ছেঁড়া দ্বীপ বাংলাদেশের মানচিত্রে দক্ষিণের সর্বশেষ বিন্দু। দক্ষিণ দিকে এর পরে বাংলাদেশের আর কোনো ভূখণ্ড নেই।

জানুন সম্পাদনা

সেন্ট মার্টিন থেকে বিচ্ছিন্ন ১০০ থেকে ৫০০ বর্গমিটার আয়তনবিশিষ্ট কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে, যেগুলোকে স্থানীয়ভাবে 'ছেঁড়াদিয়া' বা 'সিরাদিয়া' বলা হয়ে থাকে। ছেঁড়া অর্থ বিচ্ছিন্ন বা আলাদা, আর মূল দ্বীপ-ভূখণ্ড থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন বলেই এ দ্বীপপুঞ্জের নাম ছেঁড়া দ্বীপ। দক্ষিণের এই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে রয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক পাথর।

কীভাবে যাবেন সম্পাদনা

প্রবাল দ্বীপে ইউনিয়ন সেন্ট মার্টিন্স থেকে ছেঁড়া দ্বীপ প্রায় আট কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। দ্বীপের প্রায় অর্ধেকই জোয়ারের সময় সমুদ্রের পানিতে ডুবে যায়। চট্টগ্রাম, পতেঙ্গা বা টেকনাফ থেকে আগে সেন্ট মার্টিন্স-এ যেতে হয়। তারপর ভাটার সময় সেখান থেকে হেঁটেই ছেঁড়া দ্বীপে যাওয়া যায়। অবশ্য জোয়ারের সময় যেতে হয় লঞ্চে করে।

কী দেখবেন সম্পাদনা

ছেড়া দ্বীপের অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখুন। সামুদ্রিক ঢেউ আর সারিসারি নারিকেল গাছ। নানা প্রজাতির সামুদ্রিক পাখির আবাসস্থলও ছেঁড়াদ্বীপ।

গবেষকরা এখানে ১৮২ প্রজাতির জীব বৈচিত্রের সন্ধান পেয়েছেন যার মধ্যে রয়েছে ৪ প্রজাতির উভচর, ১৩০ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী সামুদ্রিক জীবের উপস্থিতি আছে অনিন্দ্য সুন্দর এই দ্বীপে। প্রায় ৩৩,২৩৮ বছরের পুরান একটি প্রবালের ফসিল যেটি এই দ্বীপেই পাওয়া গিয়েছে। দ্বীপের উত্তর অংশে অবস্থিত জলাধারটি দেখুন। জোয়ারের সময় এই জলাধারটি পশ্চিম উপকুলে একটি সরু চ্যানেলের মাধ্যমে সাগরের সাথে যুক্ত হয়।

শীতকালে এই দ্বীপে প্রচুর অতিথি পাখি এসে থাকে। এতে করে দ্বীপের পারিপার্শ্বিক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বহুগুন বৃদ্ধি পায়। এছাড়া চাঁদনী রাতে ছেড়া দ্বীপ সাজে তার অপরুপ সাজে।

কী করবেন সম্পাদনা

  • ছেড়া দ্বীপের একদম উপরের দিকটাতে ভরা পূর্ণিমাতে ক্যাম্পিং করে থাকতে পারেন। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাত্রি যাপনের অনুমতি নেই।
  • সাইক্লিং করতে পারে, সেক্ষেত্রে সেন্টমার্টিন থেকে সাইকেল ভাড়া করে নিয়ে আসতে হবে।
  • সাগরের পরিষ্কার পানিতে গোসল করতে পারে। তবে ধারালো প্রবাল থেকে সাবধানে থাকতে হবে।
  • সূর্যাস্ত দেখার জন্য ছেঁড়া দ্বীপ অন্যতম সেরা একটি জায়গা।
  • সমুদ্রের ডেউয়ের শব্দ উপযোগ করতে পারে। কোলাহলত থেকে দূরে গিয়ে সমুদ্রের জলরাশির তীরে আঁচড়ে পড়ার শব্দ আপনাকে অন্য এক জগতে নিয়ে যাবে।

কী খাবেন সম্পাদনা

এখানে থাকা বা খাওয়ার ব্যবস্থা ভালো নেই। দ্বীপে যাওয়ার সময় খাবার নিয়ে যাওয়া উচিত। দ্বীপে কিছু মাছভাজার দোকান পাওয়া যেতে পারে।

কোথায় থাকবেন সম্পাদনা

এখানে রাত্রি যাপনের অনুমতি বা ব্যবস্থা নেই। বিকেল চারটার পর এই দ্বীপে অবস্থান করা নিষিদ্ধ। থাকতে হলে সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজারে যেয়ে থাকতে হবে। থাকার জন্য সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজারে অনেক আবাসিক হোটেল রয়েছে।

পরবর্তীতে যান সম্পাদনা

  • শাহপরীর দ্বীপ-টেকনাফের সর্ব দক্ষিণে ভূ-ভাগের খুবই নিকটবর্তী একটি দ্বীপ। বর্তমানে এখানে সড়ক পথেই সারাবছর যাওয়া যায়। সড়ক পথে এটিই বাংলাদেশের সর্বশেষ গ্রাম বা এলাকা।