এই পাতাটি অপসারণের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। অপসারণ নীতিমালাটি পড়ে, উইকিভ্রমণ:অপসারণ ভোটাভুটি পাতায় আপনার মতামত দিন। আলোচনাটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত দয়া করে এই বিজ্ঞপ্তিটি সরিয়ে ফেলবেন না। আপনি যদি এই নিবন্ধের লেখক হন তবে মনে রাখবেন, এই মনোনয়নটি আপনার কাজের সমালোচনা নয়, বরং এটি আপনার নিবন্ধের শিরোনাম বা বিষয় উইকিভ্রমণের নিবন্ধের মানদণ্ড পূরণ করতে পারে কিনা তার একটি বিজ্ঞপ্তি। |
করমজল পর্যটন কেন্দ্র সুন্দরবনের পশুর নদীর তীরে অবস্থিত। বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে ৩০ হেক্টর জমির উপর পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। প্রকৃতির শোভা বাড়াতে এখানে রয়েছে কুমির, হরিণ, রেসাস বানরসহ নানা প্রজাতির পশুপাখি। এছাড়াও নির্মিত হয়েছে কাঠের ট্রেইল এবং টাওয়ার। জেলেদের মাছ ধরার কর্মজজ্ঞ এই পর্যটন কেন্দ্রে অতিরিক্ত প্রাপ্তি। বাংলাদেশের একমাত্র কুমিরের প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্রটি করমজলে অবস্থিত।
বর্ণনা
সম্পাদনামংলা থেকে ইঞ্জিন চালিত জালিবোট/লাইফবোটে করে করমজল পর্যটন কেন্দ্রে পৌঁছাতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। পর্যটন কেন্দ্রের প্রথমেই রয়েছে সুন্দরবনের মানচিত্র, যা সুন্দরবন সম্পর্কে মানচিত্রে প্রাথমিক ধারণা দেয়। সামনে আঁকাবাঁকা কাঠের তৈরি মাঙ্কি ট্রেইল নামের হাঁটা পথ ধরে এগিয়ে গেলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্রের সমৃদ্ধতা সম্পর্কে অনুমান করা যায়। এই পথে এগিয়ে পশুর নদীর দেখা পাওয়া যায় চাইলে সেখানে নির্মিত বেঞ্চে বসে বিশ্রাম নেওয়া যাবে। সেখান থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দক্ষিণে পথের মাথায় একটি শেড রয়েছে। এই জায়গা থেকে পশ্চিম দিকে আরও একটি কাঠের নির্মিত ট্রেইল দেখতে পাওয়া যাবে। এই পথ আপনাকে নিয়ে যাবে কুমির এবং হরিণ প্রজনন কেন্দ্র এবং পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে। এই টাওয়ার থেকে আশেপাশের সৌন্দর্য্য দেখা যাবে। ওয়াচ টাওয়ার পাশ থেকে যাওয়া যায় ঝুলন্ত ব্রীজে যা আরো ১কিলোমিটার গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। এই ব্রীজ ধরে হাটলে শরীরে শিহরন জেগে ওঠে।
প্রবেশ মূল্য
সম্পাদনাবাংলাদেশি ও বিদেশি পর্যটকের জন্য করমজল পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ মূল্য যথাক্রমে ৪৬ টাকা এবং ৫৭৫ টাকা। বাংলাদেশি ছাত্র ও গবেষকরা ৫০ ও ৫৭ টাকার বিনিময়ে প্রবেশ করতে পারেন। অবশ্য বিদেশি গবেষকদের করমজলে প্রবেশের জন্য ৯২০ টাকা দিতে হয়। বারো বছরের নিচে যেকেউ করমজলে প্রবেশ করতে ২৩ টাকার টিকেট কাটতে হবে। ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশের জন্য এখানে ক্যামেরাপ্রতি অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। বাংলাদেশীদের জন্য এই চার্জ ৩৪৫ টাকা এবং বিদেশি জন্য ৫৭৫ টাকা। এবং দেহরক্ষী হিসেবে একজন গান ম্যান নিলে তার ৫৭৫ টাকা দিতে হয়।
যাতায়াত
সম্পাদনাঢাকার গাবতলী কিংবা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে মেঘনা পরিবহন (০১৭১৭১৭৩৮৮৫৫৩), পর্যটক পরিবহন (০১৭১১১৩১০৭৮) সাকুরা পরিবহন (০১৭১১০১০৪৫০), সোহাগ পরিবহন (০১৭১৮৬৭৯৩০২) ইত্যাদি বাসে বাগেরহাট যেতে হবে। নদীপথে খুলনা থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার এবং মংলা থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে এই পর্যটন কেন্দ্রটি অবস্থিত। তাই বাগেরহাটের মংলা বন্দর থেকে করমজল যাবার নৌযান ভাড়া করতে হয়। এছাড়া মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা এবং খুলনার রূপসা থেকেও করমজল পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়া যায়।
তবে সবচেয়ে ভাল হয় সায়দাবাদ বাস স্ট্যান্ড থেকে সরাসরি মংলা যাওয়ার বাসে করে যাওয়া। মংলা ফেরি ঘাট থেকে ১০ জনের উপযোগী ইঞ্জিন চালিত নৌকার ভাড়া করা যায় তাহলে খরচ সাশ্রয় হবে।
রাত্রিযাপন
সম্পাদনাসুন্দরবনে রাত কাটাতে চাইলে পর্যটন জাহাজে রাত কাটানো যায়। এছাড়া হিরণপয়েন্টের নীলকমল, টাইগার পয়েন্টের কচিখালী এবং কাটকায় বন বিভাগের রেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করা যাবে। নীলকমল ও কচিখালীতে কক্ষ প্রতি ৩০০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। তবে কচিখালীতে ৪ কক্ষ ভাড়া নিলে ১০,০০০ টাকায় থাকা যাবে। কটকা রেস্ট হাউজে রুম নিতে লাগে ২০০০ টাকা। বিদেশি ভ্রমণকারীদের এই সব রেস্ট হাউজে রাত কাটাতে রুম প্রতি ৫০০০ টাকা দিতে হয়।
করমজল পর্যটন কেন্দ্র থেকে দিনে ফিরে আসলে মংলায় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মোটেল পশুরে থাকা যাবে। এছাড়াও মংলা শহরে সাধারণ মানের হোটেলগুলো আছে। খুলনা ফিরে এলে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল পাওয়া যাবে থাকার জন্যে।
সতর্কতা
সম্পাদনাকরমজল যেতে পশুর নদী পাড়ি দিতে হয়। এই নদী সবসময়ই কম-বেশি উত্তাল থাকে। তাই ভালো মানের ইঞ্জিন নৌকা নিয়ে যাওয়া উচিত। এছাড়া বন রক্ষী ছাড়া জঙ্গলের ভেতরে ঢুকবেন না। হরিণ ও কুমির প্রজনন কেন্দ্রের কোন প্রাণীকে খাবার দিবেন না।