সউল বা সিউল একটি রাজধানী শহর যা এশিয়া মহাদেশের অন্তর্গত।

পর্যটন সম্পাদনা

বৈশিষ্ট্য সম্পাদনা

ভূগোল সম্পাদনা

ইতিহাস সম্পাদনা

ভাষা সম্পাদনা

কোরীয় ভাষা হল দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি ভাষা। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার পর্যটনকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে দর্শনীয় স্থানগুলোতে চীন ও জাপানি ভাষার পাশাপাশি ইংরেজিতেও তথ্য প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সউল সাবওয়েতে চার ভাষায়ই তথ্য প্রদান করা হয়। জনসাধারণ এখনও ইংরেজি ভাষায় সহজ হতে পারেনি তবে সউল শহরের শিক্ষিত যুবসমাজ কথোপকথন চালানোর মত কমবেশি ইংরেজি পারে।

যোগাযোগব্যবস্থা সম্পাদনা

আকাশপথ সম্পাদনা

দেশের প্রধান দুইটি বিমানবন্দর সউল শহর ঘেঁষেই অবস্থিত। ইনছন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও গিমপো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাথে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই সরাসরি বিমান যোগাযোগ রয়েছে। সরাসরি বাস কিংবা ট্রেনে করে এই দুই বিমানবন্দর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার যেকোন অঞ্চলে যাওয়া যায়। এছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়ার শহরগুলোতে অবস্থিত অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরেও সরাসরি ফ্লাইটের ব্যবস্থা রয়েছে। সউল থেকে জেজু দ্বীপগামী বিমানে সংখ্যা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের মধ্যে সর্বোচ্চ।

স্থলপথ সম্পাদনা

সউলের সাথে দেশের অভ্যন্তরে যেকোন শহরে স্থলপথে যোগাযগের জন্য বাস ও ট্রেন উভয়ই জনপ্রিয়। দেশের গুরুত্বপূর্ন মেট্রো শহরের সাথে অত্যাধুনিক দ্রুতগতি সম্পন্ন ট্রেন লাইন রয়েছে। এই লাইনের টিকেটের দাম স্বাভাবিকভাবেই তুলনামূলকভাবে দামী। সাধারণ গতির ট্রেনের লাইন বিস্তৃত এবং ছোট বড় প্রায় সব শহরগামী। দুইটি প্রধান আন্তঃবাস টার্মিনাল রয়েছে সউল শহরে। ট্রেনের মত, বাসেরও রয়েছে রকমফের। সউলের সাথে অন্যান্য শহরের যাতায়াতের ক্ষেত্রে সাধারণ, ইকোনমি এবং প্রিমিয়াম তিন ধরনের বাস সার্ভিস উপলব্ধ। এক্ষেত্রে সেবার ভিন্নতা যাতায়াত সময়ের ক্ষেত্রে খুব একটি ভিন্নতা আনে না।

সউল শহরের ভিতরে যাতায়াতের জন্য সাবওয়ে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সেবা। শহর জুড়ে বাস সেবা থাকলেও সাবওয়ে অপেক্ষাকৃত দ্রুততর এবং বিস্তৃত।

ইলেক্ট্রিক কার্ড বা টি-মানির মাধ্যমে বাস এবং সাবওয়ে উভয়তেই ভাড়া পরিশোধ করা যায়। বাসের ভাড়া নগদ ক্যাশে পরিশোধ করা সম্ভব হলেও সাবওয়ের টিকেট প্রতি স্টেশনে থাকা ভেন্ডিং মেশিন থেকে কিনতে হয়। টি-মানি বা ইলেক্ট্রিক কার্ডে ভাড়া পরিশোধে বিশেষ ছাড়ের সুবিধা আছে। মধ্যরাতে রাত্রীকালীন বাস ছাড়া সকল জনপরিবহন সেবা বন্ধ থাকে। এছাড়াও এই শহরে ট্যাক্সি সহজলভ্য। স্থানীয় জনগনের মধ্যে মোবাইল এপ "কাকাওট্যাক্সি" ব্যবহার করে ট্যাক্সি ভাড়া নেয়ার প্রবণতা বেশি। টাক্সি ভাড়া শুরু হয় ২৮০০ ওন (প্রায় ২.৫ ডলার) থেকে, যা মধ্যরাতে কিছুটা বৃদ্ধি পায়। ট্যাক্সি ভাড়াও টি-মানি বা নগদে পরিশোধ যোগ্য।

