ভারতে কলকাতা মেট্রোপলিটন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে উত্তর চব্বিশ পরগনার একটি এলাকা।
দক্ষিণেশ্বর ভারতের দক্ষিণপূর্ব বঙ্গের একটি মন্দির শহর। এটি কলকাতার খুব কাছাকাছি এবং অনেকে এটি কলকাতা পার্শ্ববর্তী অঞ্চল বা বৃহত্তর কলকাতার বা উত্তর কলকাতার অংশ হিসাবে বিবেচনা করেন। এটি একটি ছোট স্থান এবং এই স্থান রেল স্টেশন বা বাস স্ট্যাণ্ড থেকে পর্যটকদের হাঁটার দূরত্বের মধ্যে অবস্থিত।
কি ভাবে যাবেন
সম্পাদনা- ট্রেনের মাধ্যমে: - দক্ষিনেশ্বর রেলওয়ে স্টেশন শিয়ালদহ (কলকাতার হৃদয়ে) - ডানকুনি (হাওড়া-বর্ধমান রেলপথ) রেলপথে অবস্থিত। এটি শিয়ালদহ থেকে ১৪ কিলোমিটার এবং ডনকুনি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বেশিরভাগ লোকাল ট্রেন বিশেষত শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ডনকুনী লোক দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে থামে এবং দার্জিলিং মেলের মত কিছু দীর্ঘ দূরত্বের ট্রেন এই স্টেশনে থামে।
- সড়কপথ দ্বারা:- সড়কপথে এটি কেন্দ্রীয় কলকাতা শহরের সঙ্গে সংযুক্ত। উত্তর কলকাতার ব্যারাকপুর ট্রাঙ্ক রোড ধরে উত্তর দিকে যেতে হবে এবং বরানগর অতিক্তম করে ডনলপ রেল ওভার ব্রিজের আগে দক্ষিণেশ্বরের জন্য বাম দিকের সড়ক ধরতে হবে। বেলঘরিয়া ফ্লাইওভারটি যশোর রোড ও দমদম বিমানবন্দরকে সংযুক্ত করে দক্ষিণেশ্বরের সঙ্গে। দক্ষিণেশ্বরে হুগলি নদী জুড়ে নির্মিত বিবেকানন্দ সেতু দক্ষিণেশ্বরের সঙ্গে বালি, উত্তরপাড়া ও ডানকুনি এবং গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড, দিল্লি রোড, বোম্বে রোড ও দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগ স্থাপন করে। পুরানো সেতুর উপড়ে যানবাহনের চাপ কম করার জন্য নিবেদিতা সেতু নামে একটি নতুন সেতু নির্মিত হয়েছে, 'বিবেকানন্দ সেতু'র পাশে। কলকাতা থেকে অনেকগুলি বাস কলকাতা-দক্ষিণেশ্বরে রুটে চলাচল করে। এছাড়া কলকাতা থেকে হুগলি নদী পথে দক্ষিণেশ্বর যাওয়ায়।
কী দেখবেন
সম্পাদনা- 1 কালী মন্দির। একটি হিন্দু মন্দির হুগলি নদীর তীরে রয়েছে। এটি দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দির নামে পরিচিত। এটি একটি বৃহৎ মন্দির প্রাঙ্গন। এখানে অনেকগুলি মন্দির এবং একটি ঘাট (নদী থেকে অগ্রসর হয়) রয়েছে। পাশাপাশি আপনি "রাধা গোবিন্দ" মন্দির নামে একটি মন্দির দেখতে দর্শন করতে পাড়েন। আপনি এমনকি শিবের ১০ টি মন্দির দেখতে পারবেন (ধ্বংসের ঈশ্বর)। প্রকৃতি এবং পাখি প্রেমীরা সকালে গঙ্গার তীরে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে সূর্যের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে গঙ্গা ও তার তীর জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সৌন্দর্য উপভোগ করতে নাড়েন। মন্দিরে হাজার হাজার কবুতর দেখতে পাবেন, এটি সত্যিই একটি সুন্দর দৃশ্য যা অবিস্মরণীয়। ১৮৪৭ থেকে ১৮৫৫ সালের মধ্যে রানী রাসমণির দ্বারা মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল। ১৮৫৬ থেকে ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এই মন্দিরের প্রধান ও একমাত্র পূজারী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক পরিচালিত হয়। এটি প্রতিবছর বছরে হাজার হাজার উপাসকদের আকর্ষণ করে।
কি করবেন
সম্পাদনা- হুগলিতে নৌকা ভ্রমণ করতে নাড়েন (কোন জেটি নেই)। আপনি শুধুমাত্র দক্ষিণেশ্বর মন্দির ঘাট থেকে বেলুর মঠ জেটি পর্যন্ত যলযানে ভ্রমণ করে পাড়েন। আপনি দক্ষিণেশ্বর মন্দির থেকে বেলুড় মঠ পর্যন্ত ২০-৩০ মিনিটের নৌযানের যাত্রা উপভোগ করতে পারেন।
- বিবেকানন্দ সেতু (বিবেকানন্দ ব্রিজ) -এর পিছনে হুগলি নদীর পশ্চিম তীরে সূর্যাস্তর চমত্কার দৃশ্য দেখতে পাড়েন। শীতকালে আপনি ঠাণ্ডা বায়ু প্রবাহ উপভোগ করতে পাড়েন নদীর তীরে দাঁড়িয়ে।
কিনুন
সম্পাদনা- দেবালয়ে পূজার জন্য ফুল ও উপকরণগুলি মন্দিরের বাইরের বাইরে মন্দিরের প্রবেশ পথে পাওয়া যায়।
- হিন্দু ঐতিহ্য অনুযায়ী বাড়িতে পূজা বিভিন্ন উপকরণ পাওয়া যায়। যেমন -দেব-দেবীর মূর্তি বা ছবি।
- সস্তার গৃহ সজ্জার উপকরণ এবং বিভিন্ন হস্তশিল্পের কাজ।
- খুব কম মূল্যে পাওয়া বিভিন্ন ধরনের আচার।
খাওয়া-দাওয়া
সম্পাদনাঅনেক এখানে উপাসনা বা মন্দিরে পূজা দেওয়ার পূর্বে উপবাসের হিন্দু প্রথা অনুসরণ। অনেক বড় ভোজসভা এবং রেস্তোরাঁ রয়েছে গ্রাহকদের খাবার পরিবেশন করার জন্য।
কি পান করবেন
সম্পাদনাযে কোন ধরনের হার্ড পানীয় থেকে দূরে থাকুন। কেবলমাত্র "লেবু জল" পানীয় পান করতে পাড়েন।
রাত্রিযাপন
সম্পাদনাপর্যটকদের থাকার জন্য কিছু লজ আছে দক্ষিণেশ্বরে। লজে থাকার খরচ বছরের বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হয়। কিন্তু এখানে ₹১৫০ - ₹৩০০ টাকায় একদিনের জন্য ঘর পাওয়া যায়।