হুয়াংহো নদী (চীনা: 黄河 Huáng Hé) চীনের প্রধান নদীগুলোর মধ্যে একটি। নদীটি চীনা সভ্যতার উৎসস্থল এবং ঐতিহাসিক পরিবহন পথ। এটি ইয়াংসি নদীর মতো তেমন গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র নয়। তবে কিছু মানুষের জন্য আকর্ষণীয় হতে পারে।
হলুদ নদী উত্তাল। নদীটির কিছু অংশ নৌযান চলাচলের উপযোগী এবং অন্যান্য অংশে স্রোত বেশ দ্রুত। এই নদীতে বহু ধ্বংসাত্মক বন্যা হয়েছে। এলাকাটিতে কয়েক হাজার বছর ধরে সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প চলে আসছে। কিন্তু পুরোপুরি সফল হয় নি।
জেনে রাখুন
সম্পাদনাহোয়াংহো নদী তীরে চীনা সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। শাং রাজবংশ ১৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জুড়ে এই নদীর চারপাশে একটি অঞ্চল শাসন করত। ঝৌ রাজবংশ (১০২৭-২২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) সাম্রাজ্যকে দক্ষিণে ইয়াংজি নদীর (চাং জিয়াং) অববাহিকা পর্যন্ত প্রসারিত করে।
হেবেই এবং হেনান প্রদেশের নাম এই নদীর নাম থেকে নেওয়া হয়েছে। "হে" অর্থ নদী এবং "বেই" ও "নান" অর্থ যথাক্রমে "উত্তর" ও "দক্ষিণ।
শহরসমূহ
সম্পাদনাহিমালয়ের পাদদেশে কুইংহাইয়ে - এ উৎপন্ন হয়ে নদীটি উত্তর দিকে ইনার মঙ্গোলিয়ার দিকে প্রবাহিত হয়। সেখানে এটি একটি বিশাল খিলানে প্রবাহিত হয়। খিলানটি কিছু দূর পর্যন্ত মহাপ্রাচীর এর সাথে কিছুদুর পর্যন্ত প্রবাহিত হয় এবং তারপর পূর্ব দিকে সাগরের দিকে বাঁক নেয়।
নদীটির উৎপত্তিস্থল থেকে সাগর পর্যন্ত চারপাশের শহরগুলোর তালিকাঃ
- কুইংহাইয়ের রাজধানী সিনিং - নদীটির একটি উপনদীতে অবস্থিত
- গানসুর রাজধানী লানঝৌ
- নিংজিয়ার রাজধানী ইয়িনছুয়ান
- উহাই - কৌশলগত অবস্থানে অবস্থিত যার ফলে একটি গিরিপথ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে
- ইনার মঙ্গোলিয়ার বৃহত্তম শহর বাওতোউ
- রাজধানী হোহোট - নদীর কাছাকাছি তবে নদীর উপর নয়
- মহান শহর শিয়ান - কিন, পশ্চিম হান এবং তাং রাজবংশের সময় চীনের রাজধানী ছিল। শহরটি প্রধান নদী পথে অবস্থিত নয়। নদীটির একটি উপনদীতে অবস্থিত
- সানমেনঝিয়া - ওয়েই উপত্যকা এবং উত্তর চীন সমভূমির মধ্যে অবস্থিত একটি কৌশলগত শহর। এই শহরেই তাওবাদের জন্ম হয়েছিল
- হেনানের রাজধানী ঝেংঝৌ
- পূর্ব হান রাজবংশের রাজধানী লুয়য়াং - এই নদীপথে পথে নয়। এর একটি উপনদীতে অবস্থিত
- উত্তর সঙ রাজবংশের ঐতিহাসিক রাজধানী কাইফেং
- শানডংয়ের রাজধানী জিনান - সাগরের কাছাকাছি নদীর ওপরে অবস্থিত
- দংইং - শানডংয়ে ইয়েলো রিভার ডেল্টায় অবস্থিত একটি শহর আরও অনেক ছোট শহরও রয়েছে।
এছাড়াও আরও অনেক ছোট শহর রয়েছে।
শত বছর ধরে নদীটি একাধিকবার তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। সর্বশেষ গতিপথ পরিবর্তন করে ১৮৫৩ সালে হয়। এতে নদীটির মোহনা শানডং প্রদেশের দৈর্ঘ্য পর্যন্ত স্থানান্তরিত হয়। আজ জিনানের নিচের অংশটি উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয় এবং শানডং উপদ্বীপের উত্তরে সাগরে মিশেছে। ১৮৫৩ সালের আগে এটি দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হত এবং উপদ্বীপের অপর দিকে কিংদাওয়ের হতে অনেক দক্ষিণের একটি সাগরে মিশত।
প্রস্তুতি
সম্পাদনাঅঞ্চলটির বেশিরভাগ জায়গা বিদেশি পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত নয়। আপনি চীনা ভাষায় কথা বলতে না পারলে আপনার অন্তত একটি শব্দগুচ্ছ আছে এমন বইয়ের প্রয়োজন হবে। তবে দোভাষী সহায়ক থাকলে ভালো হয়। সম্ভব হলে, যাত্রা শুরুর আগে কিছু চীনা ভাষা শিখে নিন।
প্রবেশ
সম্পাদনাযেভাবে ঘুরবেন
সম্পাদনাপুরো এলাকাজুড়ে ট্রেন চলাচল করে। পশ্চিম চীনের (শিনজিয়াং, চিংহাই, গানসু) সব ট্রেনই লানঝৌ শহরের মধ্য দিয়ে যায়। লানঝৌ ইয়েলো নদীর তীরে অবস্থিত। বেইজিং-লানঝৌ "উত্তর পথ" ইয়েলো নদীর অর্ধেক পথ দিয়ে যায়। বেইজিং থেকে তিব্বত পর্যন্ত চিংহাই হয়ে যাওয়া ট্রেন এই নদীর তীরের বেশ কয়েকটি শহরের মধ্য দিয়ে যায়। নদীর কিছু অংশে নৌকাও পাওয়া যায়।
ধনী ভ্রমণকারীরা গাড়ি ও চালক ভাড়া করতে পারেন, আরও জানতে দেখুন চীনে গাড়ি চালানো। অন্যরা বাস ব্যবহার করতে পারেন, মাঝের কিছু এলাকায় জন্য ট্রেন বা নৌকা ব্যবহার করাও যেতে পারে।
সাবধানে থাকুন
সম্পাদনাচীনের যেকোনো স্থানে প্রতারণা ও পকেটমারদের থেকে বাঁচতে সাধারণ সতর্কতাগুলো মানা উচিৎ।
পরবর্তী গন্তব্য
সম্পাদনাএই রুটের ভিতরের প্রান্ত হতে আপনি পশ্চিমে সিল্ক রোডে (লানঝো প্রধান রুটে অবস্থিত) যেতে পারেন, দক্ষিণ-পূর্বে ঘুরে শি'আনে পৌঁছাতে পারেন, অথবা একটু পশ্চিমে গলমুড যেতে পারেন। গলমুড থেকে তিব্বতে যেতে পারেন।
{{#assessment:ভ্রমণপথ|রূপরেখা}}