বগুড়া বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সবচাইতে উন্নত ও প্রশাসনিক জেলা

বগুড়া জেলা বাংলাদেশের একটি জেলা যা রাজশাহী বিভাগ এর অন্তর্গত। বগুড়া জেলায় ১২টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হচ্ছেঃ সোনাতলা, আদমদিঘী, ধুনট, দুপচাঁচিয়া, গাবতলী, কাহালু, নন্দীগ্রাম, সারিয়াকান্দি, শেরপুর, শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর ও বগুড়া সদর।

কীভাবে যাবেন?

সম্পাদনা

সড়কপথ

সম্পাদনা

ঢাকা পঞ্চগড় হাইওয়েটি বগুড়া জেলার একেবারে মধ্যভাগ দিয়ে শেরপুর, শাহজাহানপুর, বগুড়া সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলা দিয়ে চলে গেছে। ভারী এবং দূর পাল্লার যানবাহন চলাচলের জন্য মূল সড়কের পাশাপাশি রয়েছে প্রশস্ত দুটি বাইপাস সড়ক। প্রথমটি পুরাতন বাইপাস নামে পরিচিত শহরের পশ্চিম দিকে মাটিডালি থেকে শুরু হয়ে বারপুর, চারমাথা, ১ নং রেলগেট, ফুলতলা হয়ে বনানীতে গিয়ে শেষ হয়েছে। দ্বিতীয়টি নতুন বাইপাস নামে পরিচিত যা ২০০০ সালের পরবর্তীকালে নির্মিত হয়। দ্বিতীয় বাইপাসটি মাটিডালি থেকে শুরু হয়ে শহরের পূর্ব পাশদিয়ে জয়বাংলা বাজার, সাবগ্রাম হয়ে বনানীতে গিয়ে মুল সড়কের সাথে মিলিত হয়েছে। এছাড়া নাটোর, পাবনা, রাজশাহী সহ দক্ষিণ বঙ্গের জেলা গুলোর সাথে যোগাযোগের জন্য একটি আলাদা মহাসড়ক রয়েছে যা নন্দীগ্রাম উপজেলার মধ্যদিয়ে নাটোরের সাথে সংযুক্ত। নওগা জেলার সাথে যোগাযোগের জন্য চারমাথা থেকে আরেকটি সংযোগ সড়ক কাহালু, দুপচাঁচিয়া, সান্তাহারের মধ্য দিয়ে নওগাঁয় গিয়ে শেষ হয়েছে। এছাড়া বগুড়া জয়পুরহাট জেলাকে সংযুক্ত করার জন্য রয়েছে আলাদা সড়ক ব্যবস্থা।

ঢাকার গাবতলী আর মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বগুড়া যাবার জন্য এসি-ননএসি বাস আছে। এর মধ্যে গ্রীনলাইন, এসআর পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, টিআর ট্রাভেলস, হানিফ ইন্টারপ্রাইজ উল্লেখযোগ্য।

  • শ্যামলী পরিবহন, ☎ ০২-৯০০৩৩৩১, ০২-৭৫২০৪০৫
  • এসআর ট্রাভেলস, ☎ ০২-৮০১৩৭৯৩, ০২-৮০৬০৮৭৬
  • টিআর ট্রাভেলস, ☎ ০১১৯১-৪৯৪৮৬৫, ০১১৯১-৪৯৪৮৬৮
  • গ্রীন লাইন পরিবহন, ☎ +৮৮০১৭১৬৯৭৬৭৭৫, ৯০০৮৬৯৪

বগুড়া জেলার সর্ব পশ্চিমে রয়েছে সান্তাহার রেলওয়ে জংশন। বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্রডগেজ লাইন নাটোর থেকে জয়পুরহাট পর্যন্ত সান্তাহাররের উপর দিয়ে চলে গেছে। এছাড়া সান্তাহার থেকে একটি মিটারগেজ লাইন আদমদিঘী, তালোড়া, কাহালু, বগুড়া শহরের মধ্যদিয়ে রংপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাটকে সংযুক্ত করেছে।

