চাঁদপুর বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি উল্লেখযোগ্য শহর। বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশের জন্য বিখ্যাত হিসেবে এটিকে ইলিশ বাড়ি চাঁদপুরও বলা হয়।
জানুন
সম্পাদনাচাঁদপুর বাংলাদেশের অন্যতম নদীবন্দর ও বানিজ্যিক শহর। শহরটিকে দু-ভাগ করে এর মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ডাকাতিয়া নদী।
কীভাবে যাবেন?
সম্পাদনাচাঁদপুরে রেল, নৌ ও সড়ক পথে যাতায়াত ব্যবস্থা আছে।
স্থলপথে
সম্পাদনাঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্য যেসব গাড়ি ছেড়ে যায় সেগুলোর মধ্যে পদ্মা এক্সপ্রেস ও মতলব এক্সপ্রেস, জৈনপুর এক্সপ্রেস, জৈনপুর পরিবহন অন্যতম।
এরমধ্যে মতলব এক্সপ্রেস, জৈনপুর এক্সপ্রেস, জৈনপুর পরিবহন প্রতিদিন সকাল ৬ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলাচল করে। মূলত এ বাসগুলো মধ্যম মানের এবং যাত্রীদের সিট পরিপূর্ণ হলেই ছেড়ে দেয়। আর পদ্মা এক্সপ্রেস সায়দাবাদ বাস স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যায়।
আকাশ পথে
সম্পাদনাচাঁদপুরে কোনো বিমানবন্দর না থাকায় আকাশপথে বিমানে যাওয়ার ব্যবস্থা নেই। তবে বেসরকারিভাবে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে চাঁদপুরে যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে হেলিপ্যাডের আলাদা কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সাধারণত চাঁদপুর স্টেডিয়ামে হেলিকপ্টার অবতরণ করে।
জল পথে
সম্পাদনাঢাকা সদরঘাট নদী বন্দর লঞ্চ টার্মিনাল থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্য সকাল ৬ টা থেকে রাত সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি লঞ্চ ছেড়ে যায়। এরমধ্যে এম.ভি.রফরফ, এমভি ময়ূর, এমভি বোগদাদিয়া, এমভি সোনারতরি, এমভি আব এ জমজম, এমভি ইমাম হাসান অন্যতম।
ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক নিদর্শন
সম্পাদনা- বঙ্গবন্ধু পযর্টন কেন্দ্র (চাঁদপুর বড় স্টেশন)
- শাহরাস্তি (রহ.) মাজার শরীফ
- শ্রী শ্রী মেহার কালিবাড়ী
- খিলা বাজার সেতু
- চিকটিয়া সেতু
- নোয়াগাঁও ঐতিহাসিক বড় বাড়ি জামে মসজিদ
- ডাকাতিয়া নদী
- মনসা মুড়া, দোয়াটি, কচুয়া
- সাহারপারের দিঘী, রহিমানগর, কচুয়া
- উজানীতে বেহুলার পাটা, উজানী, কচুয়া
- তুলাতলী মঠ, তুলাতলী, কচুয়া:
- সাহেবগঞ্জ নীল কুঠি, সাহেবগঞ্জ
- লোহাগড় মঠ, লোহাগড়, ফরিদগঞ্জ
- রূপসা জমিদার বাড়ী, রূপসা, ফরিদগঞ্জ
- হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ, হাজীগঞ্জ
- হযরত মাদ্দাখাঁ (রঃ) মসজিদ ও মাজার শরীফ, আলীগঞ্জ, হাজীগঞ্জ
- বলাখাল জমিদার বাড়ী, হাজীগঞ্জ