সউল শহরের মধ্যে স্বল্প দূরত্বের যাতায়াতের জন্য বাইসাইকেল ভাড়া করা যায়। গুরুত্বপূর্ন বাসস্টপের পাশেই থাকা সারিবদ্ধ বাইসাইকেল থেকে ইলেক্ট্রিক কার্ড (যা আঞ্চলিকভাবে টি-মানি কার্ড নামে পরিচিত) দিয়ে বাইসাইকেল ভাড়া করা যায়। সড়কের পাশে ফুটপাথ সংলগ্ন বাইসাইকেল চলার জন্য আলাদা রাস্তা নকশা করা আছে।

নৌপথ সম্পাদনা

চীন থেকে ইনচন বন্দরে সরাসরি ফেরির প্রচলন আছে। বর্তমানে জাপান থেকে সউলে সরাসরি কোন ফেরির যাতায়াত নেই। সউল শহর থেকে বুসান শহরে যাতায়াতের জন্যও ফেরি ব্যবস্থা থাকলেও তা অতটা প্রচলিত নয়।

খাদ্য সম্পাদনা

কোরিয়ান সামাজিক জীবনযাপনের অবিচ্ছেদ্য অংশ খাদ্য। বেশিরভাগ রেস্তোরাঁতেই ইংরেজি মেনু সহজলভ্য নয়। এক্ষেত্রে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েই পার পাওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে রেস্তোরাঁর সহযোগিরা যথেষ্ট সাহায্য করে। খাবারের খরচ মোটামুটি ৫ হাজার কোরিয়ান ওন থেকে শুরু হয়। প্রধান খাবারের সাথে একাধিক সাইড ডিস পরিবেশিত হয়। কোরিয়ান খাবার ছাড়াও জাপানি খাবার বেশ সহজলভ্য। সউল শহরে চমৎকার সুশি ও সাশিমি পাওয়া যায়। কিছু চীনের রেস্তোরাঁ থাকলেও, এগুলোর খাবার অনেকটাই কোরিয়ান ঢঙে তৈরি। বেশ কিছু চেইন স্টোর ছাড়াও স্বাধীন বেকারিও কম বেশি দেখা যায়। ২৪ঘন্টাই কোরিয়ান রাস্তার পাশের খাবার বা স্ট্রীট ফুড পাওয়া যায়। এছাড়াও কনভেনিয়েন্ট স্টোরগুলোও ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকে। এক্ষেত্রে ফাস্ট ফুড চেইন স্টোরগুলোও কম যায় না। রাত্রিকালীন বারবিকিউর সুযোগ আছে সউল শহরে। তবে তা শুধুমাত্র গরু ও শূকরের মাংসেই সীমাবদ্ধ। বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোর বেইসমেন্টে খাবার কোর্ট আছে। অবশ্য এই কোর্টগুলোতে সবসময়ই লোকজনের ভিড় জমে থাকে।

পানীয় সম্পাদনা

হোংদে এবং শিনছন এলাকায় রাতের সউল শহর প্রাণবন্ত হয়ে উঠে। অবশ্য ইতেওয়ান অঞ্ছলে গেলে আন্তর্জাতিক একটি প্রভাব লক্ষ করা যায়। পাশ্চাত্য ধরণার পানীয় ও খাদ্য এখানে সহজলভ্য। রাতের সউল অনেকটাই সোজুর উপর নির্ভরশীল। সোজু হচ্ছে কোরিয়ার স্থানীয় এলকোহল। এটি বিভিন্ন ফলের স্বাদে পাওয়া যায়।

রাত্রিযাপন সম্পাদনা

হোংদে শিনছন অঞ্চলের পশ্চিমে এবং সউল শহরে উত্তর-পূর্বের জংনু এলাকা অঘোষিতভাবে ব্যাকপ্যাক এলাকা। হাটা দূরত্বের মাঝে দোংদেমুন বাজার। এখান থেকে বাসে করে ৯ হাজার ওনে ইনছন এয়ারপোর্টে যাওয়া যায়। হোংসে, ইতেওয়ান, মিয়ংদোং এবং জংনু এলাকায় কম খরচে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। গ্যাংনাম খুব সম্প্রতি এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, বিশেষ করে গ্যাংনাম স্টাইল গানের মাধ্যমে এই এলাকার পরিচিত বেড়েছে। ইম্পেরিয়াল প্যালেস হোটেল, দ্য পার্ক হিয়াত সউল এবং দ্য রিতজ-কার্লটন সউল গ্যাংনামে অবস্থিত নামীদামী হোটেলগুলোর মধ্যে অন্যতম।