আকাশপথ

সম্পাদনা

বগুড়ার একমাত্র বিমানবন্দরটি কাহালু উপজেলার এরুলিয়া নামক স্থানে অবস্থিত। তবে বিমান বন্দরটি সাধারণত বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হয়।

দর্শনীয় স্থান

সম্পাদনা
মহাস্থানগড় প্রত্নস্থলের একাংশ, বগুড়া

বগুড়ায় অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষনীয় হল মহাস্থানগড়।

  • মহাস্থানগড় : মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি। প্রসিদ্ধ এই নগরী ইতিহাসে পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর নামেও পরিচিত ছিল। এক সময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানী ছিল। যিশু খ্রিষ্টের জন্মেরও আগে অর্থাৎ প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে এখানে সভ্য জনপদ গড়ে উঠেছিল প্রত্নতাত্ত্বিক ভাবেই তার প্রমাণ মিলেছে। ২০১৬ সালে এটি সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে ঘোষণা হয়। প্রাচীর বেষ্টিত এই নগরীর ভেতর রয়েছে বিভিন্ন আমলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত এ স্থান পরাক্রমশালী মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন শাসকবর্গের প্রাদেশিক রাজধানী ও পরবর্তীকালে হিন্দু সামন্ত রাজাদের রাজধানী ছিল। তৃতীয় খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে পঞ্চদশ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অসংখ্য হিন্দু রাজা ও অন্যান্য ধর্মের রাজারা রাজত্ব করেন। মহাস্থানগড়ের অবস্থান বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত। বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কি.মি. উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে গেলে এই শহরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়৷। এখানে আরও রয়েছে:
    • মাজার শরীফ
    • খোদার পাথর ভিটা
    • মানকালীর ঢিবি
    • বৈরাগীর ভিটা
    • স্কন্ধের ধাপ
    • মঙ্গলকোট স্তুপ
    • গোকুল মেধ
    • ভাসু বিহার
  • মোহাম্মাদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম এন্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক: নবাব আমলের পাইক-পেয়াদা আর বরকন্দাজের রূপকথা, মডেল করে দেখানো হয়েছে বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী নবাববাড়িতে। নবাবী জীবন প্রণালি এবং নবাবী আমলের সভ্যতা, কৃষ্টি, সংস্কৃতিকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার জন্য কয়েকজন গুণী শিল্পীর অক্লান্ত শ্রম ও মেধায় প্রতিষ্ঠিত হয় মোহাম্মাদ আলী প্যালেস মিউজিয়াম এন্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক। দেশের উত্তর জনপদের কেন্দ্রস্থল বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র করতোয়া নদীর পশ্চিম তীর ঘেঁষে নবাব প্যালেসের ভেতরে তৈরি করা হয়েছে এটি। পুরনো প্রাসাদটি বিশাল এক জাদুঘর।
  • সাতমাথা: বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র হলো সাতমাথা। এখানেই রয়েছে বগুড়া জিলা স্কুল, শহীদ খোকন পার্ক, জিপিও, সার্কিট হাউজ। সাতমাথা থেকে কবি নজরুল সড়ক (থানা রোড) দিয়ে এগিয়ে গেলেই পাওয়া যাবে এশিয়া সুইটস, কোয়ালিটির বিরিয়ানী হাউজ, হোটেল শ্যামলী, হোটেল আকবরিয়া।
  • প্রেম যমুনার ঘাট: বগুড়া থেকে ২২ কিমি পূর্বে সারিয়াকান্দিতে রয়েছে প্রেম যমুনার ঘাট। এখানে যমুনার বাঁধে বসে সময় কাটাতে পারেন। এখানে নৌকায় চড়ে যমুনার বুকে বেড়াতে পারেন।

