চন্দ্রনাথ মন্দির

সীতাকুণ্ড বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।

চট্টগ্রাম জেলা সদর থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার উত্তরে ২২°২২´ থেকে ২২°৪২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৩৪´ থেকে ৯১°৪৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত সীতাকুণ্ড উপজেলার আয়তন ২৭৩.৪৭ বর্গ কিলোমিটার। সীতাকুণ্ড থানা গঠিত হয় ১৯৭৯ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। সীতাকুণ্ড উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়ন রয়েছে।

প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ ও ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, প্রাচীন কালে এখানে মহামুণি ভার্গব বসবাস করতেন। অযোদ্ধার রাজা দশরথের পুত্র রামচন্দ্র তাঁর বনবাসের সময় এখানে এসেছিলেন। মহামুণি ভার্গব তাঁরা আসবেন জানতে পেরে তাঁদের স্নানের জন্য তিনটি কুণ্ড সৃষ্টি করেন এবং রামচন্দ্রের এখানে ভ্রমণ কালে তাঁর স্ত্রী সীতা এই কুণ্ডে স্নান করেন। এই কারণেই এখানকার নাম সীতাকুণ্ড বলে অনেকের ধারণা।

২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সীতাকুণ্ড উপজেলার জনসংখ্যা ৩,৩৫,১৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১,৮২,২২৩ জন এবং মহিলা ১,৫২,৯৫৫ জন। এ উপজেলার ৮৬% লোক মুসলিম, ১৩% হিন্দু এবং ১% বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

প্রবেশ

সম্পাদনা

সড়কপথে

সম্পাদনা

চট্টগ্রাম শহরের অলংকার মোড় এলাকা থেকে ঢাকা ট্রাঙ্ক রোড হয়ে বাস বা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যোগে সীতাকুণ্ড যাওয়া যায়।

রেলপথে

সম্পাদনা

চট্টগ্রাম শহরের বটতলী রেলস্টেশন থেকে রেলযোগেও সীতাকুণ্ড যাওয়া যায়।

মানচিত্র
সীতাকুণ্ডের মানচিত্র
ব্যাস কুন্ড
বাড়ৈয়াঢালা জাতীয় উদ্যান
সহস্রধারা
গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত
  • অক্ষয়বট ব্যাসকুণ্ডের পশ্চিম পাড়ে এবং ভৈরব মন্দিরের বাম পাশে একটি বিশালাকৃতির বটগাছ রয়েছে, যা অক্ষয় বট নামে পরিচিত।
  • বারৈয়াঢালা আশ্রম (নারায়ণ আশ্রম)। সীতাকুণ্ড সদর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে বারৈয়াঢালা নামক স্থানে বারৈয়াঢালা আশ্রম অবস্থিত। শ্রীমৎ স্বামী মাধবানন্দ মহারাজ এই আশ্রমটি প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে সারাবছর ধরে প্রতিদিন ভগবান শ্রী নারায়ণ দেবের পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
  • ব্যাস কুন্ড, মন্দির সড়ক, চন্দ্রনাথ ধাম "পুরাণ" অনুযায়ী মহামুনি ব্যাসদেব এবং অন্যান্য ঋষিগণসহ এখানে অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন। স্থানীয় জনশ্রুতি রয়েছে যে, শিবচতুর্দশী তিথিতে সয়ম্ভূনাথ মন্দির দর্শন করার আগে এই কুণ্ডে স্নান করতে হয়। পূর্বে এটি প্রায় ৬ বর্গফুট আকারের ছিল, কিন্তু তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে এটি এখন পুকুরের আকারে পরিবর্তিত করা হয়েছে।
  • 1 ভাটিয়ারী লেক, ভাটিয়ারী (ভাটিয়ারী বাস ষ্টেশন থেকে বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমী , গলফ ক্লাব সংলঘ্ন)। সীতাকুণ্ডের অন্তর্গত একটি পর্যটন এলাকা উইকিপিডিয়ায় ভাটিয়ারী (Q18988569)
  • 2 চন্দ্রনাথ পাহাড় উইকিপিডিয়ায় চন্দ্রনাথ পাহাড় (Q13060051)
  • সহস্রধারা ঝর্ণা, ছোটদারোগার হাট (ছোট দারোগার হাট বাজার থেকে রাস্তার পূর্ব পার্শ্ব দিয়ে রিকশায় পাহাড়ের পাদদেশ পর্যন্ত পৌঁছে, এরপর পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হবে।)। উইকিপিডিয়ায় সহস্রধারা ঝর্ণা (Q55232286)
  • ঝড়ঝড়ি ঝর্ণা (ঝরঝরি ঝর্ণা)। উইকিপিডিয়ায় ঝরঝরি ঝর্ণা (Q106646952)

