চট্টগ্রাম জেলার একটি উপজেলা (সাবেক মহকুমা)

পটিয়া বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।

চট্টগ্রাম জেলা সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে কর্ণফুলির দক্ষিণ পাড়ে ২২°১৩´ থেকে ২২°২১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫২´ থেকে ৯২°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত পটিয়া উপজেলার আয়তন ২৪৭.৩৮ বর্গ কিলোমিটার। পটিয়া থানা গঠিত হয় ১৯৫০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। পটিয়া উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়ন রয়েছে।

জনসংখ্যা

সম্পাদনা

২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী পটিয়া উপজেলার জনসংখ্যা ৫,২৮,১২০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২,৬৬,১৫৩ জন এবং মহিলা ২,৬১,৯৬৭ জন। এ উপজেলার ৮১% লোক মুসলিম, ১৭% হিন্দু এবং ২% বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

কীভাবে যাবেন

সম্পাদনা

সড়কপথে

সম্পাদনা

চট্টগ্রাম শহরের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল অথবা শাহ আমানত সেতু থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রোডে যে কোন বাস যোগে পটিয়া যাওয়া যায়। এছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর শাহ আমানত সেতু অথবা কাপ্তাই রাস্তার মাথা বা কালুরঘাট থেকে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যোগেও পটিয়া যাওয়া যায়।

রেলপথে

সম্পাদনা

চট্টগ্রাম নগরীর বটতলী অথবা ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে দোহাজারীগামী রেলযোগেও পটিয়া যেতে পারেন।

দর্শনীয় স্থান

সম্পাদনা
  • শাহচান্দ আউলিয়া (রহ.) এর মাজার পটিয়া পৌরসভায় অবস্থিত। পটিয়া বাস স্ট্যান্ড থেকে পায়ে হেঁটে ২০০ মিটার দক্ষিণ পূর্বে গেলে এই মাজারটিতে যাওয়া যায়।
  • বৌদ্ধ তীর্থ চক্রশালা মন্দির পটিয়া সদর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্বে এর অবস্থান। বৌদ্ধ যুগে চট্টগ্রামের আদি নাম ছিল চট্টলা। তবে এটি চক্রশালা নামেই পরিচিত। পূর্বে এই স্থানে শুধু একটি মন্দির ছাড়া আর কিছুই ছিলনা। সেই মন্দিরের গায়ে পাথরে খোদাই করে লিখা আছে ফরাতারা স্তুপ-নবতর সংস্কার - ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দ। এই স্থানে তথাগত বুদ্ধ রেঙ্গুন থেকে আসার পথে অবকাশ যাপন করেন এবং তিনি চংক্রমণ করেছিলেন বলেই এই স্থানটিকে চক্রশালা নামে অভিহিত করা হয়।
  • গরিব আলী শাহ এর মাজার শরীফ কোলাগাঁও ইউনিয়নে অবস্থিত। শাহ আমানত সেতু থেকে অটোরিক্সা, জীপ, বাস যোগে মইজ্যার টেক হয়ে কালারপোল বাদামতল নেমে গরীবুল্লাহ শাহ (র.) মাজার গেইট নেমে পায়ে হেঁটে ৫০ গজ গেলেই মাজার।
  • ঠেগরপুনি বুড়াগোঁসাই মন্দির পটিয়া উপজেলা সদর থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে ঠেগরপুনি গ্রামে এর অবস্থান। এই স্থানটি আরাকান রাজ্যের আরাকান পর্বতমালার অংশ ছিল। আনুমানিক ৩৫০-৪০০ বছর পূর্বে ছান্দামা রাজার আমলে এই স্থানে একটি দীঘি ছিল, এটি ছান্দামা দীঘি নামে পরিচিত ছিল। কালক্রমে উক্ত রাজবংশ বিলুপ্ত হয় এবং ধীরে ধীরে তা পরিত্যক্ত বনে পরিণত হয়। উক্ত বনের মাটির নিচে চাপা পড়ে প্রাচীন বুদ্ধমুর্তিটি। পরে সেই মুর্তিটি মাটির নীচ থেকে উদ্ধার করে সেই জায়গাতেই মন্দির নির্মাণ করা হয়।
  • মুসা খাঁ মসজিদ ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দ, ১০৬৬ হিজরী সালের শাবান মাসে আজিজ খাঁ মাওলানা হুলাইন গ্রামে এ মসজিদ নির্মাণ করেন। ইহা প্রাচীন ঐতিহ্যমণ্ডিত একটি দর্শনীয় স্থান।
  • বুড়া কালী মন্দির ধলঘাট গ্রামে তৎকালীন জমিদার রাজা রাম দত্ত এটি প্রতিষ্ঠা করেছেন।
  • মহিরা ক্ষেত্রপাল চৈত্র সংক্রান্তির সময় এখানে মেলা বসে। দুই’শ বছর পূর্বে এটি প্রতিষ্ঠিত।
  • প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আবক্ষ মূর্তি বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার পটিয়ার ধলঘাট ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন এবং ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে বীরত্বপূর্ণ অভিযানে অংশ গ্রহণ করে আত্মউৎসর্গ করেন। ধলঘাটে প্রীতিলতার স্মৃতি মণ্ডিত বাসস্থান ও তাঁর আবক্ষমূর্তি অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
  • বুদবুদি ছড়া

কোথায় থাকবেন

সম্পাদনা

পটিয়ায় থাকার জন্য সরকারি পরিচালনাধীন উপজেলা পরিষদ ডাক বাংলো ছাড়াও ব্যক্তি মালিকানাধীন সুলভ মূল্যে থাকার মত হোটেল রয়েছে।

খাওয়া দাওয়া

সম্পাদনা

পটিয়া পৌরসভা এলাকায় যে কোন রেস্টুরেন্টে সুলভ মূল্যে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।