো গ্রাম। বামচিনি মৌজা বেলাই বিলের তেমনি একটি দ্বীপগ্রাম। এর বিশ্বেষত্ব হচ্ছে এক মৌজায় এক বাড়ি যা অন্য কোথাও আছে কি-না সন্দেহ!

কীভাবে যাবেন

সম্পাদনা

একদিনের ভ্রমণের জন্য দারুণ উপযোগী। যে কোন স্থান থেকে বাসে যেতে হবে গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত। সেখান থেকে জয়দেবপুর সদর। রিকশা বা টেম্পোতে কানাইয়া বাজার। বাজারের ঘাটে সারি সারি নৌকা বাঁধা। বর্ষাকালই ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। কানাইয়া বাজারে চা-বিস্কুট ছাড়া অন্য কিছু খাবারের ব্যবস্থা নেই। সুতরাং, বহনযোগ্য খাবার ও সাঁতারুদের সাথে নিন। নিজস্ব গাড়িতে টঙ্গী-পুবাইল থেকে কানাইয়া গেলে সময় বাঁচবে। সঙ্গে অতিরিক্ত পাওনা হিসেবে দুপাশের মনোরম পথসৌন্দর্যবোধ।