উদ্যান

সম্পাদনা

স্থাপত্য

সম্পাদনা
  • অন্নপূর্ণা ও বিষ্ণু মন্দির সয়ম্ভূনাথ মন্দিরের উত্তর পাশে অন্নপূর্ণা ও বিষ্ণু মন্দির অবস্থিত।
  • চন্দ্রনাথ মন্দির (প্রায় ৩ কি: মি: পাহারের উপরের উঠতে হবে।)। চন্দ্রনাথ মন্দির অন্যতম শক্তিপীঠ। সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চুড়ায় এই মন্দির অবস্থিত। এখানে হিন্দু পবিত্র গ্রন্থ অনুসারে সতী দেবীর দক্ষিণ হস্তার্ধ পতিত হয়েছিল। এই মন্দিরে প্রতিবছর শিবরাত্রি তথা শিবর্তুদশী তিথিতে বিশেষ পূজা হয়; এই পূজাকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ডে বিশাল মেলা হয়।
  • বাড়বকুণ্ড বাড়বাকুণ্ড রেলস্টেশন থেকে প্রায় এক মাইল পূর্বে পাহাড়ঘেরা মনোরম স্থানে বাড়বাকুণ্ড মন্দির অবস্থিত। এটি একটি দোতলা মন্দির, যার নিচতলায় বাড়বাকুণ্ড কুণ্ডটি অবস্থিত। মন্দিরের উত্তর পাশে রয়েছে বাসীকুণ্ড, আর তার ঠিক পাশেই কাল ভৈরব মন্দির। বাসীকুণ্ডের পানি ফুটন্ত গরম জলের মতো শব্দ করে। স্থানীয়রা একে "অগ্নিপ্রসবন" নামেও অভিহিত করেন, যা এ জায়গার একটি বিশেষ আকর্ষণ।
  • সম্ভুনাথ মন্দির (সীতাকুন্ড কলেজ রোড দিয়ে ১ কি.মি. ভিতরে)।
  • বিরুপাক্ষ মন্দির শিব মন্দির। সয়ম্ভূনাথ মন্দির থেকে চন্দ্রনাথ মন্দিরে যাবার পথে এ মন্দিরটি দেখা যাবে।

সীতাকুণ্ড পৌরসভা, কুমিরা, ফৌজদাররহাট ইত্যাদি এলাকায় যে কোন রেস্টুরেন্টে সুলভ মূল্যে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

রাত্রিযাপন

সম্পাদনা

সীতাকুণ্ড চট্টগ্রাম মহানগরীর খুব কাছে হওয়ায় ভ্রমণ শেষে মহানগরীর যে কোন জায়গায় সুলভে থাকতে পারেন। এছাড়া সীতাকুণ্ডে থাকার জন্য সরকারি পরিচালনাধীন উপজেলা পরিষদ ডাক বাংলো ছাড়াও ব্যক্তি মালিকানাধীন হোটেল রয়েছে।

  • 1 হোটেল ডায়মন্ড পার্ক, +৮৮০ ১৮১২-৯৬৫২৫২ আগমন: ১২.০০, প্রস্থান: ১২.০০
  • 5 গ্রীন হাউস রেসিডেন্টশিয়াল হোটেল, বাস স্ট্যান্ড, বিবির হাট ৪৩৫০, বাংলাদেশ, +৮৮০ ১৭৬৫-৪০৪১৪০