খাওয়া দাওয়া

সম্পাদনা

খাওয়া-দাওয়ার জন্য অনেক হোটেল ও রেস্তোরাঁ রয়েছে। এখানকার প্রায় সব হোটেলেই বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী খাবার পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে:

  • বগুড়ার সান্তাহারের টাকি মাছ ও কালোজিরার ভর্তা
  • ছোট মাছের চচ্চড়ি
  • ঝাল পোলাও
  • সেমাইর জর্দা
  • বগুড়ার দই
  • গরুর মাংসের আলুঘাঁটি

উল্লেখযোগ্য রেস্তোরার মধ্যে রয়েছে:

  • আকবরিয়া হোটেল ও রেস্তোরাঁ, থানা রোড, বগুড়া
  • শ্যামলী হোটেল ও রেস্তোরাঁ, থানা রোড, বগুড়া
  • সেলিম হোটেল ও রেস্তোরাঁ, বিআরটিসি মার্কেট (রেলগেট), বগুড়া
  • কোয়ালিটি, থানা রোড, বগুড়া

রাত্রিযাপন

সম্পাদনা

এই জেলায় থাকার জন্য রয়েছে অনেক হোটেল ও মোটেল রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • হোটেল নাজ গার্ডেন, সিলিমপুর,বগুড়া, +৮৮০৫১-৬২৪৬৮, ফ্যাক্স: +৮৮০৫১৫১৩৭৬, ইমেইল: $৩৫+
  • মম ইন হোটেল এন্ড রিসোর্ট, +৮৮০ ৫১৬২০৪, ইমেইল: ৳৫,২০০+
  • পর্যটন মোটেল, বনানী মোড়, বগুড়া, +৮৮০৫১-৬৬৭৫৩, ফ্যাক্স: +৮৮০৫১ ৬৬৭৫৩
  • 1 সেফওয়ে মোটেল, চার মাথা, বগুড়া, +৮৮০৫১-৬৬০৮৭, ইমেইল:
  • 2 সেঞ্চুরি মোটেল, চার মাথা, বগুড়া, +৮৮০৫১-৬৭০৯১, ইমেইল: ৳১,২০০-৩,৫০০
  • মোটেল ক্যাসল এম এইচ, বগুড়া
  • আকবরিয়া আবাসিক হোটেলথানা রোড, বগুড়া, ☎ ৬৬৯৯৭
  • আমজাদিয়া হোটেল টেম্পল রোড, সাতমাথা, বগুড়া, ☎ ৬৩৬৪২
  • হোটেল আল মদিনা হোটেলথানা রোড, বগুড়া, ☎ +৮৮০১৭১১-৭০৮৫৭৮
  • আজাদ গেস্ট হাউজনিউ মার্কেট, বগুড়া, ☎ ৬৬৩৪২
  • অন্নপূর্ণা আবাসিক হোটেলপ্রজা বাহিনী প্রেস লেনথানা রোড, বগুড়া, ☎ ৬২৪৪১
  • বগুড়া বোডিং নবাব বাড়ি রোড, বগুড়া
  • রহমানিয়া বোডিং, নবাব বাড়ি রোড, বগুড়া, ☎ ৬৭৪০২
  • আল আমিন আবাসিক হোটেল, আল আমিন কমপ্লেক্স, নবাব বাড়ি রোড, বগুড়া, ☎ ৫১৯৩৭
  • ওয়েল ফেয়ার হাউজনবাব বাড়ি রোড, বগুড়া, ☎ ৬৭৮৭৫
  • মুন বোডিং ঝাউতলা, বগুড়া, ☎ ৬৫৪৯৮

জরুরি নম্বরসমূহ

সম্পাদনা
  • টুরিস্ট পুলিশ, ☎ +৮৮০১৭৬৯ ৬৯০৭৪০
  • বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ☎ ০৫১ ৬৩৩৩৩
  • শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ☎ ০৫১ ৬৯৯৬৫

পরবর্তীতে যান

সম্পাদনা