আলীকদম বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
জানুন
সম্পাদনাবান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রায় ১১১ কিলোমিটার দক্ষিণে ২১°২১´ থেকে ২১°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ ৯২°১৫´ থেকে ৯২°৩৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত আলীকদম উপজেলার আয়তন ৮৮৫.৭৮ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৭৬ সালে লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার কিছু এলাকা নিয়ে আলীকদম থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। এ উপজেলায় বর্তমানে ৪টি ইউনিয়ন রয়েছে।
নামকরণ
সম্পাদনাধারণা মতে, আলোহক্যডং থেকে আলীকদম নামের উৎপত্তি। বোমাং সার্কেল চীফের নথি পত্র ও ১৯৬৩ সালের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার কর্তৃক আঁকা মানচিত্রে আলোহক্যডং নামের সত্যতা পাওয়া যায়। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গবেষক আতিকুর রহমান এর মতে আলী পাহাড়ের সাথে সঙ্গতিশীল নাম হল আলীকদম। তাছাড়া কথিত আছে যে, ৩৬০ আউলিয়া এ উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারের জন্য এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে আলী নামে কোন এক সাধক এ অঞ্চলে আসেন। ওনার পদধুলিতে ধন্য হয়ে এ এলাকার নাম করণ হয় আলীকদম।
জনসংখ্যা
সম্পাদনা২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আলীকদম উপজেলার জনসংখ্যা ৩৫,২৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৯,২৯০ জন এবং মহিলা ১৫,৯৭৪ জন। মোট জনসংখ্যার ৫৮.৮১% মুসলিম, ৪.৩০% হিন্দু, ৩০.৯৬% বৌদ্ধ এবং ৫.৯৩% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। এ উপজেলায় মার্মা, ত্রিপুরা, মুরং, চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা উপজাতির বসবাস রয়েছে।
কীভাবে যাবেন
সম্পাদনাঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে প্রথমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনাল নেমে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যোগে লামা হয়ে আলীকদম যাওয়া যায়। এছাড়া বান্দরবান সদর থেকেও লামা অথবা থানচি হয়ে পূর্বাণী চেয়ারকোচ বা জীপগাড়ি যোগে আলীকদম যেতে পারেন।
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনাবান্দরবান জেলার আলীকদম এবং থানচি উপজেলার ঠিক মাঝখানে অবস্থিত এই পাহাড় দিয়েই দুই উপজেলার সীমানা নির্ধারিত হয়েছে। এই পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে সমুদ্র সমতল থেকে আড়াই হাজার ফুট উঁচুতে নির্মাণ করা হয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু সড়কপথ। আড়াই হাজার ফুট উঁচু এ পাহাড় চূড়ার আকৃতি দেখতে ডিমের মতো হওয়ায় স্থানীয়রা একে ডিম পাহাড় নামেই চেনে।
আলীকদম উপজেলা সদর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরেই মাতামুহুরী-তৈন খাল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা দু‘পাহাড়ের চূঁড়ায় প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট আলীর গুহা বা আলীর সুড়ঙ্গ। ঝিরি থেকে দেড়শত ফুট উপরে এই গুহা।
- আলীকদম কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার
আলীকদম উপজেলা সদরে অবস্থিত।
ঝর্ণাটি মুরং এলাকায় অবস্থিত। মুরং ভাষায় ঝর্ণাটি যে ঝিরিতে অবস্থিত তাকে তুক অ বলে। তুক অর্থ ব্যাঙ এবং অ অর্থ ঝিরি। তুক অ অর্থ ব্যাঙ ঝিরি। ডামতুয়া অর্থ খাড়া আকৃতির দেয়াল যা বেয়ে ব্যাঙ বা মাছ উপরেউঠতে পারেনা। ওয়াজ্ঞাপারাগ অর্থ পাহাড় বা উচুঁ স্থান থেকে পানি পড়া। তুক অ ডামতুয়া ওয়াজ্ঞাপারাগসহ ঝর্ণাটিকে একাধিক নামে ডাকা হয়। এখানে দুই দিক থেকে পানি পড়ার কারনে ঝর্ণাসহ খোলা স্থানটিতে চাঁদের আলোতে অন্য রকম সৌন্দর্যের কারনে স্থানীয় মুরং ভাষায়” লামোনই” ঝর্ণা বলা হয়। লামো অর্থ চাঁদ ও নই অর্থ আলো। লামোনই অর্থ চাঁদের আলো।
চিম্বুক রেঞ্জে অবস্থিত এই পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় ২,৯৮৯ মিটার।
থাকার ব্যবস্থা
সম্পাদনা- দ্যা দামতুয়া ইন, আলীকদম উপজেলা সড়ক, ☎ +৮৮ ০১৭৪৮ ৯১২১২৭, ইমেইল: thedamtuainn@gmail.com। আগমন: ১২.০০, প্রস্থান: ১১.০০। নন এসি রুম, গাড়ি পার্কিং ও কফারেন্সের সুবিধা এবং হোটেল সংলগ্ন রেস্তোরা রয়েছে ৳১,০০০।
খাওয়া দাওয়া
সম্পাদনাআলীকদমের খাবার হোটেল গুলো মাঝারি মানের। খুব বেশি কিছু আশা করা ভুল হবে। তবে দ্যা দামতুয়া ইন এন্ড রেস্টুরেন্টে তিন বেলা বেশ ভালো মানের খাবার পাওয়া যায়।
- দামতুয়া ইন এন্ড রেস্টুরেন্টে, আলীকদম উপজেলা সড়ক, ☎ +৮৮০ ১৮৮৩ ৫৩৫২০০। রাত্রি ৯ টা পর্যন্ত।