- নাসিরকোর্ট শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সমাধী স্থল, নাসিরকোর্ট, হাজীগঞ্জ
- নাগরাজাদের বাড়ি, মঠ ও দিঘী, কাশিমপুর, মতলব উত্তর
- তিন গম্বুজ মসজিদ ও প্রাচীন কবর, ভিঙ্গুলিয়া, হাইমচর, চাঁদপুর
খাওয়া দাওয়া
সম্পাদনাইলিশ চাঁদপুরের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সুপরিচিত খাবার। লঞ্চ থেকে নেমে ঘাটের পাশে, শহরের ভেতর কালীবাড়ি মোড়ে, হকার্স মার্কেটের সামনে এবং বাস স্ট্যান্ডে ঢোকার মুখে বেশ কিছু খাবার হোটেল আছে। এগুলোতে ইলিশ সহ তিন বেলার ভারী খাবার বা নাস্তা পাওয়া যায়। হোটেলগুলোর মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হচ্ছে (স্টেডিয়ামের পাশে) ইলিশ চত্বরের 'ক্যাফে ঝীল'।
চাঁদপুরের মিষ্টিও অত্যন্ত সুস্বাদু। উল্লেখযোগ্য নামের মধ্যে আছে কালীবাড়ি মোড়ে 'ওয়ান মিনিট', পাল বাজারের পাশে 'সুইট হোম', জোড় পুকুর পাড় এবং ইলিশ চত্ত্বরে 'মৌসুমী সুইটস্'। শহরের বাইরে ফরিদগঞ্জ বাজারে আছে 'আউয়ালের মিষ্টি', আর মতলব বাজারে আছে 'গান্ধী ঘোষ'। শাপলা চত্ত্বর থেকে সিএনজি কিংবা বাস-স্ট্যান্ড থেকে বাসে করে ফরিদগঞ্জ যাওয়া যায়, ভাড়া ৩০-৫০ টাকা। মতলব যাওয়ার জন্যও শাপলা চত্ত্বর থেকে সিএনজি পাওয়া যাবে, ভাড়া ৩০-৪০ টাকা। যেতে সময় সর্বোচ্চ একঘন্টা লাগতে পারে।
চটপটি-ফুঁচকা, ঝালমুড়ি ইত্যাদী পাওয়া যাবে মাতৃপীঠ স্কুলের সামনে হ্রদের পাড়ে, পাল বাজার ব্রীজের উপরে, ঠোডায় (ডাকাতিয়া ও পদ্মা-মেঘনার সংযোগস্থল)। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য পাল বাজার ব্রীজের উপরের 'বিসমিল্লাহ ঝালমুড়ি'।
সব খাওয়া-দাওয়ার মাঝখানে সন্ধ্যায় নদীর পাড়ে বসে এক কাপ পুদিনা পাতা দেয়া লাল চা খেতে চাইলে যেতে পারেন প্রেস ক্লাবের পাশে 'গুরুর দোকানে'।
রাত্রি যাপন
সম্পাদনাচাঁদপুরে থাকার জন্য ছোট ও ২ তারকা মানের ভালো হোটেল আছে।
- ভাই ভাই আবাসিক হোটেল; ঠিকানাঃ তালতলী বাসস্টেশন, চাঁদপুর
- হোটেল সকিনা ঠিকানাঃ নতুন বাজার, চাঁদপুর
- হোটেল অতিথি ঠিকানাঃ ম্যাটারনিটি রোড, চাঁদপুর
- গাজি হোটেল:(২ তারকা), হাজী মহসিন রোড,চাঁদপুর সদর।
- হোটেল গ্রান্ড হিলসা:(২ তারকা), প্রেসক্লাবের পাশে, রোটারি ভবন,চাঁদপুর সদর,চাঁদপুর।
- ডাক বাংলো : স্যান্ড রোড, চাঁদপুর সদর,চাঁদপুর।
- ওয়েস্টার্ন আবাসিক হোটেল, বাস স্ট্যান্ড ও ডিসি অফিসের মাঝামাঝি স্থানে চক্ষু হাসপাতালের অপর পাশে অবস্থিত।
- সার্কিট হাউজ: ষোল ঘড়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পাশে। চাঁদপুর সদর,চাঁদপুর।
এ ছাড়াও চাঁদপুর শহরে আরও কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে।