মারদান খাইবার পাখতুনখোয়াতে অবস্থিত।
জানুন
সম্পাদনামারদান খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাদেশিক সদর দফতর পেশাওয়ারের পরে সবচেয়ে বড় শহর। মারদান তার আতিথেয়তার জন্য পরিচিত। মারদান তার প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্বের জন্যও বিখ্যাত, বিশেষত তাখত-এ-ভাইর বৌদ্ধ স্তূপগুলির জন্য। এশিয়ার সবচেয়ে বড় চিনি মেলাও মারদানে অবস্থিত।
মারদানে প্রবেশ করুন
সম্পাদনামারদানে যাতায়াতের জন্য সবচেয়ে সাধারণ মাধ্যম হল ট্রেন ও বাস। তবে মারদানে সরাসরি ট্রেনের সংখ্যা সীমিত। এর পরিবর্তে, আপনি নওশেরা শহরে যেতে পারেন। নওশেরা পাকিস্তানের অন্যান্য অংশের সাথে পেশাওরকে সংযুক্তকারী প্রধান রেললাইনের উপর অবস্থিত।
মারদান জংশন রেলওয়ে স্টেশন মারদানের প্রধান রেলওয়ে স্টেশন। তবে, সব ট্রেনই এই স্টেশনে থামে না।
বাসে যাতায়াত পাকিস্তানের বেশিরভাগ শহর থেকে মারদানে যাতায়াতের একটি জনপ্রিয় উপায়। প্রায় প্রতিদিনই মারদানের উদ্দেশ্যে অসংখ্য বাস চলাচল করে। তবে, অনলাইনে টিকিট পাওয়া কঠিন হতে পারে। তাই স্টেশন থেকেই টিকিট কেনাই ভালো।
নওয়া আদ্দা বাস স্টেশন মারদানের প্রধান বাস স্টেশন। দূরপাল্লার বেশিরভাগ বাসই এই স্টেশনে আসে, তবে সব বাস নয়।
মারদানে দেখার মতো জায়গা
সম্পাদনামারদান শুধু যাতায়াতের একটি কেন্দ্র নয়, এটি ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি সমৃদ্ধ নিদর্শনও। এই শহরে ঘুরতে এলে কয়েকটি জায়গা অবশ্যই দেখার মতো।
- তখত-ই-বাহী: ইন্দো-পার্থিয়ান সাম্রাজ্যের আমলে নির্মিত এই বৌদ্ধ মঠটি অত্যন্ত ভালোভাবে সংরক্ষিত। প্রথম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত এই মঠ সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়েছে। সমগ্র অঞ্চলের বৌদ্ধ ধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হিসেবে এই স্থানকে বিবেচনা করা হয়। ১৯৮০ সাল থেকে তখত-ই-বাহী ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
- মারদান মিউজিয়াম: এই মিউজিয়ামে মারদান ও এর আশপাশের অঞ্চলের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিভিন্ন নিদর্শন সংরক্ষিত আছে।
- বাচা খান স্মৃতিস্তম্ভ: এই স্মৃতিস্তম্ভটি অবদুল গফ্ফার খানের স্মরণে নির্মিত। অবদুল গফ্ফার খান ছিলেন একজন পশতুন স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা।
- গাইডস মেমোরিয়াল: ১৮৯২ সালে কাবুলে ব্রিটিশ রেসিডেন্সির ঘেরাওয়ের সময় মারা যাওয়া সৈন্যদের স্মরণে এই স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মিত হয়েছিল।
মারদানে কেনাকাটা
সম্পাদনামারদানে কেনাকাটা করার জন্য অনেক জায়গা আছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু শপিং প্লাজা রয়েছে, যেখানে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় সবকিছুই পাবেন।
- দ্য মল অফ মারদান: এই মলটি মারদানের একটি জনপ্রিয় শপিং গন্তব্য। এখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের কাপড়, সাজসজ্জার সামগ্রী এবং অন্যান্য দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাবেন। মলটিতে দামও যুক্তিযুক্ত।
- দ্য মেগা মার্ট: নওশেরা রোডের পাশে অবস্থিত এই মার্টটি গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের পণ্য যেমন কাপড়, জুতা, স্টেশনারি ইত্যাদি সুলভ মূল্যে সরবরাহ করে।
- দ্য ওশান মল: এই মলটি বিভিন্ন ধরনের কাপড় এবং তৈরি পোশাকের জন্য পরিচিত।
- দ্য হোম সেন্টার: এই প্লাজাটিতে আপনি আপনার বাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই একই ছাদের নিচে পাবেন। এখানে খাবার সামগ্রী থেকে শুরু করে অন্যান্য ঘরোয়া প্রয়োজনীয় সামগ্রী সবই পাওয়া যায়। যদিও দাম একটু বেশি, তবে সেবার মান খুব ভালো।
নওশেরা রোড এবং বাচা খান স্মৃতিস্তম্ভের আশেপাশে আরও অনেক শপিং প্লাজা নির্মাণাধীন।
মারদানে খাওয়া দাওয়া
সম্পাদনামারদানে খাবারের জন্য অনেক ভালো জায়গা আছে। শহরের নতুন নতুন রেস্টুরেন্ট এবং ক্যাফেগুলোতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক খাবারের চমৎকার সংগ্রহ পাওয়া যায়। মারদানের বিখ্যাত বদায়োনি পায়রা তো আছেই।
নওশেরা রোড এ গিয়ে আপনি অনেক জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট খুঁজে পাবেন। যেমন, দ্য বেকারি ক্যাফে, ইতালিয়ান পিজ্জা, শেলিটন হোটেল, পিজ্জা হাট, রয়্যাল হোটেল এবং মারহাবা বেকারি। এই সব জায়গায় স্বাদিষ্ট খাবারের পাশাপাশি ভালো পরিবেশও পাবেন।
- শেলিটন হোটেল একটু উচ্চ দামের হলেও খাবারের মান এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অনেক ভালো। এখানে খুব তাড়াতাড়ি খাবার পাওয়া যায়।
- এই সব ক্যাফে এবং হোটেলে গ্রাহকদের জন্য বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই সুবিধা আছে, শুধু মারহাবা বেকারি ছাড়া।
পানীয়
সম্পাদনা- মর্ডানের ক্যাফেগুলোতে আপনি ঋতু অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের পানীয় পাবেন। গ্রীষ্মকালে ঠান্ডা পানীয় এবং শীতকালে কফি ও চা খুবই জনপ্রিয়। মর্ডানের মালকান্ড চৌকের কাছে অবস্থিত "পাপা জুস অ্যান্ড বার্গার" নামে একটি দোকান রয়েছে যেখানে ফ্রেশ জুস এবং ঠান্ডা পানীয়ের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। তবে মর্ডানে মদ পাওয়া যায় না।