নলতা শরীফ বা খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ সমাধি কমপ্লেক্স বাংলাদেশের সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে নলতায় অবস্থিত। খান বাহাদুর আহ‌্ছানউল্লা (র.) ছিলেন একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, শিক্ষা সংস্কারক ও সমাজহিতৈষী। তার জন্মস্থান ও সমাধিস্থলকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরায় গড়ে উঠেছে এই নলতা শরীফ।

জানুনসম্পাদনা

আনুমানিক ৪০ বিঘা জমির উপর গড়ে ওঠা এই কমপ্লেক্সের মধ্যে আছে মাজার, মসজিদ, অফিস, লাইব্রেরি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, অতিথিশালা, পুকুর যার চারদিকের ঢালে রয়েছে নজর কাড়া ফুলের বাগান। বাগানের শীর্ষে রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন সমাধিসৌধ। এর নির্মাণ শৈলী ও নির্মাণ উপকরণ অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও মূল্যবান।

ইতিহাসসম্পাদনা

খান বাহাদুর আহ‌্ছানউল্লা ১৯৬৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ইন্তেকাল করেন এবং জন্মস্থান নলতায় তাকে দাফন করা হয়। পরবর্তীতে তার সমাধিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে "খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ সমাধি কমপ্লেক্স" বা "নলতা শরীফ"।

পরিদর্শনের সময়সূচিসম্পাদনা

নলতা শরীফ দর্শকদের জন্য সব সময়ই উন্মুক্ত থাকে। তবে জাদুঘরটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।

কীভাবে যাবেনসম্পাদনা

ঢাকার কল্যাণপুর, মালিবাগ ও গাবতলীসহ প্রায় সব বাসস্ট্যান্ড থেকে এসি-নন এসি পরিবহনে সাতক্ষীরা যাওয়া যায়। সাতক্ষীরা থেকে কালীগঞ্জগামী যেকোনো যানবাহনে (বাস সহজ মাধ্যম) নলতা শরীফ যাওয়া যায়। সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়কের পাশে নলতা শরীফের অবস্থান। কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে নলতা শরীফ ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

দর্শনীয়সম্পাদনা

৪০ বিঘা জমির ওপর গড়ে ওঠা এই কমপ্লেক্সের মধ্যে আছে মাজার, মসজিদ, অফিস, লাইব্রেরি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, অতিথিশালা, পুকুর ও বেশকিছু উন্মুক্ত জায়গা। প্রায় ৪ বিঘা জমির ওপর একটি উঁচু ঢিবির মতো দেখতে, যার চারদিকের ঢালে রয়েছে নজরকাড়া ফুলের বাগান রয়েছে। এই বাগানের শীর্ষে রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন সমাধিসৌধ। এর নির্মাণশৈলী ও নির্মাণ উপকরণ অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও মূল্যবান। সমাধিসৌধে ওঠার জন্য দক্ষিণ পাশের বেশ প্রশস্ত এবং আকর্ষণীয় সিঁড়িসহ তিন দিকে তিনটি সিঁড়ি রয়েছে। নয়টি (০৯) গম্বুজ দ্বারা সৌধটি সুশোভিত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গম্বুজটি বেশ বড় এবং দর্শনীয়। এছাড়া নলতা শরীফে খান বাহাদুর আহ‌্ছানউল্লা (র.) ও তার পরিবারের ব্যবহৃত জিনিষপত্র নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি জাদুঘর। এখানে নির্মানাধীন রয়েছে ২০ হাজার জনের ধারণ ক্ষমতার একটি অত্যাধুনিক মসজিদ।

বার্ষিক ওরসসম্পাদনা

খান বাহাদুর আহ‌্ছানউল্লা এর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছর ৮, ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি বার্ষিক ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সম্পুর্ন নলতা শরীফকে সাজানো হয়। ওরস মাহফিলের সময় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার ভক্ত-অনুরাগীর ভিড় থাকে। ওরসের তৃতীয় দিন শেষে ওরসে আগতদের খাবার দেয়ার মাধ্যমে ওরস সমাপ্ত হয়। প্রতি রমজানে নলতা শরীফে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

বার্ষিক মেলাসম্পাদনা

প্রতি বছর ওরস উপলক্ষে নলতায় বিশাল মেলা বসে এবং গ্রাম্য মেলাটিতে দেশি বিদেশি অনেক রকম পণ্য দেখা যায়। মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানথেকে দর্শনার্থীর ভিড় থাকে।