খুলনা জেলা বাংলাদেশের একটি জেলা। এটি খুলনা বিভাগ এর অন্তর্গত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন খুলনা জেলায় অবস্থিত। এ ছাড়াও খুলনা জেলায় রয়েছে অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য। খুলনা জেলার উত্তরে যশোর ও নড়াইল জেলা; দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর; পূর্বে বাগেরহাট জেলা এবং পশ্চিমে সাতক্ষীরা জেলা রয়েছে। এর আয়তন ৪৩৯৪.৪৫ কিমি²।
কীভাবে যাবেন?
সম্পাদনাসড়কপথে
সম্পাদনাঢাকা থেকে খুলনা সাধারনত সড়ক পথেই যাতায়াত করা হয়ে থাকে। ঢাকা থেকে খুলনা জেলায় সড়ক পথে যাতায়েত করতে সময় লাগে ৮ থেকে ৯ঘন্টা, তবে ফেরী পারাপারের সময় যানজট থাকলে সময় বেশি লাগে। গাবতলী ও সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে বেশ কয়েকটি বাস খুলনার উদ্দেশ্য ছেড়ে যায়। এ সব বাস গুলোর মধ্যে পর্যটক পরিবহন, দিগন্ত পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, সুন্দরবন সার্ভিস প্রা: লি: দ্রুতি পরিবহন, আরা পরিবহন ও সোহাগ পরিবহন অন্যতম। খুলনা রুটের অনেক গাড়ি লঞ্চে যাত্রী পারাপার করে থাকে। লঞ্চে যাতায়াত করলে সময় ও অর্থ দুটোই কম লাগে। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে যমুনা সেতু হয়ে খুলনা ট্রেন যোগে ভ্রমণ করা যায়। এই রুটের ট্রেন গুলোর মধ্যে চিত্রা ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস এর মধ্যে অন্যতম।
আকাশ পথে
সম্পাদনাজল পথে
সম্পাদনাদর্শনীয় স্থান
সম্পাদনা- সুন্দরবন - সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনভূমি হিসেবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বনভূমি সুন্দরবন। অববাহিকার সমুদ্রমূখী সীমানা এই বনভূমি গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মোহনায় অবস্থিত এবং বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিস্তৃত। ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে।
- দক্ষিণডিহি - বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূণ্যস্মৃতিবিজড়িত স্থান দক্ষিণডিহি। ফুল,ফল আর বিচিত্র গাছগাছালিতে ঠাসা সৌম্য-শান্ত গ্রাম দক্ষিণডিহি। খুলনা শহর থেকে ১৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ফুলতলা উপজেলা। উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে গেলে দক্ষিণডিহি গ্রাম। গ্রামের ঠিক মধ্যখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে রবীন্দ্র-মৃণালিনীর স্মৃতিধন্য একটি দোতলা ভবন। এটাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি।
- পিঠাভোগ - বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – এর পূর্ব পুরুষের নিবাস খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার পিঠাভোগ গ্রামে। খুলনা আঞ্চলিক প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদফতর এর পরীক্ষামূলক সমীক্ষায় পিঠাভোগ গ্রামে রবীন্দ্রনাথের পূর্ব পুরুষের ভিটার ভিত্তিপ্রস্তরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এখানে কবিগুরুর একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিবছর এখানে রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে।
- রাড়ুলী- বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পি,সি,রায়)– এর জন্মভূমি। ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী রাড়ুলীতে স্যার পি.সি. রায় জন্ম গ্রহণ করে ছিলেন। পি,সি,রায় ছিলেন একাধারে বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও শিল্পী। সমাজ সংস্কারে মানবতা বোধে উজ্জীবিত ছিলেন তিনি। তদানিন্তন সময়ে পল্লী মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমবায় ব্যাংক পদ্ধতি চালু করেন। ১৯০৯ সালে নিজ জন্মভূমিতে কো-অপারেটিভ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। চারটি গ্রামের নাম মিলে ১৯০৩ সালে বিজ্ঞানী স্যার পি,সি,রায় দক্ষিণ বাংলায় প্রথম আর,কে,বি,কে হরিশচন্দ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেন।
- সেনহাটি- খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি গ্রাম কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের জন্মস্থান। বাংলা সাহিত্যে কবির ‘দুটি কবিতা’ শীর্ষক ক্ষু্দ্র কবিতাটি কালজয়ী স্থান পেয়েছে। ‘যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি’ কিংবা ‘চিরসুখী জন ভ্রমে কি কখন ব্যথিত বেদন বূঝিতে পারে’ কবিতা বাঙালি জীবনে অবশ্যপাঠ্য হিসেবে বিবেচিত।
- বকুলতলা,জেলা প্রশাসকের বাংলো - বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – এর স্মৃতিধণ্য খুলনার জেলা প্রশাসকের বাংলো। ১৮৬০-১৮৬৪ সাল খুলনার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর থাকাকালীন সময়ে এই বাংলোই ছিল তাঁর বাসস্থান। ভৈরব নদের তীরে অবস্থিত এই বাংলোর বকুলতলায় বসেই কবি রচনা করেছিলেন তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস এবং বাংলা সাহিত্যের প্রথম প্রেমের উপন্যাস ‘কপালকুন্ডলা’।
খাওয়া দাওয়া
সম্পাদনারাত্রি যাপন
সম্পাদনাখুলনা জেলায় আবাসিক হোটেলের সংখ্যা রয়েছে ৭২টি। এর মধ্যে আছে ক্যাসল সালাম, হোটেল রয়্যাল, হোটেল মিলিনিয়াম, হোটেল পার্ক, হোটেল সান-ডে ইন্টাঃ, হোটেল শাহীন, হোটেল আলীশান, হোটেল বসুন্ধরা, হোটেল সোসাইটি, বৈশাখী হোটেল, হোটেল মুন, হোটেল পল্লবী, হোটেল কপোতাক্ষ, হোটেল জেলিকো, হোটেল প্যারাডাইস, হোটেল এনিটা, হোটেল রূপসী, হোটেল গ্লোরী, হোটেল মালেক ইন্টাঃ, হোটেল আর্কেডিয়া, হোটেল ন্যাশনাল, নিউ ধানসিঁড়ি, হোটেল মৌসুমী, হোটেল আরাফাত, হোটেল রাজমুকুট, হোটেল রজনীগন্ধা, হোটেল কদর, হোটেল অ্যাম্বাসেডর, হোটেল মিডনাইট, খুলনা হোটেল, হোটেল আরাম, সাতক্ষীরা হোটেল, হোটেল সানলাইট ইত্যাদি।
যোগাযোগ
সম্পাদনা- খুলনার মেট্রোপলিটন পুলিশ - কন্ট্রোল রুম, ২০২২০